আবহমানকাল ধরে গ্রাম-বাংলার নানা উৎসব-পার্বণে চিত্ত বিনোদনের খোরাক জোগাতো লাঠি খেলা। বাঙালির ঐতিহ্যবাহী এ খেলাটি টিকিয়ে রাখতে বাংলাদেশ লাঠিয়াল বাহিনী কেন্দ্রীয় দপ্তরের উদ্যোগে কুষ্টিয়ায় শুরু হয়েছে দুইদিন ব্যাপী লাঠি খেলা উৎসব।
শরীরে বিশেষ পোশাক আর হাতে লাঠি। ঘুরছে শাঁই-শাঁই। ঢোলক, ঝুমঝুমি, কাড়া এসব বাদ্যযন্ত্রের তালে চলছে নাচ। লাঠি দিয়ে চলছে সড়কি, ফড়ে, ডাকাত ডাকাত, বানুটি, বাওই জাক, নড়ি-বাড়িসহ নানা নামীয় কৌশলের খেলা। খেলোয়াড়রা নিজ নিজ লাঠি দিয়ে রণকৌশল প্রদর্শন করে।
কুষ্টিয়া সরকারী কলেজ মাঠে ছিল এর মূল আয়োজন। শনিবার বেলা ৩টায় কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. জহির রায়হান আনুষ্ঠানিকভাবে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়নুল আবদিন, প্রবীণ সাংবাদিক ওয়ালিউল বারী চৌধুরীসহ সরকারী কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ লাঠিয়াল বাহিনীর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
খেলোয়াড় মিন্টু সর্দার বলেন, এই খেলাটি ক্ষমতা ও শৌর্যের প্রতীক। নিয়মিত চর্চার পাশাপাশি এক সময় খেলাটি বর্ষবরণ, পূজা-পার্বণসহ নানা উৎসবে বড় পরিসরে আয়োজন করা হতো। অথচ কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে এই লাঠি খেলা।
শনিবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া দুইদিনের এই লাঠি উৎসব শেষ হচ্ছে আজ বিকালেই। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ও সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগই ঐতিহ্যবাহী খেলাটি টিকিয়ে রাখতে পারে, জানালেন লাঠিয়াল বাহিনী কেন্দ্রীয় দপ্তরের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল¬াহ আল মামুন তাজু।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে মাঠে নামেন লাঠিয়ালরা। তারা কখনও ঢোল আর কাঁশরের তালে তালে নেচে নেচে তাদের কসরত দেখান, আবার কখনও প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে লাঠি চালান। প্রতিপক্ষ লাঠিয়াল সেই আঘাত ঠেকিয়ে প্রতিঘাত করতে সদা প্রস্তুত বেতের তৈরী ঢাল আর লাঠি নিয়ে। আবার কেউ কেউ বন বন করে লাঠিয়ে ঘুরিয়ে দর্শকদের মন কাড়েন।