হেপাটাইটিস ‘সি’ ভাইরাস শনাক্ত করার স্বীকৃতি হিসেবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেলেন দুই মার্কিন ও এক ব্রিটিশ বিজ্ঞানী।
সোমবার (৫ অক্টোবর) সুইডেনে নোবেল অ্যাসেমব্লি অ্যাট ক্যারোলিনস্কা ইন্সটিটিউট তাদের নাম ঘোষণা করে।এবং নোবেল কমিটি তাদের তিনজনের কাজকে ‘যুগান্তকারী অর্জন’ বলে উল্লেখ করেছেন। পুরষ্কারপ্রাপ্ত তিনজন হলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভে জে অল্টার ও চার্লেস এম রাইচ।এবং যুক্তরাজ্যের মাইকেল হুটন
নোবেল কমিটি বলছে, এই তিন বিজ্ঞানীর যৌথ গবেষণার ফলে রক্তের নানা পরীক্ষা এবং নতুন ওষুধ আবিষ্কার সম্ভব হবে। তাঁদের গবেষণাকর্ম রক্তে জন্ম নেওয়া হেপাটাইটিসের অন্যতম উৎস ব্যাখ্যা করতে সহায়তা করবে।
হেপাটাইটিসের দুইটি ধরন রয়েছে। এর মধ্যে হেপাটাইটিস ‘এ’ দূষিত পানি ও খাবারের মাধ্যমে ছড়ায়। আর হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’ ছড়ায় রক্তের মাধ্যমে। রক্তের মাধ্যমে সৃষ্ট এ হেপাটাইটিস প্রায় সময়ই জটিল রোগ তৈরি করে। এর মধ্য দিয়ে লিভার ক্যান্সার বা লিভার সিরোসিস হতে পারে। প্রতি বছর ৭ কোটি মানুষ হেপাটাইটিস সি-তে আক্রান্ত হয়। মৃত্যু হয় ৪ লাখ মানুষের। বিজ্ঞান, সাহিত্য ও শান্তিতে বিশেষ অবদানের জন্য এই ছয়টি ক্যাটাগরিতে প্রতি বছর নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়ে থাকে। প্রতিবছর চিকিৎসাবিজ্ঞান ক্যাটাগরি দিয়ে জয়ীদের নাম ঘোষণা শুরু করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯০৫ সালে নোবেল পুরস্কার প্রদান শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত চিকিৎসা ক্ষেত্রে ১০৯ বার নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালে কোষ কীভাবে অক্সিজেনের উপস্থিতি অনুভব করে এবং সাড়া দেয়, তা নিয়ে গবেষণা করে নোবেল জিতেছিলেন লন্ডনের ফ্রান্সিস ক্রিক ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক স্যার পিটার র্যাাটক্লিফ এবং যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের উইলিয়াম ক্যালিন ও জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেগ সেমেন্জা।
২০১৮ সালে নেতিবাচক ইমিউন নিয়ন্ত্রণে বাধাদানের মাধ্যমে ক্যানসার থেরাপি আবিষ্কারের জন্য যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পান জেমস পি. অ্যালিসন ও তাসুকু হনজো। আর ২০১৭ সালের বায়োলজিক্যাল ক্লকসের মলিকিউলার মেকানিজমের আবিষ্কারের কারণে নোবেল পুরস্কার জেতেন বিজ্ঞানী জেফরি হল, মাইকেল রোশবাশ ও মাইকেল ইয়াং।
১৮৯৫ সালের নভেম্বর মাসে আলফ্রেড নোবেল নিজের মোট উপার্জনের ৯৪% সুইডিশ ক্রোনার দিয়ে তার উইলের মাধ্যমে নোবেল পুরস্কার প্রবর্তন করেন। এই বিপুল অর্থ দিয়েই শুরু হয় পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাবিজ্ঞান, সাহিত্য ও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রদান। ১৯৬৮-তে তালিকায় যুক্ত হয় অর্থনীতি। আইনসভার অনুমোদন শেষে তার উইল অনুযায়ী নোবেল ফাউন্ডেশন গঠিত হয়। বিজয়ী নির্বাচনের দায়িত্ব সুইডিশ একাডেমি আর নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটিকে ভাগ করে দেওয়া হয়।
দ্যা মেইল বিডি/খবর সব সময়