তবে এখন যারা বিদেশ থেকে আসছেন তাদেরকে প্রত্যেকের বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে সরকার। এদের প্রত্যেকের জন্য ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক বা হোম কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসীদের ফেরত আনা হচ্ছে এবং অনেকে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করিয়ে নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে প্লেনে উঠছে অথবা ওই দেশে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন মেয়াদ শেষ করার সর্টিফিকেট নিয়ে আসছে।’
তবে যাদের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হয়নি তাদেরকেও উপসর্গ পরীক্ষার পর অর্থাৎ জ্বর, কাশি বা গলায় ব্যথা নেই এমন পরীক্ষা শেষে একটি সার্টিফিকেট দেওয়া হচ্ছে বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব।
মাসুদ বলেন, ‘ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার পরে যারা কভিড-১৯ পরীক্ষার সার্টিফিকেট বা ১৪ দিনের কোয়ারানটাইন মেয়াদ শেষ করার সর্টিফিকেট দেখাতে পারছেন এবং যাদের করোনাভাইরাসের কোনও ধরনের উপসর্গ নেই তাদেরকে হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হচ্ছে।’
এছাড়া যাত্রীরা যে যে এলাকার বাসিন্দা ওই এলাকার কর্তৃপক্ষকে হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করার জন্য জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে সচিব জানান। এছাড়াও যেসব যাত্রী উপসর্গ পরীক্ষার সার্টিফিকেট নিয়ে আসছেন এবং কোভিড-১৯ সার্টিফিকেটধারী নন কিন্তু জ্বর বা কাশি আছে তাদেরকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ফ্লাইটে অন্তত ১০ জনের মতো যাত্রীকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হচ্ছে।’
ভারত থেকে যারা আসছেন তাদেরকে বেশিরভাগ রোগী অথবা তাদের এটেনডেন্ট এবং রোগীদের ক্ষেত্রে বিষয়টি কিছুটা ভিন্ন বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা নেই এবং সে কারণে রোগীদের আমরা হোম কোয়ারেন্টিনে রাখছি যাতে করে তাদের চিকিৎসা সুষ্ঠুভাবে হয়।’
এছাড়া ভারতে কিছু বাংলাদেশি আছেন যারা তাবলিগে গিয়েছেন, তাদেরকে আমরা পরবর্তী ধাপে ফেরত আনবো।
পররাষ্ট্র সচিব জানান, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপে বেশ কিছু বাংলাদেশি আটকা পড়েছেন। এছাড়াও অল্প সংখ্যক বাংলাদেশি জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইন্দোনেশিয়াতে আটকে আছেন।
আটকে পড়া এসব বাংলাদেশিকে কবে নাগাদ আনা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি তবে এটি বলা মুশকিল। একটি বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করতে অনেক খরচ। সাধারণ অবস্থায় টিকিটের যে দাম তার থেকে এই ফ্লাইটগুলোরর টিকিটের দাম দুই থেকে চারগুণ বেশি হয়ে থাকে। অনেকে এই অর্থ খরচ করে আসতে চায় না।’
যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক ঢাকা ত্যাগ করেছেন এবং প্রত্যেকেই টিকিট কেটে গেছেন বলে তিনি জানান।
এরই মধ্যে চীন, ভারত, তুরস্ক, সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, ওমান, নেপাল থেকে বেশ কিছু বাংলাদেশিরা ফেরত এসেছেন। এছাড়া কুয়েত ও বাহরাইন থেকেও এ মাসে বেশ কিছু বাংলাদেশি ফেরত আসার কথা আছে।
কতজন যাত্রীকে হোম এবং কতজনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, সিঙ্গাপুর থেকে ১৮৫ জন যাত্রীর মধ্যে ১০২ জন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন।
নেপাল থেকে ১০ জন এবং থাইল্যান্ড থেকে ৩৮ জন কোভিড সার্টিফিকেট নিয়ে আসার কারণে সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিনে এবং সৌদি আরবের ৩০৯ জনের সবাইকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া তুরস্ক এবং শ্রীলঙ্কা ফেরত বেশিরভাগ যাত্রী হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন বলে তিনি জানান।
সুত্র: বাংলা ট্রিবিউন