বৃহস্পতিবার, মে ২, ২০২৪

দূর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে নারীর মৃত্যু, পরিবারের অভিযোগ হত্যা

যা যা মিস করেছেন

খ.ম. নাজাকাত হোসেন সবুজ (বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি) :

বাগেরহাট জেলার, কচুয়ায় দূর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে আহত শেফালী বেগম (৫৫) নামের এক বিধবার মৃত্যু হয়েছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কচুয়া উপজেলার পানবাড়িয়াস্থ নিজ বাড়িতে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

এর আগে শনিবার (৩০ জানুয়ারি) গভীর রাতে প্রকৃতির ডাকে বাইরে বের হলে মুখ বেধে ওই নারীর গায়ে আগুন দেয় দূর্বৃত্তরা। ওই রাতেই বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় শেফালী বেগমকে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রবিবার (৩১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় স্বজনরা। ৬দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) ভোরে মারা যান বিধবা শেফালী বেগম।

স্বজনদের অভিযোগ শেফালী বেগমের একমাত্র সন্তান অলিয়ার মোল্লার শ্বশুর বাড়ির লোকদের সাথে মামলা ও বিবাধ থাকায় এ ধরণের ঘটনা ঘটতে পারে।বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়ে খতিয়ে দেখছে বলে জানিয়েছেন বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পঙ্কজচন্দ্র রায়।

নিহত শেফালী বেগম কচুয়া উপজেলার পানবাড়িয়া গ্রামের মৃত বেল্লাল মোল্লার স্ত্রী। এদিকে মায়ের এমন অকাল মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন একমাত্র ছেলে অলিয়ার রহমান মোল্লা।

প্রতিবেশী রাজু মোল্লা বলেন, ঘটনার দিন গভীর রাতে অলিয়ার ভাইয়ের ডাক চিৎকার শুনে আমি তাদের বাড়িতে আসি। এসে দেখি ঘরের সামনে মায়ের নিথর দেহ নিয়ে চিৎকার করছেন অলিয়ার ভাই। শেফালী বেগমের নাভীর নিচের সর্বাঙ্গ পোরা ছিল। একটি কোম্বল পেঁচিয়ে আমরা দুই জনে শেফালী বেগমকে ঘরের বারান্দায় উঠাই। পরে বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিসের এ্যাম্বুলেন্সে করে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখান থেকে সোমবার (০১ ফেব্রুয়ারী) সকালে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থান্তান্তর করি।

শেফালীর বোন রাবেয়া বেগম বলেন, আমার বোনের মৃত্যু পর্যন্ত তার পাশে ছিলাম। মৃত্যুর আগে সে আমাকে বলেছে রাতে প্রকৃতির ডাকে বাইরে বের হলে তিনজন লোক তাকে ধরে মুখ বেধে ফেলে। পরে তার শরীরে এসিড মেরেছে এবং আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। মারা যাওয়ার আগে এদের বিচারও চেয়েছেন আমার বোন।

শেফালীর এক বৃদ্ধ স্বজন বলেন, পার্শ্ববর্তী আবাদ (ভাটখালি) গ্রামের ইদ্রিস আলী পাইকের মেয়ের সাথে অলিয়ার রহমানের বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু কিছু দিন পরে অলিয়ারের স্ত্রী মারা যায়।এই সময় তার শ্বশুর, চাচা শ্বশুর দেলোয়ার পাইক এবং শ্বশুরে ভাগ্নে আল আমিন আকন অলিয়ারের গরু নিয়ে যায়। ঘের লুট করে নেয়। পরে অলিয়ারের নামে মামলা দেয়। অলিয়ারের সাথে শত্রুতার জেরেও এই হত্যাকান্ড ঘটতে পারে বলে দাবি এই বৃদ্ধের।

অলিয়ার রহমান বলেন, আমার মা অনেক ভাল মানুষ ছিলেন। মা ছাড়া আমার আর কেউ নেই। যারা আমার মাকে পুড়িয়ে মারল আমি তাদের শাস্তি চাই।

অলিয়ারের প্রতিবেশী ও বাধাল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের খান বলেন, আগুন দেওয়ার জায়গা দেখে স্পষ্ট বোঝা যায়, কেউ না কেউ এই নারীকে আগুন দিয়ে হত্যা করেছে। সঠিক তদন্তপূর্বক প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায় বলেন, খবর শুনে কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ পুলিশ ফোর্স ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের জন্য পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। আশাকরি খুব শীগ্রই আমরা ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পারব।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security