মুসা বিন শমসের বা প্রিন্স মুসা যাই বলুন না কেন নামটি শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে ফাইভ স্টার মানের চলাফেরার স্টাইল, বসার স্টাইল-আয়োজন সবকিছুই এজন্য তার পরিবারকে মজা করে ‘ফাইভ স্টার ফ্যামিলি’ও বলে থাকেন কেউ কেউ। রাজধানীর অভিজাত গুলশান এলাকার যে বাড়িতে থাকেন তাকে প্রাসাদের সঙ্গেই তুলনা করা যায়।
শোনা যায় মুসার পরিহিত জুতাজোড়াও হীরকখচিত। তার প্রতি জোড়া জুতার মূল্য ১ লাখ ডলার। তার সংগ্রহে রয়েছে রত্নখচিত হাজারো জুতা। তার পরনের কয়েকটি স্যুট স্বর্ণসুতাখচিত। ভারতীয় দৈনিক দ্য হিন্দুতে এ নিয়ে একটি প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, তিনি প্রতিদিন স্নান করেন নির্জলা গোলাপ জলে। তার হাতের সবচেয়ে মূল্যবান ঘড়ির ডায়াল এবং ব্রেসলেটও হীরক খচিত। যার মূল্য অর্ধ মিলিয়ন ডলার এবং তার সবচেয়ে মূল্যবান ঘড়ির বেল্ট, কাফলিঙ্ক-এর সেটের মূল্য ১.১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এত টাকার মালিক প্রিন্স মুসা আজ (বৃহস্পতিবার) এসেছেন দুদকে হাজিরা দিতে। তার এখানে আসাটাও আলোর ঝলকানির মত।
সকাল ১১টার দিকে বিলাসবহুল গাড়িবহর নিয়ে রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদকের কার্যালয়ে আসেন। সামনে পেছনে ছিল আরো পাঁচটি গাড়ি, মোট ৩০ জন নিরাপত্তারক্ষী। যার মধ্যে ছয়জন নারী। নিরাপত্তারক্ষীদের সবাই সাদা শার্ট, লাল টাই, কালো স্যুট-প্যান্টে।
তার ধামাকা আগমনে কিছুক্ষণের জন্য বেশ শোরগোল পড়ে দুদকের কার্যালয়ের সামনে। ভিড় করেন উৎসুক জনতাও। দুদকের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়েছে। ভেতরে প্রবেশে নেয়া হচ্ছে তল্লাশি।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, আলোচিত ব্যবসায়ী প্রিন্স মুসা বিন শমসের চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুদক। জিজ্ঞাসাবাদ করছেন পরিচালক ও অনুসন্ধানী কর্মকর্তা মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী।
এর আগে ডেথ ফোবিয়ার (মৃত্যু আশঙ্কা) কথা জানিয়ে হাজিরা দিতে দুদকের কাছে তিন মাসের সময় চেয়েছিলেন মুসা। তবে কমিশন ১৩ জানুয়ারি তাকে মাত্র ১০ কর্মদিবস সময় দিয়ে চিঠি দেয়া হয়। অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় তাকে ২০১৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর প্রথমবার জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।
দুদক সূত্র জানায়, ডেটকো গ্রুপের মালিক মুসা বিন শমসের। তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী যাচাই-বাছাই ও অনুসন্ধানে গত ৪ জানুয়ারি দ্বিতীয়বারের মতো তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছিলেন অনুসন্ধানী কর্মকর্তা। কিন্তু একদিন আগেই উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ ডেথ ফোবিয়ার (মৃত্যু আশঙ্কা) কথা জানিয়ে হাজিরা দিতে তিন মাসের সময় চেয়ে আবেদন করেন তিনি। মুসা বিন শমসেরের পক্ষে তার জনশক্তি প্রতিষ্ঠান ডেটকো প্রাইভেট লিমিটেডের এক কর্মকর্তা দুদক চেয়ারম্যানের বরাবর আবেদনটি করেন।