বৃহস্পতিবার, মে ২, ২০২৪

এবার মসজিদের ইমামের স্ত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ

যা যা মিস করেছেন

ঢাকার কেরানীগঞ্জে এবার মসজিদের ইমাম সাহেবের স্ত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে এক যুবলীগ নেতার তিন দেহরক্ষী ও তার ড্রাইভারের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার কলাতিয়া ইউনিয়নের জৈনপুর গ্রামে।

অভিযোগকারী জৈনপুর মসজিদের ঈমাম হাফেজ মো. কামরুল ইসলাম জানান, আমি জৈনপুর জামে মসজিদের ঈমামতি করি এবং কলাতিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের একজন স্থায়ী বাসিন্দা। আমার স্ত্রী একজন ডায়াবেটিসের রোগী।

গত ১৮ এপ্রিল রাত সাড়ে ৮টার দিকে আমার স্ত্রী প্রতিদিনের মতো এশার নামাজ শেষে বাসার সামনে হাটাহাটি করছিল। আমি ও আমার দুই ছেলে মসজিদে ছিলাম এশার নামাজের জন্য। ওই সময় ঢাকা জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারেকের গাড়ির ড্রাইভার রিপন (৩৬) মদ্যপ অবস্থায় বাড়ির সামনে থেকে আমার স্ত্রীকে জোর করে টেনে হিঁচড়ে পাশের একটি বিলে (চকে) নিয়ে যায়। তাকে সহযোগীতা করে আব্দুল বারেকের তিন দেহরক্ষী শেখ দিপু, আলামত ও মামুন বেপারী।

তারা আমার স্ত্রীকে খারাপ মেয়ে ভেবে বিলে নিয়ে শ্লীলতাহানি, মারধর ও গালিগালাজ করে। পরে আমার স্ত্রী পরিচয় দিলে তারা আমার বাসার পাশের বাসায় জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরে সে ঠিক বলেছে। এরপর ওরাই আমার স্ত্রীকে বাসায় নিয়ে এসে রেখে যায়। আমি বাড়িতে এসে ঘটনা জানার পর মসজিদের সভাপতি মো. নুরুজ্জামান খানকে জানাই।

পরে আমি ও সভাপতি আব্দুল বারেকের বাসায় গিয়ে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে বারেক সাহেব বলেন, বিষয়টা আপনি কারো কাছে বলবেন না আমি নিজেই এর বিচার করে দেব এবং ২৪ এপ্রিল বিচারের তারিখ দেয়। বারেক সাহেব তা না মেনে বিচারের সময়ের আগে ২৩ এপ্রিলই বিচার বসায়।

বারেক সাহেব একদিকে বিচার বসিয়ে অন্যদিকে পুলিশকে খবর দিয়ে বিচারে আসা সালিশগণদের ছত্রভঙ্গ করে বিচার বানচাল করে দেয়। এই চারজনের বিরুদ্ধে আগে অনেক মা-বোনের ইজ্জত নষ্ট করার অভিযোগ আছে কিন্তু ক্ষমতাবান হওয়ায় এদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে পারে না।

পরে আমি সুষ্ঠু বিচারের আশায় উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ, কলাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, কেরানীগঞ্জ প্রেস ক্লাব বরাবর আবেদন জানালাম। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। তারা যেন আর কোনো মা-বোনের শ্লীলতাহানি না করতে পারে সবার কাছে এই দাবি জানাই।

এ ব্যাপারে ঢাকা জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারেকের মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। এর সুষ্ঠু বিচার হওয়া দরকার তা আমিও চাই। মসজিদের ইমাম ও সভাপতি আমার কাছে ঘটনার দিন রাতে বিষয়টি অবগত করেন। তখন আমি সভাপতিকে বলি আপনি এলাকার মুরব্বি বিচারটি আপনি করেন। আমি করোনার জন্য বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ নিয়ে ব্যস্ত থাকি।

তখন তারা ২৪ এপ্রিল বিচার ডেকে ২৩ তারিখে বিচার বসায় মসজিদ কমিটি। আমি তখন সালিশগণদের আছরের নামাজ পরে আসতেছি বলে মসজিদে যাই। নামাজ পড়ে এসে দেখি বিচারস্থলে প্রায় পাঁচ শতাধিক লোকজন জড়ো হয়ে হট্টগোল করছে দেশের করোনা পরিস্থিতিতে এত লোক একসঙ্গে জড়ো হওয়ায় আমি কলাতিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে বিষয়টা জানাই। তারা এসে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

আমি ঘটনাটি শোনার পর নিজে তদন্ত করে দেখেছি ঘটনাটি সত্য এবং অভিযুক্ত রিপন অপরাধী। বাকী তিনজন সেখানে থেকে নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নিজেরাই বাড়িতে দিয়ে আসে। অভিযুক্ত রিপনের বিচার অবশ্যই হোক সেটা আমিও চাই।

এ ব্যাপারে কলাতিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. নয়ন মিয়া জানান, বৃহস্পতিবার আমাদের কাছে অভিযোগ আসে জৈনপুরে অনেক মানুষ জড়ো হচ্ছে। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা জড়ো হওয়া মানুষদের মাইকিং করে ছত্রভঙ্গ করে দেই।

এ ব্যাপারে কলাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান তাহের আলী বলেন, বিষয়টি খুবই ন্যাক্কারজনক। দেশের আলেম সমাজ ও মা-বোনেরা যদি এভাবে নাজেহাল হয় তাহলে আমরা আইএমএ যাহেলীর যুগে চলে যাব।

অভিযুক্ত চার যুবক প্রতিদিনই সন্ধ্যার পরে নেশা করে থাকে। তারা ক্ষমতাসীন দলের এক নেতার ছত্রছায়ায় থাকার কারণে কেউ মুখ খুলতে চায় না। আমরা যখন অভিযোগ পেয়েছি তা সুষ্ঠু তদন্ত করে এর কঠিন বিচার করব।

এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করলে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি কাজি মাইনুল ইসলাম পিপিএম বলেন, আমরা শুক্রবার বিকেলে অভিযোগ পেয়েছি, রাতের মধ্যেই মামলা হয়ে যাবে।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security