৮ জুলাই রবিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় উদ্ধারকারীদের একটি দল গুহার ভেতরে রওনা দিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন উদ্ধার অভিযানের প্রধান কমান্ডার নারোংসাক ওসোটানাকোর্ন। তিনি জানিয়েছেন, ছেলেদের মনোবল শক্ত আছে, তারা যেকোন চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত। ওই কিশোররা বাইরে বেরিয়ে আসতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলেও জানিয়েছেন তিনি। কিশোরদের কাছে পৌঁছানোর জন্য ডুবুরিদের সঠিকভাবে এ সংকীর্ণ গুহাটি পাড়ি দিতে হবে। প্রতিজন কিশোরের সঙ্গে দুজন করে ডুবুরি থাকবেন। পুরো গুহার বিভিন্ন জায়গায় বাড়তি অক্সিজেন ট্যাংক স্থাপন করা হয়েছে, যাতে কোনোভাবেই যাত্রাপথে অক্সিজেন সংকটে পড়তে না হয়।
বিবিসির একজন প্রতিবেদক জানিয়েছেন, ১৫ দিন ধরে গুহায় আটকে থাকা কিশোরদের নিয়ে ফেরার পথে গুহার একটি জায়গায় কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়া হবে। পরে সেখান থেকে শেষ দফা যাত্রায় তাদের বাইরে বের করে আনা হবে। বাইরে আনার পর সোজা হাসপাতালে পাঠানো হবে কিশোরদের।
একদিন আগে শনিবার নারোংসাক ওসাতানাকর্ন জানিয়েছিলেন, অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়া এবং ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে গুহার ভেতরে তাদের আর বেশি দিন টিকে থাকা সম্ভব হবে না। সর্বোচ্চ তিন থেকে চারদিন সময় পাওয়া যাবে। এর মধ্যেই কিশোরদের বের করে আনতে হবে। তবে বর্তমানে যে অবস্থা বিরাজ করছে, তা কিশোরদের উদ্ধারের জন্য আদর্শ বলে জানিয়েছেন তিনি। নারোংসাক ওসাতানাকর্ন বলেন, ‘আমাদের প্রধান বাধা দুটি- পানি এবং সময়। সেই প্রথম দিন থেকেই আমরা এ দুটির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যাচ্ছি। আমাদের সম্ভব সবকিছু করতে হবে। যদিও প্রকৃতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করাটা কঠিন। কিশোরদের নিরাপদে উদ্ধারের জন্য সঠিক সময়ের ও সুযোগের দরকার ছিল। আমরা সবাই এ সময়টার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম।’
আটকে পড়া কিশোরদের ও তাদের পরিবারকে উদ্ধার অভিযানের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানানো হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আজ থাইল্যান্ড স্থানীয় সময় রাত ৯টা নাগাদ প্রথম কিশোরকে বের করে আনা হতে পারে। কতজনকে আজ বের করা হবে, সেটা জানা না গেলেও উদ্ধারকারীরা বলছেন, যারা ‘শতভাগ প্রস্তুত’ তাদেরকেই আজ বের করা হবে। সেক্ষেত্রে আজকে চারজনকে বের করা হতে পারে। ইতোমধ্যেই উদ্ধার অভিযানস্থল থেকে চিকিৎসক, উদ্ধারকারী ও নিরাপত্তারক্ষাকারী সদস্য ছাড়া বাকি সবাইকে বের করে দেওয়া হয়েছে। চূড়ান্ত অভিযান ঘোষণা করার পর থাই নেভি সিলের ফেসবুক পেজে একটি ছবি পোস্ট করা হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে উদ্ধারকারীরা একে অপরের হাত ধরে আছেন।
গুহার প্রবেশমুখে নতুন একটি সাদা পতাকা ওড়ানো হয়েছে। ইতিবাচকতা প্রদর্শন করতে এটি একটি বৌদ্ধ চিহ্ন। পুরো থাইল্যান্ড ও বিশ্বব্যাপী অসংখ্য মানুষ এ উদ্ধার অভিযানের সফলতা কামনা করছেন।