বরাবরের মতো এবারেও রমনার বটমূলে বাঁশিতে ভোরের রাগালাপ দিয়ে ভোর সোয়া ছয়টায় শুরু হলো ছায়ানট আয়োজিত বর্ষবরণের ৫১তম আয়োজন।
বাংলা ১৪২৫ সন বরণ আয়োজনে সম্মেলকের গাইয়েসহ দেড়শতাধিক শিল্পীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠান চলবে প্রায় দুই ঘণ্টা। ১৬টি একক গান, ১২টি সম্মেলক গান, ২টি আবৃত্তি দিয়ে সাজানো অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হবে ছায়ানট-সভাপতি সন্জীদা খাতুনের শুভেচ্ছা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে।
দেশময় সকল কর্মকাণ্ডের মূল চালিকাশক্তি হলেও গতিময় বিশ্বায়নে তরুণরা আজ অনেকাংশে শিকড় বিচ্ছিন্ন। মুক্তিযুদ্ধ করে বাঙালি দেশ আদায় করেছে। তবু ষোল আনা বাঙালি হতে পারছে না। ছায়ানট মনে করে বিশ্বমানব হবার আগে চাই শাশ্বত বাঙালি হবার প্রত্যয়। নতুন বাংলা বছরে তাই এবারের বিষয় ‘‘বিশ্বায়নের বাস্তবতায় শিকড়ের সন্ধান’’।
অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার। সরাসরি সম্প্রচারে আগ্রহী বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোকে বিটিভির সম্প্রচারিত অনুষ্ঠান ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। পুরো অনুষ্ঠান সরাসরি দেখা যাবে ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেলে।
ছায়ানটের শিল্পী-কর্মীদের জন্য বটমূল সংলগ্ন সামান্য জায়গা ছাড়া গোটা অঙ্গনই থাকছে সকলের জন্য উন্মুক্ত। বটমূলের বর্ষবরণ আয়োজন সুষ্ঠু রাখতে সার্বক্ষণিক সহায়তা দিচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানি আমলের বৈরী পরিবেশে ১৯৬১ সালে রবীন্দ্রজন্মশতবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে ছায়ানটের যে যাত্রার সূচনা তা মূলত বাঙালির আপনসত্তাকে জাগিয়ে তুলবার, আপন সংস্কৃতিতে বাঁচবার অধিকার ও বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা করবার জন্য। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনার উন্মেষ ঘটাবার জন্য ১৯৬৭ সালে রমনার বটমূলে শুরু হয় বাংলাবছরকে আবাহনের আয়োজন।