মঙ্গলবার, এপ্রিল ৩০, ২০২৪

করোনাভাইরাসে হার্টের রোগীদের করনীয়

যা যা মিস করেছেন

কোভিড-১৯ রোগ সৃষ্টিকারী নতুন করোনাভাইরাসটি বিশ্বজুড়ে তার ধ্বংসাত্মক বিস্তার অব্যাহত রেখেছে। বিশ্ব জানে না কবে এর থেকে মুক্তি মিলবে। ভাইরাসটি নতুন বলে প্রতিদিনই এর সম্পর্কে নতুন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

স্বাস্থ্য সচেতন মানুষেরা ইতোমধ্যে অবগত হয়েছেন যে, কোভিড-১৯ কিছু গ্রুপের মানুষের মধ্যে মারাত্মক পরিণতি তথা মৃত্যুর ঝুঁকি উর্ধ্বমুখী করে। তেমন একটি গ্রুপ হচ্ছে হার্টের রোগী। তারা জানতে চাচ্ছেন নতুন করোনাভাইরাসটিতে আক্রান্ত হলে সুস্থ থাকতে কি করা উচিত। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও চুপ নেই, তারা রোগীদের জীবন রক্ষা করতে যথাসম্ভব পরামর্শ দিয়ে চলেছেন।

এই মহামারিতে স্বাস্থ্যকে সুরক্ষিত রাখতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ। যাদের হার্টের সমস্যা রয়েছে তাদের বাড়তি সতর্কতা দরকার। এখন সংকটাপন্ন হার্ট নিয়ে জরুরি বিভাগে যাওয়ার সময় নয়। নতুন করোনাভাইসটির আক্রমণে বিশ্বের অনেক দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। তাই এ সময় জরুরি সেবা নিতে হাসপাতালে গিয়ে কতটা সেবা পাবেন অথবা আদৌ চিকিৎসা করতে পারবেন কিনা সন্দেহ থেকে যায়।

কিন্তু সঠিক সময়ে গুরুতর হার্টের চিকিৎসা করাতে না পারলে মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই চলমান মহামারিতে হার্টের জরুরি অবস্থা প্রতিরোধে রোগীদেরকে সচেতন থাকতে হবে। অতএব, কোভিড-১৯ জনিত মারাত্মক পরিণতির ঝুঁকি থেকে হার্টকে রক্ষা করতে করণীয় সম্পর্কে জেনে রাখা জরুরি।

এসিই ইনহিবিটর অথবা এআরবি অব্যাহত রাখা যাবে?

লিসিনোপ্রিল ও বেনাজেপ্রিলের মতো এসিই ইনহিবিটর এবং লোসারটান ও ভালসারটানের মতো এআরবি হচ্ছে উচ্চ রক্তচাপ ও অকার্যকর হার্টের চিকিৎসায় ব্যবহৃত প্রচলিত ওষুধ। কোভিড-১৯ মহামারির প্রথমদিকে ধারণা করা হয়েছিল যে, এসব ওষুধ নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণে মারাত্মক পরিণতিতে ভোগাতে পারে। কিন্তু কমপক্ষে ১০টি আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণে এসিই ইনহিবিটর ও এআরবি মারাত্মক পরিণতি সৃষ্টি করে এমন কোনো প্রমাণ নেই। সংস্থাগুলোর সুপারিশ হচ্ছে, কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হলেও হার্টের রোগীদের এসব ওষুধ চালিয়ে যাওয়া উচিত। প্রকৃতপক্ষে, চলমান গবেষণা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণে মারাত্মক অসুস্থ রোগীদের ক্ষেত্রে এসিই ইনহিবিটর ও এআরবি সহায়ক হতে পারে।

গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হচ্ছে, বিশেষজ্ঞদের কাছে নিশ্চিত প্রমাণ নেই যে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত অবস্থায় এসব ওষুধ সেবন করলে মারাত্মক পরিণতির ঝুঁকি বাড়ে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব ওষুধ বন্ধ করে দিলে রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে, স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেড়ে যায় অথবা হার্ট ফেইলিউর হতে পারে। কাজেই এসব ওষুধ বন্ধ করে জরুরি স্বাস্থ্য সমস্যার সম্ভাবনা বাড়াতে যাবেন না।

স্টাটিন চালু রাখা যাবে?

স্টাটিন হচ্ছে কোলেস্টেরল কমানোর ওষুধ। এমন কোনো প্রমাণ নেই যে ভাইরাস জনিত রোগে স্টাটিন ব্যবহার করলে স্বাস্থ্যের অবস্থা আরো খারাপ হয়। প্রকৃতপক্ষে, কিছু প্রমাণ পাওয়া গেছে যে ভাইরাস জনিত অসুস্থতায় স্টাটিন চালু রাখলে হার্টের সমস্যা হ্রাস পেতে পারে। এছাড়া কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, স্টাটিন বন্ধ করে দেয়ার পর হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়েছে। আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজির ফেলো আর. টড হার্স্টের জোরালো পরামর্শ হচ্ছে, নতুন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হলেও স্টাটিন ব্যবহার করে যেতে হবে। এ সময় সংক্রমণ গোপন রেখে কোলেস্টেরলের মাত্রা চেক করতে ল্যাব টেস্ট করাবেন না, কারণ এতে অন্যরাও কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হতে পারেন।

নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণে হার্টের রোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রোগীদের তীব্র অসুস্থতা ও মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি কেন?

এসবের পেছনে প্রকৃত কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। কিন্তু কিছু গবেষণার উপাত্ত থেকে আমরা এই বিষয়ে বেশ ভালো ধারণা পেতে পারি যে, কেন হার্টের রোগ থাকলে কোভিড-১৯ সংক্রমণে মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি হয়। কোভিড-১৯ রোগীদের সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন যে হার্টের রোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রোগে মারাত্মক জটিলতা অথবা মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি। প্রায় ২০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ এর সঙ্গে হার্টের প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এসব রোগীদের মধ্যে হার্টের প্রদাহ, হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেইলিউর ও সংকটজনক হৃদস্পন্দন লক্ষ্য করা গেছে। সারকথা হলো- হার্টের রোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রোগীদের নতুন করোনাভাইস সংক্রমণে মৃত্যুর উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে বলে রোগটি প্রতিরোধের নীতিমালা কঠোরভাবে অনুসরণ করা উচিত। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখুন, হাত ধোয়ার চর্চা করুন ও হার্টের ওষুধ সেবন করুন। ভালো থাকুন, বেশিদিন বাঁচুন।

তথ্যসূত্র: ওয়েব এমডি

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security