মঙ্গলবার, মে ৭, ২০২৪

অবহেলার কারনে সংক্রমণ শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র

যা যা মিস করেছেন

চোখের সামনেই দুরন্তগতিতে ছড়িয়ে পড়ছিল করোনাভাইরাসের মহামারী। বারবার করে হুশিয়ারি দিয়েছিলেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও।

বিশ্লেষকরা বলছেন, রাষ্ট্রের শীর্ষ নেতৃত্বের অদূরদর্শিতা ও সরকার-প্রশাসনের অবহেলাই কাল হল মার্কিন মুল্লুকের জন্য। থোড়াই কেয়ার করায় ভাইরাসটির থাবায় এখন জেরবার অবস্থা। দুই মাসের মধ্যে করোনা সংক্রমণে বিশ্বের শীর্ষে পৌঁছে গেছে অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তিধর দেশটি।

এএফপির রিপোর্ট মতে, যুক্তরাষ্ট্রে করোনার প্রথম রোগী ধরা পড়ে জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এর বিস্ফোরণ ঘটেছে। ছড়াচ্ছে বুলেটের গতিতে। ৬০ দিনের ব্যবধানে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যায় বিশ্বের সবদেশেকে ছাড়িয়ে গিয়েছে দেশটি।

যুক্তরাষ্ট্রই প্রথম দেশ যেখানে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৪ হাজার ২৫৬ জন। মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে হু হু করে। মারা গেছে ১ হাজার ৭০৪ জন। মৃত্যুহার এখনও ইতালি ও ইউরোপের কয়েকটি দেশের চেয়ে কম।

তবে শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি কেমন হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না, বলছেন বিশ্লেষকরা। আক্রান্তের হার ও রোগের উপশম দেখে তারা বলছেন, মৃত্যুর মিছিলেও তারা খুব দ্রুতই সবাইকে ছাড়িয়ে যাবে। প্রশ্ন উঠছে, শিক্ষায়, স্বাস্থ্য ও জীবনমানে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত একটি দেশে এই পরিস্থিতি কেন হল? এর জবাবে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমেরিকায় করোনা বিস্ফোরণের পেছনে বেশ কয়েকটি সুনির্দিষ্ট কারণ রয়েছে।

প্রথম দিকে করোনাকে আমলে নেননি ট্রাম্প। বিপরীতে এর ভয়াবহতা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের হুশিয়ারিকে খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। শীর্ষ নেতৃত্বে এই উদাসীনতায় গা ছাড়া ভাব দেখা যায় সরকার ও প্রশাসনের মধ্যেও।

রাষ্ট্রীয় রোগনিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ বিভাগ সেন্টার্স ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশ (সিডিসি) ভাইরাসকে যথাযথ গুরুত্ব দেয়নি। মহামারী রুখতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে সে বিষয়ে স্থানীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে দিকনির্দেশনা দেয়ার ক্ষেত্রে লেজেগোবরে করে ফেলে তারা।

করোনা প্রথমে ওয়াশিংটন ও ক্যালিফোর্নিয়ার মতো উপকূলীয় রাজ্যগুলোয় শিকড় গাড়তে শুরু করে। কিন্তু ভাইরাস প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর কৌশল ‘কনট্যাক্ট ট্রেসিং’ পরিচালনায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।

সংক্রমণ ঠেকাতে বেশি বেশি টেস্ট করার তাগিদ আসছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। কিন্তু এক্ষেত্রেও বড় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে প্রশাসন। ডব্লিউএইচওর নির্দেশনা মেনে নিজেরাই টেস্টিং কিট উৎপাদন করতে চাইলেও রাজ্য ও স্থানীয় স্বাস্থ্যবিভাগকে সেই সময়মতো অনুমোদন দেয়নি সিডিসি।

সন্দেহজনক রোগীদের পরীক্ষা করতে নমুনা পাঠানো হচ্ছিল আটলান্টায় সিডিসির প্রধান কার্যালয়ে। প্রায় এক মাস সময়ক্ষেপণের পর রাজ্যগুলোতে শেষ পর্যন্ত টেস্টিং কিট পাঠালেও তা ছিল ত্রুটিপূর্ণ; ঠিকমতো কাজ করেনি।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইনভেস্টিগেটিভ সাংবাদিকদের সংগঠন প্রপাপলিকা কয়েকশ’ পৃষ্ঠার ডকুমেন্ট প্রকাশ করেছে। যেখানে উঠে এসেছে করোনাভাইরাস নিয়ে দেশটির শীর্ষ পাবলিক হেলথ এজেন্সি সিডিসির এই তাচ্ছিল্যের চিত্র।

অবহেলার পাশাপাশি রয়েছে সমন্বয়হীনতা। জাতীয়ভাবে করোনা মোকাবেলায় কোনো পরিকল্পনাই নেই সরকারের। ওয়াশিংটন, ক্যালিফোর্নিয়া ও নিউইয়র্কের পর এখন অন্য রাজ্যগুলোর দিকে এগিয়ে চলেছে মহামারী।

কিন্তু এখনও পুরো দেশ লকডাউন করা হয়নি। দেশের ৪০ শতাংশ অঞ্চলই এখনও কার্যত উন্মুক্ত। ফলে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে এসব অঞ্চল।

 

সূত্র: যুগান্তর

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security