টানা তৃতীয় দিনের মত রাজধানীর নিউ মার্কেট মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানোর পর ‘মহাসমাবেশের’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
গত দুদিনের মত বুধবারও বেলা ১১টা ২০ মিনিট থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এই মোড় আবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান গার্হস্থ্য অর্থনীতির ছাত্রীরা।
ঢাকার আজিমপুরের এ কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইনস্টিটিউট করার দাবিতে গতবছর সেপ্টেম্বর থেকে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
গত ১১ মার্চ থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আসা এই শিক্ষার্থীরা বলছেন, দাবি পূরণ না হলে তারা ক্লাসে ফিরবেন না।
তাদের অবরোধের কারণে বুধবারও নিউ মার্কেট মোড় হয়ে আজিমপুর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মিরপুরের দিকে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে যান চলাচল বন্ধ থাকে। এর প্রভাবে আশপাশের বিভিন্ন সড়কে তৈরি হয় যানজট।
আগের দুই দিনের চেয়ে এদিন বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল বেশি। নীলক্ষেত, আজিমপুর ও নিউ মার্কেট এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল।
এদিন তাদের প্রথমে মাইক ছাড়াই খালি গলায় নিজেদের দাবির পক্ষে স্লোগান দিতে দেখা যায়। শিক্ষকরা নিষেধ করায় মাইক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তাদের মাইক দেয়নি বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। অবশ্য পরে হ্যান্ড মাইক নিয়ে তাদের স্লোগান দিতে দেখা যায়।
সাব্রিন সুলতানা সুমীনূর বলেন, “যিনি গত দুদিন আমাদের মাইক সরবরাহ করেছিলেন, শিক্ষকদের হুমকির কারণে তিনি ফোনই ধরছেন না। তবে এতে আমাদের আন্দোলন বন্ধ হবে না।”
শিক্ষকরা বারবার আলোচনার আহ্বান জানালেও তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনায় বসবেন না বলে জানান আন্দোলনকারীদের এই মুখপাত্র।
তিনি বলেন, “কলেজকে ইনস্টিটিউট করার ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।”
এদিকে কলেজের অধ্যক্ষ ফাতিমা সুরাইয়াসহ সাত-আটজন শিক্ষক বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিউ মার্কেট মোড়ে এসে শিক্ষার্থীদের অবরোধ তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান। কিন্তু আন্দোলনকারীরা তাতে সাড়া দেয়নি।
আন্দোলনের নামে জনদুর্ভোগ সৃষ্টির সমালোচনা করে দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে এক সংবাদ সম্মেলনে অধ্যক্ষ বলেন, মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন প্রকাশের আগেই শিক্ষার্থীদের এমন আন্দোলনে কর্তৃপক্ষ ‘বিরক্ত’।
“একটা কলেজকে রাতারাতি সংস্কার করে ফেলা সম্ভব না। আমাদের কিছু সমস্যা আছে মানি, ইনস্টিটিউট হলেই সেগুলোর সমাধান হয়ে যাবে বিষয়টি এমন নয়।
জনদুর্ভোগ তৈরি করা ‘সন্ত্রাসীদের কাজ’- এমন মন্তব্য করে অধ্যক্ষ বলেন, শিক্ষার্থীরা এমন করবে তা শিক্ষকরা কখনোই চান না।
“গতকাল সারাদিন আমরা সব শিক্ষক সভা করে কলেজের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করেছি, পরে তা মন্ত্রণালয়ে গিয়ে তুলেও ধরেছি। আমরাও উন্নয়ন চাই, তবে সেটা ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে হবে, না কলেজের মাধ্যমে হবে সে সিদ্ধান্ত সরকারের।”