প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে দিশেহারা হয়ে পড়েছে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র আমেরিকা। এই ভাইরাসের কবলে পড়ে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে দেশটিতে। এখন পর্যন্ত সেখানে মারা গেছে ৩ লাখ ২ হাজার ৭৫০ জন। মোট আক্রন্ত হয়েছে ১ কোটি ৬২ লাখ ৯৫ হাজার ৪৫৮ জন।
এমতাবস্থায় প্রাণঘাতী এই ভাইরাস প্রতিরোধে ফাইজারের টিকার জরুরি অনুমোদন দিয়েছে আমেরিকা। তবে এ নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের চাপের মুখে পড়ে দেশটির খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ)। খবর বিবিসির।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার এফডিএ টিকার অনুমোদন দেয়। ফাইজারের সঙ্গে জার্মানির জৈব-প্রযুক্তি সংস্থা বায়োএনটেক টিকাটি আবিষ্কার করে।
আমেরিকায় ফাইজারের টিকাটি অনুমোদনের জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপের মুখে পড়ে এফডিএ।
শুক্রবারের মধ্যে টিকা অনুমোদন না দিলে সংস্থাটির প্রধান স্টিফেন হানকে পদত্যাগ করতে বলা হয়। যদিও বিষয়টি ‘সত্য নয়’ বলে মার্কিন গণমাধ্যমকে মন্তব্য করেন হান।
আগের দিন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একটি সরকারি প্যানেল এ টিকা অনুমোদন দিতে এফডিএ’কে সুপারিশ করে। এরপরই আর দেরি না করে অনুমোদন দিতে সংস্থাটির ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের চাপ বাড়তে থাকে।
টুইটারে এফডিএ প্রধান হানকে আক্রমণ করে বসেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘বুড়ো, ধীর গতির কচ্ছপ। এখনই টিকাটি নিয়ে আসো। তোমার খেলা বন্ধ করো এবং মানুষের জীবন বাঁচাও।’
ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, ফাইজারের টিকা অনুমোদন না করলে শুক্রবারে পদত্যাগপত্র জমা দিতে এফডিএ প্রধানের প্রতি নির্দেশ জারি করেন হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ মার্ক মিডোস। তিনটি সূত্র থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করে মার্কিন প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যমটি।
তবে হানের বক্তব্য, দ্রুত টিকা অনুমোদনের জন্য তাকে ‘উৎসাহিত’ করা হয়েছিল। গণমাধ্যমে বিষয়টি যেভাবে এসেছে সেটি ‘সত্য নয়’।
এরপরই করোনার প্রতিরোধে জরুরি ব্যবহারের জন্য এ টিকা অনুমোদন দিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করে এফডিএ।
এদিকে অনুমোদন পাওয়ার পরপরই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে টিকা কর্মসূচি শুরু করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
তবে দিনের শুরুতে মার্কিন স্বাস্থ্য মন্ত্রী আলেক্স আজার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, তার মন্ত্রণালয় আগামী সোম বা মঙ্গলবারের মধ্যে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করতে পারে।
করোনায় দেশটিতে এখন পর্যন্ত এক কোটি ৬২ লাখ ৯৫ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মৃতের সংখ্যা তিন লাখ ছাড়িয়ে গেছে।
ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্যে করোনা রোগীদের ফাইজারের টিকা প্রয়োগ শুরু হয়ে গেছে। এ ছাড়া কানাডা, বাহরাইন ও সৌদি আরব এ টিকার অনুমোদন দিয়েছে।