আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবসে নিজেদের অধিকার ও দাবি আদায়ে রাজপথে জড়ো হয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলো।
মিছিল-শোভাযাত্রা আর সমাবেশ-আলোচনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে পালিত হচ্ছে মে দিবস।
ঢাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হতে থাকে।
প্রেসক্লাব এলাকায় সকাল ৮টা থেকে ব্যানার, ফেস্টুন হাতে মিছিল করে জাতীয় প্রেসক্লাব এলাকায় জড়ো হতে থাকেন শ্রমিকরা। চলতে থকে মানববন্ধন, সংগীতানুষ্ঠান ও সভা-সমাবেশ। রাস্তার দুই দিকেই মানববন্ধন, সমাবেশ করেন তারা।
ট্রাকে অস্থায়ী মঞ্চ করে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন নেতাকর্মীরা। শ্রম অধিকার নিয়ে প্রচলিত জনপ্রিয় গান বাজানো হয় মাইকে। সংগঠন ভিন্ন ভিন্ন হলেও বেশির ভাগ দাবি তাদের এক।
নিজেদের মধ্যে সম্প্রীতির মাধ্যমে স্থান জুড়ে অবস্থান নিতে থাকেন। রানা প্লাজা ঘটনার তিন বছর পার করেছেন শ্রমিকরা কয়েক দিন আগেই। সে শোকের প্রভাব রয়েছে মে দিবসের কর্মসূচিতে। কর্মস্থলে শ্রমিক-কর্মচারীদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে চিহ্নিত ঝুঁকিপূর্ণ ও ত্রুটিপূর্ণ সকল কারখানা বন্ধের দাবি জানান তারা।
বিশেষ ট্রাইব্যুনালে রানা প্লাজায় দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন তারা। সারাজীবনের আয় বাবদ প্রতি নিহত শ্রমিক পরিবারকে ৪৮ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি তাদের।
শ্রম আইনকে শ্রমিক বান্ধবরূপে দেখতে চান শ্রমিকরা:
-প্রত্যেকে নিয়োগপত্র চান,
-ইপিজেড, গার্মেন্টসহ প্রত্যেক কারখানায় শ্রমিকদের অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন গড়ার অধিকার,
-আট ঘণ্টা কর্মদিবসে বর্তমান বাজারদরের সঙ্গে মিলিয়ে মজুরি নির্ধারণ,
-বাধ্যতামূলক ওভারটাইম বন্ধ করা,
-সাপ্তাহিক ছুটি কার্যকর,
-নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছয় মাস সবেতন ছুটি,
-সরকারি-বেসরকারি নির্বিশেষে জাতীয় মজুরি কমিশন গঠনের দাবি।
এদিকে প্রেসক্লাবের দোতলায় কনফারেন্স লাউঞ্জে পরামর্শ সভা আয়োজন করে ওয়্যারবি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন। এতে অভিবাসী শ্রমিকদের নানা কষ্টের কথা তুলে ধরে তাদের অধিকার ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপের দাবি জানান।
অংশগ্রহণকারীরা বলেন, এখন নারী শ্রমিকদের চাহিদা অনেক বেড়েছে। কিন্তু আমাদের নারী শ্রমিকরা বিদেশে গিয়ে ভালো থাকছেন না। নানা অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয়ে অনেকেই মৃত্যুর মুখে পতিত হচ্ছেন।
নারীদের আবাসের জন্য বিদেশে ক্যাম্প চালুর দাবি জানান কেউ কেউ, আইএলও’র গৃহশ্রমিক সনদ ১৮৯ অনুস্বাক্ষর চান তারা।