বৃহস্পতিবার, মে ২, ২০২৪

বিক্ষোভে উত্তাল শাবি, হলে হলে শিক্ষার্থীদের তালা

যা যা মিস করেছেন

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) চলছে প্রতিবাদী বিক্ষোভ মিছিল। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনার প্রতিবাদে হলে ক্যাম্পাসের গোল চত্বরে অবস্থান করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন তারা।

এদিকে, সকাল থেকেই পুরো ক্যাম্পাসে স্লোগান দিতে শোনা যায় শিক্ষার্থীদের। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন হলে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন। হলগুলো এখন শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণে।

সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা একযোগে শাবির বঙ্গবন্ধু হল, সৈয়দ মুজতবা আলী হল, প্রথম ছাত্রী হল ও বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী (দ্বিতীয় ছাত্রী হল) হলে তালা লাগিয়ে দেন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শাহপরান হলের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। শাবিপ্রবি প্রশাসনের কাউকেই হলে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
অন্যদিকে, শাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় ৮ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. রাশেদ তালুকদারকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে।

শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘রবিবারের ঘটনা খতিয়ে দেখতে এই কমিটি করা হয়েছে। দ্রুত কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।’

এর আগে, গতকাল রাতে শাবি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। আজ দুপুর ১২টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের। কিন্তু সিংহভাগ শিক্ষার্থীই এই নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা কাল রাত থেকেই দফায় দফায় বিক্ষোভ করছেন। আজ সোমবার সকাল থেকে উত্তাল রয়েছে শাবি। পরিস্থিতির দিকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য কড়া নজরদারি করছেন।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্টের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাগবিতাণ্ডা হয়। শিক্ষার্থীরা প্রভোস্টের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলেন। এ নিয়ে শনিবারও আন্দোলন চালিয়ে যান শিক্ষার্থীরা। ওইদিন শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ ওঠে। হল প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবিসহ তিন দফা দাবি এবং ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে গতকাল রবিবার ফের উত্তাল হয়ে ওঠে শাবি ক্যাম্পাস।

গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ নিজের কার্যালয় থেকে বাসভবনে যাওয়ার পথে আন্দোলনকারীরা উপাচার্যকে ঘিরে ধরে। পরে উপাচার্য এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনে অবস্থান নেন। এসময় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে তালা লাগিয়ে দেন। বিকাল ৪টার দিকে শতাধিক পুলিশ ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন। এসময় শিক্ষার্থীরা ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ ‘পুলিশ তুমি বাসায় যাও, আমার ক্যাম্পাস ছেড়ে দাও’ স্লোগান দিতে থাকেন। বিকাল সোয়া ৫টার দিকে অবরুদ্ধ ভিসিকে উদ্ধার করতে অ্যাকশনে যায় পুলিশ। এসময় শিক্ষার্থীরা বাধা দিলে পুলিশ লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছুড়ে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে উপাচার্যকে মুক্ত করে তার বাসভবনে পৌঁছে দেয়। পুলিশের লাঠিচার্জে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তাসহ অর্ধশতাধিক আহত হন। পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, হামলায় তাদের ১০ সদস্য আহত হয়েছেন।

এদিকে, অবরুদ্ধ পরিস্থিতি মুক্ত হয়ে জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। সভা শেষে উপাচার্য সাংবাদিকদের জানান, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য শাবি বন্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট পদ থেকে সহযোগী অধ্যাপক জাফরিন আহমেদ অসুস্থতার কারণে পদত্যাগ করেছেন। এ পদে অধ্যাপক ড. নাজিয়া চৌধুরীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security