বুধবার, মে ১, ২০২৪

লাখো মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে ‘লকডাউন’

যা যা মিস করেছেন

মহামারি করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে জারি করা ‘লকডাউন’ ইউরোপে লাখ লাখ মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে। লকডাউন না দিলে এ অঞ্চলের ১১টি দেশে আরও অন্তত ৩২ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারতো। সোমবার এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে লন্ডনের ইমপেরিয়াল কলেজের গবেষকরা।

একই দিন অন্য একটি গবেষণায়ও বলা হয়েছে, দেশে দেশে লকডাউন না হলে বিশ্বব্যাপী আরও অনেক মানুষের প্রাণ যেতো। গবেষকরা বলছেন, এখনই লকডাউনের বিধিনিষেধ শিথিল করা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হবে। খবর বিবিসি ও ডেইলি মেইলের।

লন্ডনের ইমপেরিয়াল কলেজের গবেষকরা ইউরোপের ১১টি দেশের লকডাউন এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পদক্ষেপগুলোর প্রভাব বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, এসব বিধিনিষেধ যথেষ্ট পরিমাণে প্রভাব ফেলেছে, যার ফলে মে মাসের শুরুর দিক থেকে করোনা সংক্রমণ কমেছে।

গবেষণায় বলা হয়, ৪ মে পর্যন্ত ইউরোপের ১১টি দেশে (অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, ব্রিটেন, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন ও সুইজারল্যান্ড) মোট মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ৩০ হাজার। কিন্তু দেশগুলো যদি লকডাউন, সামাজিক দূরত্ব, স্বাস্থ্যবিধির ওপর গুরুত্ব না দিতো তাহলে ওই সময় পর্যন্ত ৩২ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারতো। যা বর্তমানের চেয়ে ২৪ গুণ বেশি।

গবেষক দলটির হিসাবে, ইউরোপের ১ কোটি ২০ লাখ থেকে ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে, যা দেশগুলোর মোট জনসংখ্যার ৪ শতাংশ। কিন্তু যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়া হলে এটা কল্পনাতীত ভয়াবহ হতে পারতো।

গবেষণার মডেলিং অনুযায়ী, করোনায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হতে পারতো ফ্রান্সে, ৬ লাখ ৯০ হাজার। এ পর্যন্ত সেখানে মারা গেছে ২৯ হাজার ২০৯ জন। ইতালিতে মারা যেতে পারতো ৬ লাখ ৩০ হাজার (দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ৩৩ হাজার ৯৬৪ জন)। জার্মানিতে ৫ লাখ ৬০ হাজার, যুক্তরাজ্যে ৪ লাখ ৭০ হাজার ও স্পেনে ৪ লাখ ৫০ হাজার মানুষ করোনায় মারা যেতে পারত। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম মারা যেত নরওয়েতে, ১২ হাজার। এ পর্যন্ত সেখানে মারা গেছে ২১০ জন। যা মডেলিংয়ের চেয়ে ৫৭ গুণ কম।

এ বিষয়ে গবেষকদলের অন্যতম ডা. ফ্লাক্সম্যান বলেন, ‘আমরা যদিও করোনাভাইরাসের সূচনালগ্নে আছি। এখনো আমাদের মধ্যে ইমিউনিটি সেভাবে তৈরি হয়নি। প্রত্যেক দেশের মাত্র ৩ থেকে ৪ শতাংশ আক্রান্ত হয়েছে। যদিও করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। কিন্তু লকডাউনসহ অন্যান্য ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা অনেক হতে পারতো। লকডাউনের মাধ্যমে ইউরোপের দেশগুলোর ৩২ লাখ মানুষ মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে।’

এদিকে লকডাউনের অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন বেশিরভাগ ইউরোপিয় দেশই নতুন আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসায় লকডাউনসহ বিধিনিষেধ শিথিল করা শুরু করেছে।

গবেষণায় যৌথভাবে নেতৃত্ব দেওয়া ড. সামির ভাট বলেন, ‘আমরা কেবল এই মহামারির শুরুতে আছি। সব হস্তক্ষেপ ও সব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা বাদ দেওয়া হলে দ্বিতীয় ধাক্কার আশঙ্কা খুব বাস্তব।’

নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত অন্য একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি, ইরান, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রে লকডাউন জারির ফলে ৫৩ কোটি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া থেকে বেঁচেছে।

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এ গবেষণাটির নেতৃত্ব দেওয়া ড. সলোমন সিয়াং বলেন, ‘ওই নীতিমালাগুলো ছাড়া আমরা হয়তো পুরোপুরি ভিন্ন একটা এপ্রিল ও মে মাস দেখতাম।’

উল্লেখ্য, ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, করোনাভাইরাসে বিশ্বে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭২ লাখ মানুষ আক্রান্ত এবং প্রাণ হারিয়েছেন চার লাখের বেশি।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security