বৃহস্পতিবার, মে ২, ২০২৪

এক মুহূর্তের জন্যও আশা হারাইনি : কাইল মায়ারস

যা যা মিস করেছেন

নিজের অভিষেক ম্যাচে ২১০ রানের ইতিহাসগড়া ইনিংস খেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অবিস্মরণীয় জয় এনে দিয়েছেন কাইল মায়ারস। চাঁদের যেমন কলঙ্ক থাকে, তেমনি মায়ারসের এই অবিশ্বাস্য ইনিংসেও ছিল দুইটি কালো দাগ। এর বাইরে প্রায় সাত ঘণ্টার ইনিংসে বাংলাদেশের বোলার-ফিল্ডারদের হতাশায় ডুবিয়েছেন ২৮ বছর বয়সী এ অলরাউন্ডার।

রোববার দিনের শুরুতে দুইবার সুযোগ পেয়েছেন মায়ারস। দিনের দশম ওভারে তার বিরুদ্ধে রিভিউ নেয়নি বাংলদেশ। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, সেই বলটি আঘাত করতে লেগস্ট্যাম্পে। তখন মায়ারস অপরাজিত ৪৭ রানে। নিজের ইনিংসে আর ২ রান যোগ করার পর জীবন পান স্লিপে ক্যাচ দিয়ে, যেটি তালুবন্দী করতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। সেই বলেই পঞ্চাশ পূরণ হয় মায়ারসের।

৩৯৫ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় ক্যারিবীয়দের শেষ দিনে প্রয়োজন ছিল ২৮৫ রান। কঠিন এই চ্যালেঞ্জে ব্যাট করতে নেমে দিনের শুরুতেই দুইবার আউটের সম্ভাবনা জাগায়, নার্ভাস হওয়াই স্বাভাবিক ছিল অভিষিক্ত কাইল মায়ারসের জন্য। কিন্তু তিনি ছিলেন ব্যতিক্রম। এক মুহূর্তের জন্য বিশ্বাস হারাননি নিজের ওপর থেকে। তার পরিকল্পনা ছিল, রানের দিকে না তাকিয়ে যত বেশিক্ষণ সম্ভব উইকেটে থাকা।

নিজের পরিকল্পনায় পুরোপুরি সফল হয়েছেন মায়ারস। চতুর্থ দিন শেষ বিকেলে খেলতে নেমে তিনি উইকেটে ছিলেন ৪১৫ মিনিট। তাকে আউটই করতে পারেনি বাংলাদেশের বোলাররা। শেষপর্যন্ত দলকে অবিস্মরণীয় জয় এনে দিয়ে মায়ারস মাঠ ছেড়েছেন ৪১৫ মিনিটে ৩১০ বল মোকাবিলা করে ২০ চার ও ৭ ছয়ের মারে ২১০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে। তার এই ইনিংসে ঝড় উঠেছে রেকর্ডবুকে।

ম্যাচ শেষে মায়ারস শুনিয়েছেন এ অসাধ্য সাধনের গল্প। তার ভাষ্য, ‘আমি সবসময় ইতিবাচক থাকি। নিজের সামর্থ্যে বিশ্বাস রেখেছিলাম যে, হ্যাঁ, আমরা সেখানে (৩৯৫) যেতে পারব। আমরা কখনও আশা ছাড়িনি এবং লড়াই চালিয়ে গেছি। অধিনায়ক এবং কোচ বলেছেন, লড়াই চালিয়ে যাও। এই উইকেটে শ্যানন দারুণ এফোর্ট দিয়েছে, যা আমাদের সবাইকে অনুপ্রাণিত করেছে।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমি আসলে লক্ষ্যের দিকে তাকাচ্ছিলাম না। আমি আমার পরিকল্পনা নিয়ে যতক্ষণ সম্ভব এগুনোর চেষ্টা করছিলাম, চেষ্টা করেছি স্কোরবোর্ডের দিকে না তাকাতে, যত বেশিক্ষণ পারা যায় ততক্ষণ ব্যাট করতে। আমার নিজের মধ্যে বিশ্বাস ছিল যে আমি সারা দিন ব্যাট করতে পারলে দল জয় পাবে।’

সাগরিকার উইকেটে ব্যাটিং করা সহজ ছিল না জানিয়ে মায়ারস বলেন, ‘এই উইকেটে ব্যাট করা অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং ছিল। বোলাররা ভালো করেছে। এমন কিছু সময় ছিল যখন আমাদের পিচে খুঁটি গেড়ে টিকে থাকতে হয়েছে। এরপর রান করার সুযোগ এলে সেটি নিয়েছি।’

নিজের অভিষেকেই ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা মায়ারস কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তার উন্নতির পথে পাওয়া সবাইকে, ‘টেস্ট ক্রিকেট খেলার অনুভূতি দুর্দান্ত। সেঞ্চুরি, ডাবল সেঞ্চুরি এবং ম্যাচ জিতে নেয়া বিশেষ আনন্দের। কোচ, অধিনায়ক, সতীর্থ, কোচ এবং দেশে থাকা পরিবারের সদস্যদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমি প্রত্যেকের কাছে কৃতজ্ঞ। অভিষেকে একজনের ডাবল সেঞ্চুরি করে ম্যাচ জেতানো তরুণ খেলোয়াড়দেরও অনুপ্রাণিত করবে।’

তবে ডাবল সেঞ্চুরি করে ফেলবেন, সে কথা ভাবেননি মায়ারস নিজেও, ‘সত্যি বলতে, ব্যক্তিগতভাবে আমি সেঞ্চুরির চিন্তা করেছিলাম। তবে আমি জানতাম যে দলের জন্য আমার আরও বেশি করা প্রয়োজন। ব্যাটিং করার সময় ১৫০ করার চিন্তা করছিলাম। দিনের শুরুতে আমি ভেবেছিলাম যদি আমি ১৫০ বা ১৬০ করি তাহলে দল জয়ের জন্য ভালো অবস্থানে থাকবে। কিন্তু ১৬০ ছোঁয়ার পর আমি বুঝতে পারলাম যে আমাকে আরও দূর যেতে হবে এবং এটি আমাকে অনুপ্রাণিত করেছিল।’

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security