সোমবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৪

শর্ত না মানা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে মন্ত্রীর হুঁশিয়ারি

যা যা মিস করেছেন

বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির সমাবর্তনে তিনি বলেন, “কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এখনও তাদের ন্যূনতম শর্ত পূরণ করতে পারে নাই। এভাবে আপনারা আর বেশিদিন চলতে পারবেন না।”

যেসব বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার পরিবেশ তৈরি না করে মুনাফার লক্ষ্য নিয়ে চলতে চায়, নানাভাবে চাপ দিয়েও তাদের শর্ত মানতে আগ্রহী করা যায়নি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “এখন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নাই।”

আচার্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের প্রতিনিধি হিসেবে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির দ্বিতীয় সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ।

বিইউ এর শিক্ষার মান নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, প্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল এ বিশ্ববিদ্যালয় হবে ভবিষ্যতে সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য মডেল। শুধু উচ্চশিক্ষা নয় এ বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণায়ও অসামান্য অবদান রাখছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ মানব সম্পদ তৈরি করছে।

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, আমরা সরকারি বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকারী ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে কোনো পার্থক্য করি না। তারা সবাই আমাদের সন্তান এবং জাতির ভবিষ্যৎ। তাদের সবার জন্যই আমরা মানসম্মত শিক্ষা এবং সুযোগ নিশ্চিত করতে চাই।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে যারা ভাল করছেন, দেশের জন্য কাজ করছেন, তারা অবশ্যই অনুকরণীয় হবেন এবং সরকার তাদের সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাবে। শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ। যা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে দেশকে গড়েতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে চাই। কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে যারা এখনও তাদের ন্যূনতম শর্ত পূরণ করতে পারেনি। এভাবে তারা বেশি দিন চলতে পারবে না। যারা মুনাফার লক্ষ্য নিয়ে চলতে চান, নিজস্ব ক্যাম্পাসে যাননি, একাধিক ক্যাম্পাস পরিচালনা করছেন তাদের অব্যাহত চাপে রেখেও সঠিক পথে আনা কঠিন হয়ে পড়েছে। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক উচ্চশিক্ষা ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন যুগান্তকারী পদক্ষেপ এর উল্লেখ করে বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ আর স্বপ্ন নয় বাস্তব, যার প্রমাণ আজকে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির সমাবর্তন। শিক্ষার্থীরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করবে, তোমাদের দিকে জাতি তাকিয়ে রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী একটি লক্ষ্যহীন জাতিকে দিশা দিয়েছেন। তিনি কারও কাছে মাথা নত করেন না। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন প্রত্যাখ্যান করে পদ্মাসেতুর মতো বড় প্রকল্প নিজেদের অর্থায়নে করার সাহস দেখিয়েছেন।

বিইউ এর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান কাজী জামিল আজহার তার বক্তব্যে স্বল্প ব্যয়ে বিজ্ঞান ভিত্তিক প্রযুক্তি নির্ভর উচ্চশিক্ষা বিস্তারে ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে বিইউ অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি দারিদ্র, ক্ষুধামুক্ত ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে গ্রাজুয়েটদের প্রতি ভূমিকা রাখার আহবান জানান।

সনদপ্রাপ্তদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, অনেক অধ্যবসায়, পরিশ্রম আর সাধনার ফসল আজকের এ ডিগ্রি। তোমাদের মাধ্যমে দেশ স্বপ্ন দেখবে। তোমরা দেশকে স্বপ্ন দেখাবে এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের দায়িত্ব তোমাদেরই। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি শুধু পুঁথিগত শিক্ষা প্রদানে বিশ্বাসী না। এ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা শিক্ষার পাশাপাশি ক্রীড়া ক্ষেত্রে সাফল্য এনে দিয়েছেন। তারা নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমরা থ্রিডি ল্যাব স্থাপন করেছি। প্রযুক্তি নির্ভর, আধুনিক এ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার জন্য দেশের প্রথম আরবান ল্যাব প্রতিষ্ঠা করেছে। ইতোমধ্যে এ ল্যাব ‘নগর অ্যাপ’ ‘ই-হার্ট’ অ্যাপসহ বেশ কিছু অ্যাপস তৈরি করেছে। শহরের বায়ূতে কি পরিমাণ ধুলাবালি ও রোগ সংক্রমণ হচ্ছে, দূষণের মাত্রা কত, এর ফলে কি কি রোগ হয় তা নিয়ে গবেষণা করে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে এ ল্যাব। এছাড়া সম্প্রতি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ইনোভেশন ল্যাব। এ ল্যাবের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা বেশ কিছু গবেষণাকর্ম নিয়ে কাজ করছে।

সমাবর্তন অনুষ্ঠানের বক্তা প্রফেসর এমিরিটাস ও একুশে পদকপ্রাপ্ত ড. আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজউদ্দিন ইউনিভার্সিটি স্বাধীনভাবে যাতে কাজ করতে পারে তার উপর গুরুত্বারোপ করেন ও জাতি গঠনে গ্রাজুয়েটদের দায়িত্ব নেওয়ার আহবান জানান।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন, বিইউ এর ভিসি প্রফেসর ড. আনোয়ারুল হক শরীফ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ইঞ্জিনিয়ার এম এ গোলাম দস্তগীর, সেক্রেটারি, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি।

২০০৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বিইউ এর প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম সমাবর্তনে ১ হাজার ২২৫ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এবারের ২য় সমাবর্তনে ১০ বিভাগে ৪৮০৪ হাজার জনকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি দেওয়া হয়। এরমধ্যে ৩৫১০ জন স্নাতক ও ১২৯৪ জনকে স্নাতকোত্তর সনদ নেন। তাদের মধ্যে ১ জনকে আচার্যের স্বর্ণপদক, ১ জনকে বিইউ এর প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রথম উপাচার্য কাজী আজহার আলী স্বর্ণপদক এবং ১ জন বিদেশি শিক্ষার্থীসহ ৪ জনকে উপাচার্য স্বর্ণপদক দেওয়া হয়। এছাড়া বিভিন্ন বিভাগে ভালো ফলাফল অর্জন করায় ১৩ জনকে ডীনস্ পদক দেওয়া হয়।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security