ক্যান্সারসহ নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ায় প্রধান বিচারপতি ছুটি নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, চিকিৎসার জন্য সাংবিধানিক নিয়ম অনুযায়ী তিনি (প্রধান বিচারপতি) ছুটি নিয়েছেন। ছুটির দরখাস্তে তিনি এসব উল্লেখ করেছেন।
আনিসুল হক বলেন, ‘বিচারবিভাগ স্বাধীন হওয়ার পর প্রধান বিচারপতি নিজের ছুটি নিজেই নিয়ে থাকেন। এটিই সাংবিধানিক নিয়ম। সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি অসুস্থ হওয়ায় দায়িত্ব পালনে যদি অপারগতা প্রকাশ করেন, তাহলে একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিতে হয়। আর এই বিষয়টি রাষ্ট্রপতিকে জানাতে হয়।’
তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতির ছুটি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিয়োগের প্রজ্ঞাপনটি আইন মন্ত্রণালয়ে থেকে জারি করা হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী হয়ে তা রাষ্ট্রপতির কাছে যায়।
আইনমন্ত্রী বলেন, সম্পূর্ণ আইনি প্রক্রিয়া মেনেই প্রধান বিচারপতির ছুটি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এটা নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি ছড়ানোর সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠাতে চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে- এমন অভিযোগ যারা করেন তাদের অভিযোগ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ প্রণোদিত। যারা প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে ষড়যন্ত্রের জাল বুনেছিলেন তারাই তার ছুটিতে যাওয়া নিয়ে চিৎকার করছে। তারা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ধারাবাহিকতাকে ব্যহত করতে চেয়েছিলেন। এ ধরনের স্প্যাকুলেশন করার কোনও কারণ নেই। ওনারা রে কেন স্প্যাকুলেশন করেন তা আমি বুঝি না। আমার মনে হয় ওনারা কিছু একটা ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করছিলেন। এ জন্যই তারা কান্নাকাটি শুরু করেছেন।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ছুটি শেষ করে তিনি স্বপদে ফিরে আসুক, দায়িত্ব পালন করুক। তা আমি চাই এবং আল্লাহর কাছে সেই দোয়া করি।’
এর আগে আইনমন্ত্রণালয়ের সচিব আবু সালেহ শেখ মোহাম্মদ জহিরুল হক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ‘রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৫৭ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান বিচারপতির শারীরিক অসুস্থতার কারণে আগামী ৩ অক্টোবর থেকে পহেলা নভেম্বর পর্যন্ত ৩০ দিনের ছুটির আবেদন মঞ্জুর করেছেন এবং প্রধান বিচারপতির ছুটিকালীন সময়ে আপিল বিভাগের কর্মে প্রবীণতম বিচারক বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞাকে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালনের দায়িত্ব দিয়েছেন।’
উল্লেখ্য, গত সোমবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা রাষ্ট্রপতির কাছে এক মাসের ছুটির জন্য আবদন করেন। সোমবার বিকাল ৩টার দিকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি রাষ্ট্রপতির কাছে তিনি পাঠান। প্রধান বিচারপতি ছুটিতে থাকায় সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন।