সোমবার, মে ৬, ২০২৪

নওগাঁ সদর হাসপাতাল করোনা আতংকে রোগী শুন্য, নার্সদের নেই পিপিই

যা যা মিস করেছেন

নওগাঁ সংবাদদাতা: করোনা আতঙ্কে নওগাঁ সদর হাসপাতালে কমেছে রোগী। হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের-নারী ও পুরুষ ওয়ার্ড এবং শিশু ওয়ার্ড এখন অনেকটাই ফাঁকা। ২৫০ শর্য্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালে এক সময় যেখানে রোগীদের তিল ধারনের জায়গা থাকতো না। এখন তার উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। বলতে গেলে নার্সরাও অলস সময় পার করছেন।

তবে করোনা আতঙ্কে নার্সরা এক প্রকার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন-করোনায় ডাক্তারদের যেভাবে সুরক্ষিত পোশাক ও অন্যান্য উপকরণ দেয়া হয়েছে সে তুলনায় আমাদের কিছুই দেয়া হয়নি। আতঙ্কের মধ্য দিয়েই রোগীদের সেবা দিতে হচ্ছে।

নওগাঁ সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ (এক সপ্তাহ) পর্যন্ত হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে পুরুষ ওয়ার্ডে ৬৭ জন, মহিলা ১৩০ জন ও শিশু ওয়ার্ডে ১৩০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। ২৫ মার্চ থেকে ভর্তি রয়েছে-মেডিসিন বিভাগে পুরুষ ওয়ার্ডে ৮জন, মহিলা ওয়ার্ডে ১০জন এবং শিশু ওয়ার্ডে ৬ জন। তারা সবাই জ্বর, সর্দি ও দূর্ঘটনার রোগী।

হাসপাতালের জরুরী বিভাগে বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে দেখা যায় গাইনি চিকিৎসক ডা: সুলতানা আফরোজ রুমি ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) পরে চিকিৎসা দিচ্ছেন। জরুরী বিভাগের ঘরের ভিতর ঢুকতে দরজার সামনে দুটি চেয়ারে দড়ি টানা দেয়া আছে। পাশেই রাখা হয়েছে রোগী বসার চেয়ার। সেখানে থেকে পাঁচ ফুট দুরে বসে তিনি রোগীদের কাছ থেকে শুনে ব্যবস্থাপত্র করে দিচ্ছেন।

হাসপাতালের ভিতরে ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে ১২টি বেডের মধ্যে ১টি বেডে সড়ক দূর্ঘটায় আহত হয়ে বুধবার বিকেলে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে আসাদুল হাকিম নামে এক রোগী। এছাড়া মেডিসিন পুরুষ ওয়ার্ডে ১২ বেডের মধ্যে ৩টি বেডে রোগী আছে। যে হাসপাতাল এক সময় রোগীদের আনাগোনায় ব্যস্ত থাকত। এখন সেই ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ২৪ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। বলতে গেলে করোনা আতঙ্কে হাসপাতাল রোগী শুন্য। শুনশান নিরবতা।

হাসপাতালের নার্সের সুপারভাইজার জাহানারা খানম বলেন, হাসপাতালের নার্সের সংখ্যা ৬৫ জন। গত কয়েকদিন আগে কয়েকজনকে মাস্ক দেয়া হয়েছে। অনেকে নিজেরাই কিনে নিয়েছে। এখনো সাবান, হ্যান্ডওয়াস, গ্লোবস দেয়া হয়নি। আমাদের মুল্যায়ন করা হচ্ছে না। অথচ ডাক্তারের পরেই আমাদের স্থান। আমাদেরকে সম্পূর্ন হাসপাতালে সেবা দিতে হয়। ডাক্তারদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) দেয়া হয়েছে। ডাক্তাররা দুর থেকেই রোগী দেখছেন। কিন্তু আমাদেরকে রোগীর কাছ থেকে সেবা দিতে হয়। আমরা তো ঝুঁকির মধ্যে আছি। বৈষম্যে শিকার হতে হচ্ছে আমাদের নার্সদের। করোনা আতঙ্কের পর থেকে গত ৩দিন থেকে হাসপাতলে রোগী কমতে শুরু করেছে।

নওগাঁ সদর হাসপাতালের তত্তাবধায়ক ডা: মুমিনুল হক বলেন, চাহিতার তুলনায় অপ্রতুল। আমরা ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) ১০০ সেট, চশমা ১০০টি, হেকসাসোল ৫০ ও ১০০ এমএল ৬০ বোতল, গ্লোবস ৪০০ পিচ, মাস্ক ১০০ পিচ পেয়েছি। গত কয়েকদিন আগে আমরা এসব উপকরণ পেয়েছি। হাসপাতালে ডাক্তারের পদসংখ্যা রয়েছে ৪২জন হলেও কর্মরত রয়েছে ২২ জন। হাসপাতালে কর্মরত সকল ডাক্তারদের পিপিই দেয়া হয়েছে। নার্সদের জন্য আমরা পর্যাপ্ত মাস্ক দিতে পারিনি। যারা ডিউটিতে থাকবে তাদের জন্য কিছু মাস্ক দেয়া হয়েছে। এছাড়া সাবান দেয়া হয়েছে। আরো চাহিদা পাঠানো হয়েছে।

তিনি বলেন, হাচি, কাশি ও সর্দি রোগীদের গায়ে হাত না দিলেও ডাক্তার চিকিৎসা দিতে পারবেন। তারপরও ডাক্তারদের গ্লোবসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নওগাঁ সিভিল সার্জন ডা: আখতারুজ্জামান আলাল বলেন, করোনা রোগিদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা এবং সেবা প্রদানের জন্য চিকিৎসক ও নার্সদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন সরঞ্জাম সরবরাহ এসেছে। এসব সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে- পিপিই ৫০ সেট, ছোট গ্লোবস ১০০ পিচ, মাঝারি গ্লোবস ১০০ পিচ, বড় গ্লোবস ১০০ পিচ, ৫০এমএল হেকসাসোল ১০০ বোতল, মাস্ক ২০০ পিচ, এমওপি ক্যাপ ৫০টি, গাউন ৫০ পিচ, সু-কভার ৫০ পিচ এবং চশমা ৫০টি। এসব সামগ্রী জেলার ১০টি উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে বিতরণ করা হয়েছে।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security