বৃহস্পতিবার, মে ২, ২০২৪

মেট্রোরেলের অগ্রগতি ৪৪.৬৭ ভাগ, গতি থামিয়েছে করোনা

যা যা মিস করেছেন

সড়কজুড়ে দৃশ্যমান হচ্ছে স্বপ্নের মেট্রোরেল। সব চ্যালেঞ্জ জয় করে প্রতিনিয়তই এগিয়ে যাচ্ছে নির্মাণ কাজ। এরইমধ্যে পাঁচ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট দৃশ্যমান হয়েছে। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে কাজে গতি নেই। আর সে কারণে নির্দিষ্ট সময় প্রকল্প শেষ নাও হতে পারে।

উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত উড়ালপথ ও স্টেশন নির্মাণের কাজ শেষ করার কথা ছিল ২০১৯ সালের জুনে। আর এই অংশটুকু ঢাকাবাসীর জন্য খুলে দেওয়ার পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে কর্তৃপক্ষ। সে কারণে এই ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার রুট চলতি বছরেও চালু হচ্ছে না।

মেট্রোরেল প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্র জানায়, বর্তমানে মেট্রোরেলের সার্বিক গড় অগ্রগতি ৪৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ। আর প্রথম পর্যায়ে নির্মাণের জন্য নির্ধারিত উত্তরা তৃতীয় পর্ব থেকে আগারগাঁও অংশের অগ্রগতি ৭২ দশমিক ১২ শতাংশ। এই অংশের কাজ শেষ হয়ে গেলে রেল ও বিদ্যুতের লাইন স্থাপন করা হবে। এরপর রেল ট্রায়াল পর্যায়ে থাকবে।

দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মাণের জন্য নির্ধারিত আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের পূর্ত কাজের অগ্রগতি ৩৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক সিস্টেম এবং রোলিং স্টক (রেলকোচ) ও ডিপো ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ কাজের সমন্বিত অগ্রগতি ২৯ দশমিক ৮০ শতাংশ।

তবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল বর্ধিত করার কাজের অগ্রগতি মাত্র ১ দশমিক ১৬ শতাংশ।
স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন বর্ষ ২০২১ সালের বিজয় দিবসে বাংলাদেশের প্রথম উড়াল মেট্রোরেলের সম্পূর্ণ অংশ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু করোনা সঙ্কটের কারণে প্রকল্পটি যথাসময়ে উদ্বোধন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বর্তমানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রকল্পের কাজ চললেও পুরোদমে চলছে না।

উত্তরা নর্থ থেকে আগারগাঁও:
মেট্রোরেলের উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশ প্যাকেজ-৩ ও প্যাকেজ-৪ এর আওতায়। দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। এই অংশে নয়টি স্টেশন নির্মাণ করা হবে। উভয় প্যাকেজের কাজ ২০১৭ সালের ১ আগস্ট শুরু হয়েছিল। ইতোমধ্যে পরিষেবা স্থানান্তর, চেকবোরিং, টেস্ট পাইল ও মূল পাইল সম্পন্ন হয়েছে। ৩৯৩টি পিয়ার হেডের মধ্যে ৩৮৯টির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটারের মধ্যে ১০ দশমিক ২৬ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট দৃশ্যমান হয়েছে। ৯টি স্টেশনের সাব কাঠামো হয়ে গেছে। উত্তরা সেন্টার ও উত্তরা দক্ষিণ স্টেশন নির্মাণ কাজ চলমান। মেট্রোরেল নির্মাণে স্বাভাবিক পানির প্রবাহ ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সেই বিবেচনায় পাঁচটি লং স্প্যান ব্যালেন্স কান্টিলিভারের মধ্যে দুটি সম্পন্ন হয়েছে। বাকি তিনটার কাজ চলমান। পিয়ার ৪৪ থেকে পিয়ার ১০২ পর্যন্ত প্রায় ৪ দশমিক ৯২ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট রেললাইন হয়েছে। এই প্যাকেজের সার্বিক অগ্রগতি ৭১ দশমিক ০৯ শতাংশ।

প্যাকেজ-৮ এর আওতায় রেলকোচ ও ডিপো ইকুইপমেন্ট সংগ্রহের কাজ এগিয়ে চলেছে। এ প্যাকেজের বাস্তব কাজ ২০১৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর শুরু হয়েছিল। বর্তমানে রোলিং স্টক (রেলকোচ) ও ডিপো ইকুইপমেন্ট সংগ্রহের আওতায় সম্পূর্ণ নকশা সম্পন্ন হয়েছে। জাপানে মেট্রোরেলের মেকআপ রিভিউ সম্পন্ন হয়েছে। বগি নির্মাণের কাজ চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি জাপানে শুরু হয়েছে। মেট্রো ট্রেনের মক আপ ২০১৯ সালের ২৬ ডিসেম্বর উত্তরা ডিপোতে পৌঁছেছে। ২০২০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি উত্তরা ডিপোর এক্সিবিশন সেন্টার এবং ইনফরমেশন সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। প্রথম মেট্রোট্রেন সেট জাপান নির্মাণ সম্পন্ন করেছে। জাপান এবং বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে প্রথম মেট্রোট্রেন বাংলাদেশে আসবে। আরো চারটি মেট্রোট্রেন সেটের নির্মাণ কাজ চলমান। এই প্যাকেজের বাস্তব অগ্রগতি ২৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড মেকানিক্যাল সিস্টেম:
প্যাকেজ-৭ এর আওতায় ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড মেকানিক্যাল সিস্টেম সরবরাহ ও নির্মাণ কাজ ২০১৮ সালের ১১ জুলাই শুরু হয়েছিল। এর আওতায় ডেভিনিটিভ নকশা সম্পন্ন হয়েছে। হাইভোল্টেজ ফিডার ক্যাবল স্থাপনের জন্য টেস্ট পিট খনন, উত্তরা রিসিভিং সাব স্টেশন (আরএসএস) নির্মাণ এবং টঙ্গি ও মানিকনগর গ্রিড সাবস্টেশন নির্মাণের কাজ চলছে। রেল ও ৩৩ কেভি ক্যাবল, ১৩২ কেভি ক্যাবল জাহাজিকরণ করা হয়েছে। ব্যালাস্টপ্রি শিপমেন্ট ইন্সপেকশন (পিএসআই) সম্পন্ন হয়েছে। বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম এবং রেল লাইন নির্মাণের মালামাল এখন প্রকল্প এলাকায়। ভায়াডাক্টে রেল লাইন বসানোর কাজ চলমান। ইতোমধ্যে ১ দশমিক ০৮ শতাংশ কিলোমিটার রেল লাইন বসানো হয়েছে। এই প্যাকেজের বাস্তব অগ্রগতি ৩৮ দশমিক ৫০ শতাংশ।

রাজধানীর যানজট নিরসন ও নগরবাসীর যাতায়াত আরামদায়ক, দ্রুততর ও নির্বিঘ্ন করতে ২০১২ সালে গৃহীত হয় মেট্রোরেল প্রকল্প। এ প্রকল্পের দৈর্ঘ্য হবে উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার। এ এলাকায় বসবাসকারী লাখো নগরবাসী মেট্রোরেল ব্যবহার করে গন্তব্যে যাতায়াত করতে পারবেন। প্রকল্পে ২৪ সেট ট্রেন চলাচল করবে। প্রত্যেকটি ট্রেনে থাকবে ছয়টি করে কোচ। ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে ছুটবে যাত্রী নিয়ে। উভয়দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন বহনে সক্ষমতা থাকবে মেট্রোরেলের। প্রকল্পের মোট ব্যয় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকার মধ্যে প্রকল্প সাহায্য হিসেবে জাপান সরকারের উন্নয়ন সংস্থা জাইকা ঋণ দিচ্ছে ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security