বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১৮, ২০২৪

করোনায় ঝুঁকি থাকলেও ‘বাধা নেই’ ইলিশ ধরায়

যা যা মিস করেছেন

চলতি বছরের ১ মার্চ থেকে টানা দুই মাস নদী ও সমুদ্র থেকে ইলিশ শিকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার।

সেই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ৩০ এপ্রিল। এরপর করোনা মোকাবিলায় দেশে ৫ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি থাকলেও ১ মে থেকে নদী ও সমুদ্র থেকে ইলিশ ধরতে পারবেন জেলেরা। তবে, করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনেই তাদের মাছ ধরার পরামর্শ দিয়েছে সরকার। আর মাছ ধরা থেকে বাজারজাত করা পর্যন্ত সার্বিক বিষয়ে নজরদারি করবেন সংশ্লিষ্ট জেলা-উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তারা। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

এদিকে, ইলিশ শিকার নিয়ে জেলেদের মধ্যে আগ্রহ ও শঙ্কা—উভয়ই কাজ করছে বলে জানান বাগেরহাটের উপকূলীয় মৎস্যজীবী কল্যাণ সমিতির সভাপতি শেখ ইদ্রিস আলী। তিনি বলেন, ‘এখন কালবৈশাখীর সময়। সাগর উত্তাল। ফলে জেলেরা এমনিতেই গভীর সমুদ্রে ইলিশ ধরার জন্য কম যান। এর ওপর করোনার আতঙ্কও রয়েছে। তবু, জীবিকার টানে অনেক জেলেই ট্রলার নিয়ে মাছ ধরতে যাবেন।’

করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থাকলেও দাদন (মহাজনের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নেওয়া) পরিশোধের জেলেরা মাছ ধরতে বাধ্য বলেও মন্তব্য করেন শেখ ইদ্রিস আলী। তিনি বলে, ‘কেউ কেউ উচ্চসুদে মহাজনদের কাছ থেকে দাদন নিয়েছেন। বিশেষ করে যারা ট্রলার ভাড়া করে মাছ ধরতে যান সমুদ্রে, তারা। করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়ায় এখন তাদের পক্ষে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই জীবিকার টানেই তারা মাছ ধরতে যাবেন।’

জানতে চাইলে বাগেরহাটের জেলে আসলাম শেখ বলেন, ‘বছরে মাত্র পাঁচ মাস ইলিশ ধরা যায়। গভীর সাগরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরা মাছ ধরি। এই সময়ের মধ্যেই সরকারের একাধিক নিষেধাজ্ঞা থাকে। তার মধ্যে আমাদের অসুস্থতাসহ নানা সমস্যাও থাকে। তাই ১ মে থেকে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে আমরা সমুদ্রে যাবো।’

ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচরের ইলিশের আড়তদার আব্দুছ সালাম বলেন, ‘আমাদের এই এলাকার জেলেরা সাধারণত মাছের অভয়াশ্রমগুলোয় থেকে মাছ ধরে বিক্রি করে সংসার চালান। এখন কর্মহীন। সংসারে টানাটানি চলছে। জীবন বাঁচানোর তাগিদেই ৩০ এপ্রিলের পর তারা মাছ ধরতে যাবেন।’

এই প্রসঙ্গে বরিশালের মৎস্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আজিজুল হক বলেন, ‘৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে। ১ মে থেকেই জেলেরা মাছ শিকার করতে পারবেন।’

করোনার কারণে ইলিশ শিকারে কোনো বিধিনিষেধ আছে কিনা—জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা সরকারের নির্দেশ মেনে জেলেদের মাছ ধরার পরামর্শ দিচ্ছি। তাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির কাজ চলছে। এই বিষয়ে মৎস্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুসরণ করা হচ্ছে।’

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় মৎস্য অধিদপ্তরের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার এবং মৎস্য অধিদপ্তরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মাসুদ আরা মিমির সঙ্গে। দুজনেই জানান, আগামী ৩০ এপ্রিল নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর জেলেদের মাছ ধরতে  কোনো অসুবিধা হওয়ার তো কথা নয়। তবে, তারা যেন নিজেদের নিরাপত্তার বিষয়টি খেয়াল রাখে, যে বিষয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।

করোনার কারণে সাধারণ ছুটির সময় সুমদ্রে ইলিশ শিকারের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা আছে কিনা—জানতে চাইলে মাসুদ আরা মিমি বলেন, ‘সমুদ্র থেকে তো এখনো মাছ শিকার হচ্ছে। শুধু জাটকা শিকারে ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।’

ইলিশ ধরার পর বাজারজাত করা প্রসঙ্গে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সরকার কৃষিজাতপণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে লকডাউনের বিধিনিষেধ অনেকটা শিথিল করেছে।’ দেশের বিভিন্ন বাজারে মাছ পরিবহনেও কোনো সমস্যা হবে না বলেও তিনি জানান।

 

সূত্র: রাইজিংবিডি

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security