অপেক্ষার সময় বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে; উন্নয়নের বিড়ম্বনা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। অবশেষে উদ্বোধনের পর পুরোপুরি খুলে দেওয়া হয়েছে রাজধানীর মৌচাক-মগবাজার ফ্লাইওভার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার দুপুরে গণভবন থেকে এ ফ্লাইওভারের উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, এই ফ্লাইওভার যানজট কমিয়ে মানুষের সময় বাঁচাবে; কর্মচাঞ্চল্যও বাড়বে।
মৌচাক মোড়ে প্যান্ডেল তৈরি করে ডিজিটাল বোর্ডের মাধ্যমে এ ফ্লাইওভারের উদ্বোধন দেখানো হয়েছে। গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। আর মৌচাকে উপস্থিত ছিলেন পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপারেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্যানেল মেয়র মো. ওসমান গণিসহ আওয়ামী লীগের নেতা ও দুই সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা।
ফ্লাইওভার উদ্বোধনের আগে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির জনক স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। তিনি দেশ পরিচালনার জন্য মাত্র সাড়ে তিন বছর পেয়েছেন। এরপর ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। দেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যায়। সারা বাংলাদেশে আমরা যে উন্নয়নমূলক কাজ শুরু করেছিলাম তা বন্ধ করে দেওয়া হয় ২০০১ সালে। দেশকে অরাজকতার দিকে নিয়ে যায়। সাতটা বছর দেশের উন্নয়ন একবারে থেমে গিয়েছিল। ফের আমরা ক্ষমতায় এসে উন্নয়ন কাজ শুরু করি। এখন মানুষের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা এসেছে। আর্থিক স্বচ্ছলতা বাড়ছে বলে গাড়ির সংখ্যাও বাড়ছে। এটা অর্থনৈতিক উন্নয়নেরও সূচক।’
বিভিন্ন ফ্লাইওভার ও সড়ক যোগাযোগ উন্নয়ন প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে। এতে কিন্তু জ্যামও বাড়ছে। এ কারণেই জনগণের জন্য ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হচ্ছে। মগবাজার মৌচাক ফ্লাইওভার যানজট নিরসনে অনেক বড় ভূমিকা রাখবে। মানুষ দ্রুত কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারবে। কর্মচঞ্চলতা বাড়বে। এই ফ্লাইওভার নির্মাণের সময় আমি খেয়াল রেখেছি, কয়েকবার ডিজাইন চেঞ্জ করেছি। যাই ব্যবহার করবেন যত্ন করে করবেন, ট্রাফিক আইন মানবেন। এগুলো জনগণের দায়িত্ব ও কর্তব্য।’
উদ্বোধন অনুষ্ঠান চলাকালে মৌচাক থেকে মগবাজার রেলগেট পর্যন্ত রাস্তা বন্ধ রাখা হয়। ফলে ওই এলাকার অন্যান্য রাস্তায় যানজট সৃষ্টির আশঙ্কা থাকায় বিকল্প সড়ক ব্যবহারের অনুরোধ জানান ডিএসসিসি মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।.
২০১২ সালের ১৮ নভেম্বর শুরু হওয়া ফ্লাইওভারটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৪ সালের নভেম্বরে। তবে নকশায় ত্রুটি, সঠিক নকশা পেতে দেরি, ড্রয়িং-ডিজাইনসহ বিভিন্ন জটিলতায় বেশ কয়েকবার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ তিন তলাবিশিষ্ট চার লেনের এই ফ্লাইওভারটি ১০ মাত্রার ভূমিকম্প সহনশীল। এর প্রতিটি পিলার ১৫০ মিটার গভীর পর্যন্ত করা হয়েছে। এর নিচে বিভিন্ন জায়গায় আটটি বড় মোড় ও তিনটি রেলক্রসিং রয়েছে। ১২১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে।