মাঝে স্টিলের প্লেট দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে রাজধানীর ব্যাস্ত এলাকার অধিকাংশ ক্রসিং। উদ্দেশ্য ছিল, যেন ক্রসিং দিয়ে সরাসরি গাড়ি ও পথচারীরা যাতায়াত করতে না পারে, যানজট সমস্যার নিরসন হয়। তবে সুরাহা মেলেনি যানজটের। বরং, বেড়েই চলেছে এর প্রকোপ। দিন-রাত ক্রসিং এর চারপাশের পুরো সড়কে লেগে থাকে তীব্র যানজট।
নতুন বাজার ক্রসিংটি মৌচাক-মালিবাগ-রামপুরা থেকে কুড়িল বিশ্বরোডের মাঝের একটি ব্যস্ততম ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। এ ক্রসিংয়ের পশ্চিম দিকের রাস্তা চলে গেছে গুলশান-বনানীর দিকে এবং পূর্বদিকে ভাটারার ১০০ ফুট রাস্তা চলে গেছে বেরাইদ-জগন্নাথপুর ইত্যাদি এলাকা পর্যন্ত।
এখানে সারক্ষণই যানজট লেগে থাকায় দিনের পর দিন মানুষকে পড়তে হচ্ছে অসহনীয় ভোগান্তিতে।
১০০ ফুট রাস্তার চেয়ে গুলশান-বনানীর রাস্তাটিতে গাড়ির চলাচল অনেক বেশি। গুলশান-বনানীর দিক থেকে আসা যানবাহনগুলো আগে সরাসরি ক্রসিংটি দিয়ে পার হয়ে ভাটারা ১০০ ফুট রাস্তা বা রামপুরার দিকে চলাচল করতো। এ কারণে সৃষ্ট চারপাশের যানজট নিরসনের লক্ষ্য নিয়ে বর্তমানে ক্রসিংটির মাঝে স্টিলের প্লেট দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
তবে ক্রসিংয়ের সামনে এবং পেছনে দু’টি ইউটার্ন আছে। গাড়িগুলোকে এ দু’টি ইউটার্ন হয়ে ঘুরে যেতে হয়। রাস্তার পাশেই ভাটারা থানা ছাড়াও রয়েছে নতুন বাজার ট্রাফিক পুলিশ বক্স। এখান থেকে পুরো এলাকার ট্রাফিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, বেলা ১১টার দিকে যাত্রীবাহী পরিবহনের গাড়ি একটির পর একটি যাত্রী ওঠাতে ক্রসিং ও তার সামনে-পেছনে ২০ গজ জায়গাজুড়ে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিটি গাড়ি গড়ে ৩ থেকে ৫ মিনিট করে দাঁড়িয়ে আছে এখানে। অথচ এখানে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকার কথা নয়।
গাড়িগুলো দাঁড়িয়ে থাকায় পেছনে আটকা পড়ে আছে অসংখ্য প্রাইভেটকার এবং যাত্রীবাহী বাস, ছোট ছোট পিক-আপ ভ্যান, রিকশা, সিএনজি চালিত অটোরিকশাসহ আরও অনেক গাড়ি।
রাত নয়টায়ও ক্রসিংটিতে একই অবস্থা দেখা গেছে। প্রতিটি গাড়ি গড়ে ৪ থেকে ৫ মিনিট করে দাঁড়িয়ে থেকে যানজট বাড়িয়ে তুলছে।
নতুন বাজার ক্রসিংয়ের ৫০ গজ সামনে-পেছনের দু’টি ইউটার্নকেও যানজট সৃষ্টির জন্য দায়ী করছেন অনেকে। তারা বলছেন, ইউটার্নে এসে কিছু গাড়ি মোড় নিয়ে ঘুরে যাচ্ছে। আর এ সময় অন্যপাশের রাস্তা বন্ধ রাখতে হচ্ছে এবং যে রাস্তা থেকে গাড়িগুলো মোড় নিচ্ছে, তার পেছনের গাড়িগুলোও যেতে পারছে না। ফলে ইউটার্ন দু’টি নতুন বাজার ক্রসিংয়ের যানজটকে বাড়িয়ে তুলছে।
তবে পথচারীরাও নিয়ম না মেনে রাস্তা পার হয়ে যানজটকে আরও তীব্র করে তুলছেন। নতুন বাজার ক্রসিংয়ের সঙ্গেই ফুটওভার ব্রিজ। কিন্তু অসংখ্য মানুষজন ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার না করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যস্ত সড়কের ওপর দিয়েই রাস্তা পার হচ্ছেন।
নতুন বাজার ট্রাফিক পুলিশ দুই রাস্তার মাঝে বাঁশ লাগিয়ে দিয়েছে, যেন পথচারীরা সড়কের ওপর দিয়ে রাস্তা পার হতে না পারেন। কিন্তু পথচারীরাই মাঝে মাঝে বাঁশ খুলে ফেলছেন রাস্তা পারাপারের জন্য। তারা যখন-তখন রাস্তায় ঢুকে পড়ায় দু’পাশের গাড়িগুলো বাধ্য হচ্ছে থেমে যেতে বা গতি কমিয়ে দিতে। যা যানজট সমস্যা বাড়াচ্ছে।
নতুন বাজার ক্রসিংয়ে ৩ জন এবং ইউটার্নে ২ জন করে ট্রাফিক পুলিশ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেও যানজট ঠেকাতে পারছেন না, যানবাহন ও মানুষজনের নিয়ম না মেনে চলাচল করার কারণে।