কয়েক দিনের টানা মৃদু শৈত্যপ্রবাহ আর ঘন কুয়াশায় লালমনিহাটের ৫ উপজেলায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মাঘ মাসের শুরু থেকেই শীতের তীব্রতা হু হু করে বাড়ছে। এই হাড় কাঁপানো শীতে তিস্তা তীরবর্তী এলাকার সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে।
মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) সকাল থেকে ঘন কুয়াশা আর শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করেছে। সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। তিস্তাপাড়ের শিশু বৃদ্ধ সকলেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। বেলা ১১টার পরও সূর্যের দেখা মেলেনি।
আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় লালমনিরহাটের তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সরেজমিনে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সাধুর বাজার, নিজ গড্ডিমারী, তালেবমোড়, দোয়ানী, ছয়আনী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ওই এলাকার খেটে খাওয়া মানুষ কাজকর্ম না পেয়ে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। গত ৪ দিনের টানা শৈত্যপ্রবাহে তিস্তাপাড়ের হতদরিদ্র মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কে বাস-ট্রাকগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। অনেক কৃষক পেটের তাগিদে কৃষিকাজে নেমে পড়েছেন।
লালমনিরহাটে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন ১৩টি নদ-নদী তীরবর্তী ৬৩টি চরের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বয়স্করা। হাঁপানি, অ্যাজমা, নিউমোনিয়া, হৃদরোগসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। গোবাদিপশুও রেহাই পাচ্ছে না শীতের প্রকোপ থেকে।
কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প অফিসার (পিআইও) ফেরদৌস আহম্মেদ জানান, এ পর্যন্ত হতদরিদ্র ও দুস্থ পরিবারের জন্য বরাদ্দকৃত ৫ হাজার ৬ শত ৪০ পিছ কম্বল ও হাতীবান্ধা উপজেলার জন্য প্রায় ৮ হাজার পিছ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, জেলার ৫টি উপজেলায় শীতার্ত মানুষের জন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে প্রায় ৫০ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। শীতবস্ত্রের চাহিদা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।