খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের গুরুতর অসুস্থতার খবরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। অবিলম্বে তার পছন্দ অনুযায়ী ইউনাইটেড হাসপাতালে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে সুচিকিৎসা নিশ্চিতের জোর দাবি জানাচ্ছি। সোমবার রাজধানী নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা গতকালই(রোববার) বলেছিলাম, বিএনপি চেয়ারপারসন কারাগারে গুরুতর অসুস্থ। এখন তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। তার হাত-পা ও কোমরের ব্যথা আরও বেড়েছে। খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হাঁটু ও পায়ের সমস্যায় ভুগছেন। আপনারা জানেন, নির্জন, পরিত্যক্ত ও স্যাঁতসেতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তাকে রাখা হয়েছে। তাকে দেওয়া বিছানা বালিশ অর্থোপেডিকের একজন রোগীর জন্য অনুপযোগী। সরকারি মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা অর্থোপেডিক বেড দেওয়ার সুপারিশ করলেও এখন পর্যন্ত তাকে সেই বেড দেওয়া হয়নি। জরুরিভিত্তিতে তার এমআরআইসহ উন্নত চিকিৎসার দরকার।
তিনি আরও বলেন, বারবার বলার পরেও কারা কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে উপেক্ষা করছে। তারা ক্ষমতাসীনদের মুঠোবন্দী। ফ্যাসিবাদের রোগ-লক্ষ্মণ কারা কর্তৃপক্ষের মধ্যে তীব্র আকার ধারণ করেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সরকার দেশনেত্রীকে এক অবনতিশীল স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে ফেলে রাখার জন্যই কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে। বিষয়টি গভীর উদ্বেগের ও বন্দি নির্যাতনের শামিল।
আগে পরিবারের সদস্যদের ৭ দিন পর পর খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হতো জানিয়ে বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, এখন ১০ দিন পর দেখা করার নির্দেশ হতে যাচ্ছে। এর উদ্দেশ্যই হচ্ছে খালেদা জিয়াকে মানসিকভাবে যন্ত্রণা দেওয়া। তার সুচিকিৎসা নিয়ে কারাকর্তৃপক্ষের টালবাহানা অত্যন্ত রহস্যজনক।
কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে বিএনপি নোংরা রাজনীতি করতে না পারায় হতাশায় ডুবছে- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ভিসির বাসায় নাশকতার অজুহাত তুলে আন্দোলনের লক্ষ্যকে দিকভ্রান্ত করার ষড়যন্ত্রে মেতে আছে সরকার। সরকারের পেটোয়ারাই যে ভিসির বাড়িতে আক্রমণের মূল নায়ক সেটি তারা প্রমান করে দিলেন ছাত্রলীগ নেত্রী রগকাটা এশার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে। শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কার চেয়েছিল, বাতিল নয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী জেদের বশে কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়ে দিলেন। বিষয়টি যে শুভঙ্করের ফাঁকি ও সাম্প্রতিককালের সেরা প্রহসন সেটি আমরা আগেই বলেছিলাম।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, গোলাম আকবর খন্দকার, সহ-দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।