রুশ-মার্কিন পরিকল্পনায় ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় আজ শনিবার থেকে সিরিয়ায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। পাঁচ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধ ও রক্তপাতের পর দেশটিতে প্রথম এ ধরনের বড় চুক্তি কার্যকর হলো। এএফপির খবরে জানানো হয়, গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের শহর আলেপ্পোতে গোলাগুলি বন্ধ হয়ে যায়। এর আগের দিনই সেখানে বিদ্রোহীদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় রাশিয়া।
দেশটির মানবাধিকার-বিষয়ক পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলছে, উত্তরের লাত্তাকিয়া প্রদেশ এখন শান্ত। হোমস ও হামা প্রদেশও শান্ত রয়েছে।
শুক্রবার রাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সিরিয়া সরকার এবং রাশিয়াকে যুদ্ধবিরতি সম্পর্কে সতর্ক করে বলেছেন, ‘সারা বিশ্ব এই বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করবে।’
অপরদিকে সিরিয়ায় সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার মাত্র কয়েকঘণ্টা আগেই বেশ কিছু এলাকায় বিমান হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। রাশিয়ার দাবি তারা সিরিয়ার বিভিন্ন অংশে সন্ত্রাসী এবং জঙ্গিদের ওপর বোমা হামলা চালিয়েছে।
যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে দেশটির প্রায় ১শ’টির মত বিদ্রোহী দল। আসাদবিরোধী সশস্ত্র দলগুলো ইতোমধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সই করেছে।
তবে শুক্রবার এই যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার আগে রাশিয়া যে বিমান হামলাগুলো চালিয়েছে তা অন্যান্য সময়ের চেয়ে অনেক তীব্র ছিল। দেশটিতে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউমেন রাইটসের প্রধান রমি আব্দেল রহমান ওই হামলা সম্পর্কে জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতির আগে রাশিয়া বিভিন্ন এলাকার বিদ্রোহীদের দমিয়ে রাখতেই এসব হামলা চালাচ্ছে। যুদ্ধবিরতি কার্যকরের সময়সীমার আগেই সিরিয়ায় রাশিয়ার বিমান হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে চুক্তিকে সই করা বিভিন্ন পক্ষগুলো।
এদিকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ সব পক্ষকেই যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্তাবলি মেনে চলার আহবান জানিয়েছে। সংস্থাটি ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার তৈরি এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে গ্রহণ করেছে।
অপরদিকে সিরিয়ার বিষয়ে জাতিসংঘের বিশেষ দূত স্ট্যাফান ডি মিসটুরা জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি মেনে চললে আগামী ৭ মার্চ থেকে শান্তি আলোচনা আবারও শুরু হবে।