মঙ্গলবার, এপ্রিল ৩০, ২০২৪

ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জেতার এটাই সেরা সুযোগ

যা যা মিস করেছেন

প্রকৃতির নিজস্ব নিয়ম আছে। মানুষ তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। সেটা আরও একবার বোঝা গেল যখন সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের ইনিংসের শেষ ভাগে বৃষ্টির কারণে সেদিনের জন্য খেলা বাতিল হয়ে গেল। কিন্তু বৃষ্টি আসার পরও পুরো মাঠটা কেন ঢেকে রাখা হলো না, সেটা বোঝাও যায় না, মানাও যায় না। ইংল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম পৃথিবীর সবাইকে সব বিষয়ে জ্ঞান দিতে চায়। তারা হয়তো এখনো ভাবে ওরাই বিশ্ব শাসন করছে। বৃষ্টি থামার পর অন্য কোনো দেশে যদি খেলা শুরু না হতো, তাহলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সে দেশকে দেখে নেওয়ার উপলক্ষ পেয়ে যেত। বিশ্বকাপের মতো বড় একটা আয়োজনে তাদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলত। অথচ ম্যানচেস্টারে বিকেল পাঁচটার দিকে আংশিক কভারগুলো সরিয়ে ফেলা হয়। কভারে জমে থাকা পানি তখন মাঠে পড়ে যায় এবং এক জায়গায় বেশ পানি জমে যায়। এরপর অবশ্য সুপার সপার চলে এসেছিল। কিন্তু পানি সরানো হলেও সেই জায়গাটা বেশ ভেজা থাকে। যার অর্থ, আম্পায়াররা কখনোই খুব তাড়াতাড়ি ম্যাচ শুরু করতে পারত না।

বৃষ্টি পরে আবার এসেছিল। পুরো মাঠ যদি ঢাকা থাকত, তবে খেলা শুরু হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। সে সময় নিউজিল্যান্ডের বাকি ওভারগুলো শেষ করা সম্ভব ছিল। খেলাটা তখন অন্য রকম হতো। কিন্তু পুরো মাঠ কেন ঢাকা হলো না, সেই প্রশ্ন কে করতে যাবে? যদি বৃষ্টির কারণে আর পুরো মাঠ ঢাকা না থাকার কারণে কিছু খেলা বন্ধ না থাকত, বিশ্বকাপে অনেক দলেরই অবস্থান অন্য রকম হতো। সবাই জানে, ইংল্যান্ডের আবহাওয়া কত দ্রুত বদলে যায়। তাই যদি কোনো দেশ থাকে, যাদের পুরো মাঠ ঢাকা উচিত, সেটা হচ্ছে ইংল্যান্ড। কিন্তু তাদের কি আসলেই সমর্থকদের নিয়ে কোনো মাথাব্যথা আছে? এটা কোনো আশ্চর্যের ব্যাপার নয় যে ইংল্যান্ডে ক্রিকেট দ্রুতই অন্য খেলাগুলোর কাছে জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে।

অবশ্য ইংল্যান্ড যদি তাদের দুর্গ বার্মিংহামের এজবাস্টনে অস্ট্রেলিয়াকে সেমিফাইনালে হারাতে পারে, তবে এই দৃশ্য বদলাতে পারে। এটাই ইংল্যান্ডের একমাত্র মাঠ, যেটা পুরোপুরি ঢাকা যায়। ওয়ারউইকশায়ারের প্রশাসন বেশ কিছু অসাধারণ পরিবর্তন এনেছে। তাই যদিও আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে, তবু অন্যান্য মাঠের তুলনায় এজবাস্টনে খেলা শুরু হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ইংল্যান্ড ফেবারিট হিসেবে শুরু করবে। এ জন্য না যে তারা নিজেদের মাটিতে খেলবে। বরং গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার পর তারা যেভাবে ফিরে এসেছে, সেই কারণে। তাদের ব্যাটিং গভীরতা অনেক বেশি। কিন্তু তাদের সবচেয়ে বড় ইতিবাচক দিক হচ্ছে, তাদের ওপেনিং জুটি—জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টো। তারপর তাদের জস বাটলারের মতো ক্লিন হিটার আছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ওকস আর মঈন। আর্চার ও মার্ক উডের গতি যোগ হওয়ায় বোলিং আরও ভালো হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়া তাদের নিয়মিত একাদশের দুজনকে হারিয়েছে—উসমান খাজা ও মার্কাস স্টয়নিস। তাদের পরিবর্তে যারা আসবে, তারা শুরুতেই ভালো করবে, এটা আশা করা একটু বাড়াবাড়ি হয়ে যায়। অধিনায়ক ফিঞ্চ ও ডেভিড ওয়ার্নারকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ওপেনিং জুটিও ভয়ংকর। কিন্তু তবু তারা তিন নম্বরে খাজাকে মিস করবে। বিশ্বকাপে অ্যালেক্স ক্যারি তাদের সেরা আবিষ্কার। অ্যাডাম গিলক্রিস্ট অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাটিংয়ে যেমন গভীরতা দিয়েছিল, ক্যারিও তেমন দেবে মনে হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার বোলিং আক্রমণও বেশ ধারালো। স্টার্ক টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। বেরেনডর্ফ আর কামিন্সও খুব একটা সুযোগ দিচ্ছে না। এটা ক্রিকেটের প্রাচীনতম লড়াই। আর খেলাটিও বেশ জমতে পারে। কারা জিতবে বলা কঠিন। কিন্তু ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জেতার এটাই সেরা সুযোগ। কিন্তু বাকি বিশ্বের জন্য দুঃসংবাদ হচ্ছে, তারা জিতে গেলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে সহ্য করা আরও কষ্টকর হবে।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security