কক্সবাজারের টেকনাফ থানার বরখাস্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশের পরিকল্পনা ও প্রত্যক্ষ মদদে মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খুন হন। টেকনাফে বৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে অবৈধ কর্মকাণ্ডের অভয়াশ্রম তিনি গড়ে তুলেছিলেন। এ সম্পর্কে জেনে ফেলার কারণেই তাঁকে খুন করা হয়।
রবিবার ( ১৩ ডিসেম্বর) র্যাবের মুখপাত্র লে. কর্ণেল আশিক বিল্লাহ সাংবাদিকদের বিফ্রিংয়ে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য জানান। তিনি বলেন, ইয়াবা পাচারের সঙ্গে ওসি প্রদীপের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়ায় পরিকল্পিতভাবে সিনহাকে হত্যা করা হয়।
আশিক বিল্লাহ বলেন, সিনহা হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত। এর মূল ভূমিকায় ছিলেন টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ দাস। সিনহা টেকনাফে তার সহযোগীদের সঙ্গে নিয়ে ভিডিও করার পরিকল্পনা করছিলেন। ওই সময় স্থানীয়রা সিনহাকে ওসি প্রদীপের ইয়ারা চোলাচালানসহ বিভিন্ন অপকর্মের কথা জানান। অভিযোগের বিষয়গুলো নিয়ে মেজর সিনহা ওসি প্রদীপের সাক্ষাৎকার নিতে চান। এসময় সিনহার সহযোগীরা তার সঙ্গে ছিলেন। কিন্তু ওসি প্রদীপ মেজর সিনহাকে এসব থেকে সরে আসতে বলেন। সিনহা রাজি না হলে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।
লে.কর্ণেল আশিক বিল্লাহ আরো জানান, ওসি প্রদীপ বুঝতে পারেন তিনি বিপদে পড়তে যাচ্ছেন। এজন্য তিনি মেজর সিনহাকে শায়েস্তা করার পরিকল্পনা করেন। এরই অংশ হিসেবে জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহে ওসি প্রদীপ, লিয়াকত ও পুলিশের তিন সোর্স নুরুল আমিন, আয়াত ও নিজামউদ্দীনকে নিয়ে টেকনাফ থানায় বসে একটি মিটিং করেন। ওই মিটিংয়ে মেজর সিনহাকে হত্যার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ফাঁড়িতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান। এই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ ও রামু থানায় তিনটি মামলা করে। ওই তিন মামলায় সিনহা মো. রাশেদ, সাহেদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা দেবনাথের বিরুদ্ধে মাদক ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। ওই অভিযোগ থেকে দায়মুক্তি চেয়ে র্যাব চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে আদালতে। আজ যে মামলাটির অভিযোগপত্র র্যাব দাখিল করল, সেটি কক্সবাজার আদালতে করেন সিনহা মো. রাশেদের বোন শারমিন শাহরিয়ার।