সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) বাঙালির প্রাণের মেলা অমর একুশে গ্রন্থমেলার পর্দা উঠল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি মুক্তভাবে বইমেলা ঘুরে বেড়ানোর ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন ।
বিকেল ৩টার পরই বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করছেন এমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সবার মনেই আকাঙ্ক্ষা থাকে এ মেলা কখন হবে। এ আকাঙ্ক্ষার জন্ম দিয়েছেন আমাদের ভাষাশহীদরা। আমি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলাম, তখন বাংলা একাডেমির লাইব্রেরি ব্যবহার করতাম। তখন খুব আসতাম এখানে বান্ধবীদের নিয়ে।’
তিনি বলেন, ‘এখানে আসলে খুব ভালো লাগে। এখন সময় পাই না নানা কাজে। কবে এ কাজ থেকে কবে মুক্তি পাব জানি না। সে সময় মুক্তভাবে এখানে ঘুরে বেড়াতে পারব কি না তাও জানি না।’ বাংলা একাডেমিকে হীরকজয়ন্তীর শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী।
মাতৃষাভাকে সমৃদ্ধ করার জন্য তার সরকার ব্যাপকভাবে কাজ করে যাচ্ছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা গবেষণা ইনিস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছি। ২১ ফ্রেবুয়ারিকে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে আমাদের সরকারের আমলে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের ভাষা যখন বিদেশিদের মুখে শুনি তখন গর্বে প্রাণ ভরে যায়। তাই আমি সুদূর থেকে এখানে এসেছেন তাদের ধন্যবাদ জানাই।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সংস্কৃতি সচিব বেগম আক্তারী মমতাজ। স্বাগত ভাষণ দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘এটা শুধু গ্রন্থমেলা নয়, এটা বাঙালি জাতির মানসগঠনে ভূমিকা রাখে। বাঙালির বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চায় এ গ্রন্থমেলার অবদান অপরিসীম। বইমেলা প্রাঙ্গণ লেখক-পাঠক-প্রকাশকদের মিলনমেলায় পরিণত হয়।
বাংলা একাডেমির হীরকজয়ন্তী উপলক্ষে এবারের গ্রন্থমেলার মূল থিম ‘বাংলা একাডেমির হীরকজয়ন্তী’।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘বইমেলার পরিসর বাড়ছে। যেভাবে বইমেলার পরিসর বাড়ছে তাতে বাংলা একাডেমির একার পক্ষে এ মেলার নিয়ন্ত্রণ ক্রমেই কঠিন হয়ে পড়ছে।’
সভাপতির বক্তব্যের পরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকদের হাতে সম্মাননা তুলে দেন। এ সময় নেপথ্যে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানটি ভেসে আসে। ১০ ক্যাটাগরিতে এই পুরস্কার গ্রহণ করেন কবি-সাহিত্যিকরা।
প্রধানমন্ত্রীর সৈয়দ শামসুল হক রচিত ও বাংলা একাডেমি প্রকাশিত বঙ্গবন্ধুর বীরগাথা বইয়ের ব্রেইল ও অডিও সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর হাতে বাংলা একাডেমি প্রকাশিত আধুনিক বাংলা অভিধান তুলে দেওয়া হয়েছে।