শুক্রবার, জুন ১৪, ২০২৪

লিডিং ইউনিভার্সিটি উপাচার্যের অনিয়ম-স্বেচ্ছাচারিতায় ক্ষুব্ধ শিক্ষক-কর্মকর্তার

যা যা মিস করেছেন

সিলেটের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় লিডিং ইউনিভার্সিটির ভিসি অধ্যাপক কাজী আজিজুল মাওলার অনিয়ম-স্বেচ্ছাচারিতা সকল মাত্রা অতিক্রম করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধানাবলিতে ‘পূর্ব পাকিস্তান’ শব্দ ব্যবহার করা, শহীদ মিনার অবমাননা, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনা পরিপন্থী কর্মকান্ড পরিচালনা, আইনকানুনের তোয়াক্কা না করে ভিসি হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং যথেচ্ছ ব্যবহারের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়কে ব্যক্তিগত সম্পত্তি বানানোর মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সংশ্লিষ্টরা।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জুতা পায়ে শহীদ মিনারে আরোহণ

এ বছর ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শহীদদের স্মরণে সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটি কর্তৃক ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি ও দোয়া’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ অনুষ্ঠানে উপাচার্য কাজী আজিজুল মাওলা জুতা পায়ে দিয়েই শহীদ মিনারের মূল বেদীতে আরোহণ করেন। শহীদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর অনুষ্ঠিত আলচনায় জুতা পায়েই বক্তব্য রাখেন তিনি। এ সময় শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে আগত লিডিং ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. রাগীব আলী, ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ আব্দুল হাই, বিভিন্ন অনুষদের ডীন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তারা খালি পায়ে শহীদ মিনারে অবস্থান করলেও কাজী আজিজুল মাওলা ছিলেন এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। স্বাধীন বাংলাদেশের একজন দায়িত্বশীল নাগরিক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্তাব্যক্তির এমন হীনকার্যক্রমে তাৎক্ষনিক অসন্তোষ প্রকাশ করেন লিডিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষক-কর্মকর্তারা। বুদ্ধিজীবী দিবসে জুতা পায়ে শহীদ মিনারে উপাচার্যের অবস্থান শহীদ মিনার অবমাননা ছাড়াও মহান ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আঘাত করার শামিল বলেও মন্তব্য তাদের।

মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু বিরোধী কার্যক্রমের অভিযোগ

মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে উপাচার্য কাজী আজিজুল মাওলার বিরুদ্ধে। এ বছর ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে লিডিং ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে বিজয় র‌্যালির আয়োজন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ সর্বস্তরের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা অংশগ্রহণ করলেও বিজয় র‌্যালিতে অংশ নেননি উপাচার্য আজিজুল মাওলা। এ সময় বিজয় দিবসের ব্যানার নিয়ে অংশগ্রহণকারীরা লিডিং ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন। উপাচার্যকে একাধিকবার খবর পাঠালেও তিনি আসতে অপারগতা প্রকাশ করেন। বিষয়টি নিয়ে লিডিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষক কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

২০২৩ সালের ১৭ মার্চ মাত্র ৩ মিনিটে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন কাজী আজিজুল মাওলা। ঐদিন জাতীয় শিশু দিবস এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে কোন প্রকার আলোচনার সুযোগ না দিয়েই তড়িগড়ি করে ঢাকার উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন উপাচার্য ।

শুধু তাই নয়, তিনি লিডিং ইউনিভার্সিটিতে যোগদানের পর থেকে শেখ রাসেল দিবস পালনে অনীহা ও বিরোধিতা করে আসছেন। তার নেতৃত্বে স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, মাতৃভাষা দিবস, শোকদিবসসহ অনেক জাতীয় দিবস কোন কোন সময় পালন করা হয় না, আর পালন করলেও তা যথাযথ গাম্ভীর্যের পরিবর্তে দায়সারাভাবেই পালিত হয় বলে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ।

ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন। ২০১৭ সালে ইউনেস্কো সেই ঐতিহাসিক ভাষণকে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে ২০২১ সালে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ সম্বলিত একটি বৃহৎ ছবি প্রদান করা হয় লিডিং ইউনিভার্সিটিতে। ছবিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং গ্যালারির সামনে স্থাপন করা হয়। সেই মূল্যবান ছবিটি অপসারণ করে অন্যত্র সরিয়ে ফেলার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে উপাচার্য কাজী আজিজুল মাওলার বিরুদ্ধে। বার বার মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু বিরোধী কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও উপাচার্য কাজী আজিজুল মাওলাকে সরাসরি কেউ কিছু বলতে সাহস পাচ্ছে না। তবে বিষয়গুলো নজরে আসার পর ভিতরে ভিতরে গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন লিডিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষক-কর্মকর্তাদের একটি বড় অংশ।

শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মধ্যে বাড়ছে অসন্তোষ

উপাচার্যের এমন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন লিডিং ইউনিভার্সিটির একাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তা। উপাচার্য কাজী আজিজুল মাওলা একের পর এক মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা বিরোধী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় আলোচনা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট এবং ট্রাস্টি বোর্ডের সভায়। কিন্তু কোন উপায়েই কিছু করা যাচ্ছে না তাকে।

অসহায় লিডিং ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ : প্রশাসন নির্বিকার

উপাচার্য কাজী আজিজুল মাওলার এসব কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য দেওয়ান সাকিব আহমেদ বলেন, ভিসির বিজয় দিবসের র‌্যালি বয়কট, জুতা পায়ে শহীদ মিনারে ওঠা ও লিডিং ইউনিভার্সিটিতে ইস্ট পাকিস্তান সিকিউরিটি অ্যাক্ট চালু করা-ভিসির পাকিস্তান প্রীতি ও মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি চরম অবমাননার শামিল। আমরা বিষয়গুলো বিভিন্ন সময় যথাযথ কর্তৃপক্ষের নজরে আনার চেষ্টা করেছি। উপাচার্য কাজী আজিজুল মাওলার এসব বিতর্কিত কার্যক্রম স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের প্রতি সমর্থনের সুস্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ বলেও মন্তব্য তার।

উপাচার্য অধ্যাপক ড কাজী আজিজুল মাওলার বিতর্কিত কর্মকাণ্ড বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার বনমালী ভৌমিক সাংবাদিকদের বলেন, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, জাতির জনকের জন্মদিন, শেখ রাসেলের জন্মদিন পালনে ভিসির অনীহা রীতিমত দৃশ্যমান। এক মিনিটে শেখ রাসেলের জন্মদিন পালন, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন তিন মিনিটে সমাপ্ত, স্বাধীনতা দ

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security