গোপন ক্যামেরায় প্রেমিকার আপত্তিকর ছবি তুলেই ক্ষান্ত হয়নি লম্পট প্রেমিক। প্রেমিকার পরিবার বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় আপত্তিকর ছবি পরিবারের কাছে মেসেঞ্জারে পাঠিয়ে অর্থ দাবি করে। পরে টাকা না পেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের হুমকি দেয়ায় রাগে-অভিযানে আত্মহত্যা করেছেন মারিয়া আক্তার গাজী (১৯) নামে এক কলেজ ছাত্রী।
মারিয়া জেলার কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার ঝলম ইউনিয়নের সিংগুর গ্রামের প্রবাসী ইলিয়াছ মিয়ার মেয়ে। তিনি চট্টগ্রাম ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
লম্পট প্রেমিক জাবেদ মজুমদার পার্শ্ববর্তী খলারপাড় গ্রামের মোস্তফা মজুমদারের ছেলে। ঘটনার এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও রোববার রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ এখনো অভিযুক্ত ওই প্রেমিকসহ অন্যান্যদের আটক করতে পারেনি।
থানায় দায়েরকৃত মামলার অভিযোগ ও ওই ছাত্রীর পরিবার থেকে জানা যায়, কলেজ ছাত্রী মারিয়া নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে পার্শ্ববর্তী খলারপাড় গ্রামের জাবেদ মজুমদার নামে এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তাদের প্রেমের বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে মারিয়ার পরিবার ওই যুবকের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের ছেলেকে সাবধান করার জন্য বলেন। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবেও এলাকার লোকজন জাবেদকে মারিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য চাপ দেয়। এতে জাবেদ ক্ষিপ্ত হয়ে মারিয়ার উপর প্রতিশোধ নিতে পরিকল্পনা করেন। তার সঙ্গে সম্পর্ক না রাখলে আগে গোপন ক্যামরায় ধারণকৃত মরিয়ার সকল আপত্তিকর ছবি পরিবারের নিকট মেসেঞ্জারে পাঠিয়ে অর্থ দাবি ও ফেসবুকে প্রকাশের হুমকি দেন।
এ বিষয়ে মারিয়ার মা সাদিয়া আক্তার জানান, আপত্তিকর ছবিগুলো মারিয়াকে পাঠানোর পর তার বাবার ফেসবুক মেসেঞ্জারেও পাঠায় ওই যুবক। এছাড়াও মারিয়ার বড় ভাই এবং আমাকেও ওই ছবি গুলি পাঠিয়ে বিনিময়ে তিন লাখ টাকা দাবি করা হয়। টাকা না দিলে ধারণকৃত ছবি ফেসবুকে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। তাই এসব ছবি দেখে লজ্জায় ও অভিমানে গত ৮ জুন মারিয়া বিষপানে আত্মহত্যা করে।
এ ঘটনায় তিনি (মারিয়ার মা) বাদী হয়ে গত ১১ জুন লম্পট প্রেমিক জাবেদ, তার বাবা মোস্তফা মজুমদার ও তিন ভাইসহ ৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার অভিযোগের সঙ্গে মেসেঞ্জারে জাবেদের হুমকি, কিছু ছবি ও কথোপকথনের সব স্ক্রিনশট থানায় জমা দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে রোববার রাতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরুড়া থানার এসআই আনিছুর রহমান জানান, থানায় মামলা করার পর আমরা আসামিদের গ্রেফতার করতে অভিযান চালিয়ে আসছি। মামলার প্রধান আসামিসহ সবাই পালাতক রয়েছে। তাই তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না।