রতন থিয়াম! স্বাভাবিকভাবেই বলা যায় আমরা মোটামুটি কেউই নামটি তেমন শুনিনি। এর কারণও আছে, কিছু মানুষ হয়ই এরকম, জনপ্রিয়তা যাদের কাছে কোন মানে রাখে না। তারা চায় তাদের কাজের মাধ্যমে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিতে, পৃথিবীটা কে নতুন কিছু উপহার দিতে। রতন থিয়াম তাদের মধ্যেই একজন।
রতন থিয়াম বা থিয়াম নিমাই যাই বলুন না কেন তিনি হলেন থিয়েটার জগতের একটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম। যে নক্ষত্রটি জ্বলছে নিজের দ্যুতিতে এবং অন্যদেরও আলো দিয়ে যাচ্ছে। তিনি একাধারে নাট্যকার, পরিচালক, চিত্রশিল্পী, নৃত্য ও সূর নির্দেশক এবং ভারতীয় থিয়েটারের ‘থিয়েটার অফ রুট’ আন্দলনের অগ্রপথিক।
থিয়াম দিল্লীর ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামা থেকে পাশ করে আর সেখানে থাকেনি, কারণ তার মনে ছিল অন্য কিছু। তিনি চলে যান তার মাতৃভূমি মণিপুরে। তার চেষ্টাই ছিল আধুনিক ড্রামা এবং আদিবাসী সংস্কৃতিকে একত্রিত করা। এবং সেখানে তিনি একটি দল গঠন করেন যার নাম ‘কোরাস রেপারটারি থিয়েটার’ (১৯৭৬)।
মানুষের স্বপ্নই মানুষকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়। তার চেষ্টা এবং মনের ইচ্ছায় তিনি এবং তার দল আধুনিক ড্রামা আর আদিবাসী সংস্কৃতির সংমিশ্রণে থিয়েটারকে নিয়ে গেছেন একটি ভিন্ন মাত্রায়। তাদের নাটক ‘চক্রভিউ’ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১০০ এর বেশি বার মঞ্চায়ন হয়েছে। কোরাস রেপারটারি থিয়েটারের আরেকটি তাক লাগানো নাটক ‘উত্তরপ্রিয়দর্শী’।
রতন থিয়াম মণিপুরে স্থাপন করেছেন ‘থিয়েটার ভিলেজ’। যে প্রাসাদসম স্থাপনা তিনি থিয়েটারের জন্য বানিয়েছেন তার ডিজাইনটিও তার নিজের করা। সেখানে গিয়ে অবাক না হয়ে পাড়া যায় না। সেখানে ২০০ একর জমির উপর রয়েছে অডিটরিয়াম, কর্মকর্তা এবং শিক্ষার্থীদের থাকার জন্য কোয়ার্টার।
তিনি বর্তমানে ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামার পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার জীবনের অনেক অর্জনের মধ্যে কিছু হল ১৯৮৭ সালে সঙ্গিত নাটক একাডেমী এ্যাওয়ার্ড। ১৯৮৯ সালে ভারতের সর্বচ্চো সম্মান ‘পদ্ম শ্রী’।