তাসলিমুল হাসান সিয়াম, গাইবান্ধা প্রতিনিধি: অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় পদ হারালেন গাইবান্ধার পলাশবাড়ি উপজেলার পবনাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান। সেই সাথে ঐ পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে।
বুধবার (১২ এপ্রিল) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ ইউপি-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমীন প্রধান স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ওই পত্র সূত্রে জানা যায়, পলাশবাড়ি উপজেলার পবনাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মাহাবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে ২০২১-২২ অর্থ বছরে ইউনিয়ন পরিষদের ১ শতাংশ উত্তোলিত ১ লাখ ৯৭ হাজার টাকা পরিষদে ভবনের মালামাল কেনা, সকল সদস্য-সংরক্ষিত সদস্য এবং চেয়ারম্যানের চেয়ার কেনায় আর্থিক অনিয়ম-দুর্নীতি করা হয়। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের ট্যাক্স আদায়ের অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা না করে নিয়ম বহির্ভুত খরচ দেখানো হয়।
এছাড়া দুই মাসের ট্যাক্স বই তদন্তকালীন সময়ে উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হওয়া, পরিষদের মূল ট্যাক্স বই ব্যতিরেকে ভুয়া ট্যাক্স আদায় রশিদ দ্বারা চেয়ারম্যানের পছন্দের ব্যক্তি (দাফতরিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত নন) মো. আল আমিন স্বাক্ষরিত ট্যাক্স আদায়ে আর্থিক অনিয়ম করা হয়।
শুধু তাই নয়, গ্রাম আদালতের কার্যক্রম দাফতরিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত না হওয়া সত্ত্বেও হোসনে আরা বেগম কর্তৃক গ্রাম আদালতের পেশকার পরিচয় দেওয়া হয়। নোটিশের মাধ্যমে বিচার প্রার্থীর পক্ষে এবং বিপক্ষে উভয়ের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। একই ইউনিয়ন পরিষদের ৯ জন সদস্য তার প্রতি অনাস্থা প্রস্তাব আনে। সরেজমিনে তদন্তে এসব প্রমাণিত হওয়ায় ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়।
অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৯(৩) ধারা অনুযায়ী পলাশবাড়ি উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তাকে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা হয়। তিনি তদন্তকারী কর্মকর্তা বিশেষ সভা আহবান করেন। এবং গোপন ব্যালটের মাধ্যমে অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ও বিপক্ষে ভোট গ্রহণ করেন। অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ৯টি ভোট পড়ে।
সেজন্য স্থানীয় সরকার আইন, ২০০৯ এর ৩৯(১৩) ধারার বিধান অনুযায়ী সরকার কর্তৃক জনস্বার্থে অনাস্থা প্রস্তাবটি অনুমোদিত হওয়ায় পবনাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহাবুবুর রহমানের পদটি একই আইনের ৩৫(১) (চ) ধারা অনুযায়ী শূন্য ঘোষণা করা হয়।