সোমবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৪

অক্সিজেনের পর এবার নতুন যে সংকটে পড়তে যাচ্ছে ভারত, জানালেন ডা. দেবী শেঠি

যা যা মিস করেছেন

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে মহাবিপর্যয় নেমে এসেছে ভারতে। এরই মধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় দেখা দিয়েছে অক্সিজেনের তীব্র সংকট। সেই সঙ্গে রয়েছে আইসিইউ বেডের সংকট। এর মধ্যেই নতুন শঙ্কার কথা জানালেন বিশ্বখ্যাত কার্ডিয়াক সার্জন ডা. দেবী শেঠি।

তিনি বলেছেন, অক্সিজেন সংকট সমাধান হয়ে গেলেও আরেকটি সমস্যা নতুন করে প্রকট আকার ধারণ করবে। তা হলো- আইসিইউতে থাকা রোগীদের মৃত্যু। কারণ, তাদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার মতো যথেষ্ট নার্স-চিকিৎসক পাওয়া যাবে না। তখন চিকিৎসক ও নার্সের ঘাটতি মেটানো বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে মনে করেন তিনি।

সম্প্রতি ভারতের সিম্বিয়োসিস ইন্টারন্যাশনাল (ডিমড বিশ্ববিদ্যালয়) আয়োজিত স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে এক ভার্চুয়াল সম্মেলনের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। সেখানে এমন আশঙ্কার কথা জানান তিনি।

 

ওই ভার্চুয়াল সম্মেলনে ডা. শেঠি বলেন সতর্ক করে বলেন,“মহামারীর শুরু থেকে যেসব চিকিৎসক-নার্সরা কাজ করছেন, তাদের অনেকের বার্নআউট হচ্ছে। আবার অনেকে সংক্রমিতও হয়ে পড়ছেন। মে মাসে প্রচণ্ড গরম হতে পারে। তখন শারীরিকভাবে সক্ষম চিকিৎসক-নার্সের পক্ষে কোভিড আইসিইউতে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার বেশি কাজ করা কঠিন হয়ে পড়বে। তখন একটা বড় সংকটে পড়বে দেশ।”

ডা. শেঠি এক পরিসংখ্যান দেখিয়ে বলেন, ভারতে প্রতিদিন পাঁচ থেকে ১০ লাখ মানুষ সংক্রমিত হচ্ছেন। পরিসংখ্যানগতভাবে বয়স নির্বিশেষে মোট কোভিড রোগীদের পাঁচ শতাংশের জন্য আইসিইউ বেডের প্রয়োজন। এর মানে হলো ভারতে প্রতিদিন প্রায় ৮০ হাজার আইসিইউ বেডের চাহিদা আছে। কিন্তু, ভারতে আইসিইউ বেড আছে ৭০ থেকে ৯০ হাজারের মতো। এর সবই এখন রোগী দিয়ে পূর্ণ। অথচ মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ এখনও শীর্ষে পৌঁছায়নি। এদিকে, একজন কোভিড রোগীর কমপক্ষে ১০ দিন আইসিইউতে থাকতে হয়। ফলে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে অন্তত পাঁচ লাখ অতিরিক্ত আইসিইউ বেড তৈরি করা প্রয়োজন।”

এই সংকট মোকাবেলায় দ্রুতই দুই লাখ নার্স নিয়োগ দেওয়া উচিত বলে মনে করেন এই কার্ডিয়াক সার্জন। তিনি বলেন, “আইসিইউতে থাকা কোভিড রোগীরা মূলত নার্সদের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। তাই ভারতের নার্সিং স্কুল ও কলেজগুলোতে যে দুই লাখের বেশি নার্স তিন বছরের জিএনএম বা চার বছরের বিএসসি কোর্সের প্রশিক্ষণ শেষ করেছে, তাদের চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা না করে এক বছরের জন্য কোভিড আইসিইউতে কাজ করার সুযোগ দেওয়া উচিত। এরপর তারা তাদের ডিগ্রির সনদ পেতে পারেন।”

এমনকি, সংকট মোকাবেলায় কোভিড আইসিইউতে কাজ করা চিকিৎসকদের এনইইটি পরীক্ষায় অতিরিক্ত নম্বর দেওয়া উচিত বলেও মনে করেন ডা. শেঠি।

ডা. শেঠি জানান, বর্তমানে পিজিতে (প্রক্টের অ্যান্ড গ্যাম্বল হাইজিন অ্যান্ড হেলথ কেয়ার লিমিটেড) চাকরি পেতে এনইইটি প্রবেশিকা পরীক্ষার জন্য প্রায় এক কোটি ৩০ লাখ তরুণ চিকিৎসক লাইব্রেরিতে পড়াশোনা করছে। ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশন ও ন্যাশনাল বোর্ড অব এক্সামিনেশনের উচিত অবিলম্বে অনলাইনে যথাযথভাবে এনইইটি পরীক্ষা নিয়ে দ্রুত ফল প্রকাশ করা।

এমনকি, এরপরও যে এক লাখ চিকিৎসক পাস নম্বর তুলতে পারবেন না, তাদেরও কোভিড আইসিইউগুলোতে কাজ করার অনুমতি দেওয়া উচিত। পরের বছর প্রবেশিকা পরীক্ষায় কোভিড আইসিইউতে কাজ করা এই চিকিৎসকদের গ্রেস নম্বর (অতিরিক্ত নম্বর) দেওয়া যেতে পারে। পিজি’র প্রশিক্ষণ নেওয়া চিকিৎসকরা আইসিইউতে কাজ করার জন্য চাইলে পরীক্ষায় নাও অংশ নিতে পারেন।

ডা. শেঠি আরও বলেন, “ভারতে ২৫ হাজার চিকিৎসক আছেন, যারা স্নাতকোত্তর প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন, তবে এখনো পরীক্ষায় অংশ নেননি। এই শিক্ষার্থীদের বলা যেতে পারে, তারা যদি কোভিড আইসিইউতে এক বছরের জন্য কাজ করেন, তবে পরীক্ষা ছাড়াই তাদের ডিগ্রি দেওয়া যেতে পারে।”

এছাড়া, ৯০ হাজার থেকে এক লাখ চিকিৎসক যারা বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে স্নাতক পাস করেছেন কিন্তু এখনও ভারতের জাতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা দেননি, তাদেরও এই সুযোগ দেওয়া উচিত। এক বছরের জন্য আইসিইউতে কাজ করলে তাদেরকে নিবন্ধন সনদের যোগ্য বলে বিবেচনা করা যেতে পারে।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security