রাজধানীর মানুষের স্বপ্নের প্রকল্প হাতিরঝিল। ১ হাজার ৯ শত ৭১ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট ৩০২ একর জমির ওপর ।২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পটির উদ্বোধন করার পর এতদিন পর্যন্ত কোনো বৈধ গণপরিবহনের ব্যবস্থা ছিল না। দীর্ঘ ১৬ কিলোমিটার একমুখী সড়কের জন্য এক পাশ থেকে আরেকপাশে যেতে যেমন লাগতে দীর্ঘ সময়, আবার অপচয় হত অতিরিক্ত অর্থও। সঙ্কট সমাধানে হাতিরঝিলে চালু হলো প্রতীক্ষিত বাস সার্ভিস।
আপাতত ২৯ আসনের চারটি মিনিবাস হাতিরঝিলের চারপাশের ১০টি স্টপেজ থেকে যাত্রী তুলবে এবং নামিয়ে দেবে। টিকেট পাওয়া যাবে রামপুরা, মধুবাগ, এফডিসি মোড়, বৌবাজার, শুটিং ক্লাব ও মেরুল বাড্ডার ছয় কাউন্টারে। এক কাউন্টার থেকে আরেক কাউন্টারে সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা। রামপুরা থেকে কাওরানবাজার গেলে ১৫ টাকা লাগবে। আর বাসে করে পুরো হাতিরঝিল ঘুরলে দিতে হবে ৩০ টাকা। সকাল ৭টা থেকে বিরতিহীনভাবে রাত ১১টা পর্যন্ত এই বাস সার্ভিস চালু থাকবে।
বুধবার সকালে হাতিরঝিলে বেগুনবাড়ি পয়েন্টে এক অনুষ্ঠানে এই বাস সেবার উদ্বোধন করেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। এসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘ঢাকাবাসীর আনন্দ আয়োজনের কেন্দ্রবিন্দু হবে হাতিরঝিল। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ, হাতিরঝিলকে যেন ধীরে ধীরে আরও সৌন্দর্য্যমণ্ডিত করা হয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘ধীরে ধীরে গুলশান, বনানী ও বারিধারা লেককেও হাতিরঝিলের সংযুক্ত করা হবে। নির্মাণ করা হবে বেশ কিছু দৃষ্টিনন্দন সেতু, অপেরা হাউস, এম্ফিথিয়েটারসহ ফোয়ারা এবং ভাসমান রেস্তোরাঁ।’
হাতিরঝিলের বাস সার্ভিসের দায়িত্ব পেয়েছে এইচ আর ট্রান্সপোর্ট লিমিটেড। এইচ আর ট্রান্সপোর্ট লিমিটেড প্রতি মাসে রাজউককে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা দেবে বলে জানিয়েছেন হাতিরঝিল প্রকল্পের পরিচালক জামাল আক্তার ভূঁইয়া জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘এ প্রকল্পের জন্য এলাকার মানুষ অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। এখানে বসতি ছিল, মসজিদ ছিল, মাদরাসা ছিল। দায়িত্বে নিয়োজিত সেনা কর্মকর্তারা তাদের সফলভাবে স্থানান্তরে সক্ষম হয়েছেন।’
আগে রামপুরা থেকে কারওয়ানবাজারে যেতে যেখানে ৪০ মিনিটের বেশি সময় লাগত, সেখানে এখন হাতিরঝিল হয়ে বাসে করে ১০ মিনিটেই যাওয়া সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।