খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার সমালোচনা করে বিএনপি নেতা হাফিজ উদ্দিন বলেছেন, তার দলের প্রধান মামলা হওয়ার মতো আপত্তিকর কোনো কথা বলেননি। শুক্রবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আয়োজনে এক আলোচনা সভায় তিনি এ দাবি করেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ বলেন, “সেদিন খালেদা জিয়া এমন কী আপত্তিকর কথা বলেছেন যে মামলা হবে? তিনি বলেছেন, শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বির্তক আছে। এ কথাটি তিনি বলেছেন তার আগের বক্তাদের পরিপ্রেক্ষিতে।
“আমরাই বলেছিলাম যুদ্ধকালীন মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা ছিল ৮০ হাজার। সেই ৮০ হাজারের আওয়ামী লীগের সরকার পরিণত করেছে আড়াই লাখে।”
গত বছরের ২১ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে এক মন্তব্য করার প্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা ঠুকে দেন আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন মেহেদী।
পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে মামলা আমলে নেওয়ার পর খালেদা জিয়াকে আগামী ৩ মার্চ হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
২১ ডিসেম্বর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ওই আলোচনা সভায় হাফিজ উদ্দিনও উপস্থিত ছিলেন।
মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়েছে, এর কোনো ভিত্তি নেই। এই মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করুন।”
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অনুমতি দেওয়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়েরর আইনের বিধান ব্যাখ্যা করে সাবেক মন্ত্রী হাফিজ বলেন, “দেশদ্রোহী বা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হতে পারে যদি একটি নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগে তাকে উৎখাতের চেষ্টা করা হয়। অবৈধ পন্থায় যদি সরকারকে উৎখাত করার চেষ্টা করা হয়, তাহলে সেটিকে দেশদ্রোহিতামূলক বলে আইনে বলা আছে।
“বেগম জিয়া এই বিনাভোটের অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে সেদিন কোনো কথা বলেননি।”
“আমরা যারা মুক্তিযোদ্ধা আছি, আমরা সবাই চাই, শহীদদের সঠিক সংখ্যা নিরূপণ করা হউক। তাদের আরও সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হউক, তাদের আরও উচ্চ সন্মানের স্থানে বসানো হউক।”
এ প্রসঙ্গে তিনি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ ও বিদেশি বন্ধুদের ‘সোনার বদলে তামার ক্রেস্ট’ দেওয়ার প্রসঙ্গে তুলে ধরেন।
হাফিজ উদ্দিন বলেন, “চাকরির সময় বাড়ানোর জন্য ২৬ জন সচিব ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সাজার চেষ্টা করেছেন। আমাদের বিদেশি বন্ধুদের যে ক্রেস্টটি দেওয়া হয়েছে, সেখানে সোনার বদলে তামা দেওয়া হয়েছে।”
প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “দেশের মাননীয় প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা একটি কথাকে নিয়ে ক্ষমতাসীনরা কীভাবে তোলপাড় শুরু করে দিয়েছে। তিনি সত্যি কথা বলেছেন যার শপথ নেই, তিনি তো রায় লেখতে পারেন না।”