নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রয়োজনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে অস্ত্র ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। এছাড়া জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখল ও কারচুপি রোধেও এ নির্দেশ দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘কিছু লোক কেন্দ্র দখল করল আমার লোক অসহায় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে- এটা গ্রহণযোগ্য না। আর্মসের প্রোপার ইউজ করতে হবে। কেউ যেন জোরপূর্বক কেন্দ্রে ঢুকতে না পারে, কেন্দ্র দখল করতে না পারে- সে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
শনিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি মিলনায়তনে নাসিক নির্বাচন নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের সময় একথা বলেন তিনি।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসার-ভিডিপি, কোস্টগার্ড, গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা ও স্থানীয় পুলিশ, প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা ও সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিনিধিও উপস্থিত ছিলেন। এসময় চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব ও ঊর্ধ্বতন কমিশন কর্মকর্তারাও বৈঠকে অংশ নেন।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা জানান, এই নির্বাচন নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ভোটে কোনো ধরনের শঙ্কা দেখছে না বলে মত দিয়েছে।
কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে সিইসি জানান, ভোটের আগেই রাতে কেন্দ্র দখল হয়, প্রকাশ্য দিবালোকে কেন্দ্র দখল হয়। তারপর আমাদের কাছে নোটিশ হচ্ছে; আমরা ভোট গ্রহণ বন্ধ করে দিচ্ছি। যেখানে প্রতি কেন্দ্রে এতো ফোর্স, তারপরও কীভাবে এতো লোক কেন্দ্রে ঢুকে যায়। এসময় এসব অনিয়ম রোধে কঠোর হতে বলেন তিনি।
তিনি জানান, ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে পছন্দের প্রার্থীকে এবং নিরাপদে ফিরে যেতে পারে-এটাই চাওয়া। সন্ত্রাসী, মাস্তান, বহিরাগতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং তা দৃশ্যমান করতে হবে।
বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ জানান, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে এটা দেখাতে হবে।
স্বরাষ্ট্র সচিব জানান, অতীতের নির্বাচনের চেয়ে এ নির্বাচন আরো সফল হবে। সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচন করতে সবাই অঙ্গীকারবদ্ধ।
বৈঠকে র্যাবের ডিজি জানান, নির্বাচনী পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রয়েছে। এ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ কনটিনিউ করবে।
এনএসআই মহাপরিচালক জানান, ভোটে কোনো ধরনের আশঙ্কার তথ্য নেই।
এসবি জানায়, এ নির্বাচনে নির্দিষ্ট কোনো থ্রেট নেই। তবে নির্বাচনে সাধারণত যেসব থ্রেট আসে তা মোকাবেলা করা হবে। জেলা পরিষদে আইন-শৃঙ্খলা কোনো সমস্যা হবে না। ব্যক্তি নিরাপত্তা দেখতে হবে।
সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রতিনিধি জানান, সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা থাকতে তা যেনো ‘মিনিটসে’ লেখা হয়। এখন পর্যন্ত কোনো প্রস্তুতি নেয়া হয়নি। তবে ইসি চাহিদা থাকলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা করা হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, নারায়ণগঞ্জে এখন পর্যন্ত কোনো থ্রেট বা অনিয়ম চোখে পড়েনি। জেলা পরিষদেও কোনো অনিয়ম হয়নি।
নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার জানান, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হবে।
বৈঠকে একজন জানান, জেলা পরিষদের ১৯ জেলায় একক প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছে। ৩৬ জেলায় ৭৭ জন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে আওয়ামী লীগের। এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে। ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা রয়েছে।
প্রসঙ্গ, আগামী ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ ৭ দলের প্রার্থী রয়েছে। নির্দলীয় কাউন্সিলর পদে ১৫৬ জন সাধারণ ও সংরক্ষিত পদে ৩৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন।