আপনার কি প্রতিদিনের কাজ শেষে সেই পুরনো ঘরে ফিরে আসতে একঘেয়ে লাগে? ঘরের কিছু জিনিস পরিবর্তন করে নতুনভাবে সাজাতে ইচ্ছে করে? সাধ্যের কথা ভেবে আর পিছিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ তেমন বাড়তি খরচ ছাড়াই ঘরটিকে আপনি ইচ্ছে করলে নতুন সাজে সাজিয়ে তুলতে পারেন।
সরিয়ে ফেলুন অপ্রয়োজনীয় জিনিস
আপনার ঘর নতুন করে সাজাতে প্রথমেই ঘর থেকে অপ্রয়োজনীয় সবকিছু বের করে ফেলতে হবে। আমরা সবাই পুরনো জিনিস সংগ্রহে রাখতে ভালোবাসি। কিন্তু বাস্তবে এসব জিনিসের ব্যবহার কমই হয়। যেসকল পুরনো বই আর পড়া হবে না, কিংবা যে ব্যাগ বা জামাকাপড়ের আর কোনো ব্যবহার নেই, সেগুলো ঘর থেকে বের করে দিন। দরকারি জিনিস রেখে বাকিগুলো সরিয়ে ফেললে অনেক জায়গাই খালি হয়ে যাবে। যদিও অনেকদিনের ব্যবহৃত পছন্দের সামগ্রী ফেলে দেয়াটা কষ্টকর। এতে দরকারি জিনিসের জন্য জায়গা তৈরি হবে, সেই সাথে ঘরের লুকটাও বদলে যাবে সম্পূর্ণভাবে।
ওরিগামি
ঘর সাজাতে নতুনত্বের স্পর্শ খুঁজছেন? বেছে নিন ওরিগামি, যার জন্য আপনার প্রয়োজন হবে শুধু কিছু কাগজ বা চার্ট পেপার। ওরিগামি কাগজ ভাঁজ করে নানা আকার দেয়ার একটি কৌশল ও খেলা।এক খন্ড কাগজ আদৌ না কেটে এবং কোনোরূপ আঠা ব্যবহার না করে কেবল ভাঁজ করে জীবজন্তু, পাখি ইত্যাদির রূপ দেয়া হয় এই পদ্ধতিতে। অল্প কয়েকটি সরল ভাঁজের মাধ্যমে ওরিগামি-র একেকটি অংশ তৈরি করা হয়, আর এমন অনেকগুলো অংশকে একত্র করে আরও জটিল আকৃতি তৈরি করা হয়। কিছু ভিন্ন ধরনের হাঁস বা ডিজাইনের পিস বানিয়ে ঘরের সিলিং থেকে ঝুলিয়ে দিন বা দেয়ালের সাথে আঠা দিয়ে লাগিয়ে নিন। এতে ঘরের চেহারা বদলে যাবে মুহূর্তেই।
ফেয়ারি লাইটস
ঘরে সুন্দর আলোকসজ্জার সুযোগকে কখনই এড়িয়ে যাবেন না। ফেয়ারি লাইটস, বা বাংলায় আমরা যাকে মরিচবাতি হিসেবে চিনি, তা আপনার ঘরের আমূল পরিবর্তন এনে দিতে পারে। এই বাতির সাহায্য নিয়ে আপনি ঘরটিতে একটি রোমান্টিক লুক নিয়ে আসতে পারেন। ফেয়ারি লাইটস অনেক রঙ এবং আকারের হয়ে থাকে, নিজের ঘরের সাইজ ও খালি জায়গা কতটুকু তা বুঝে কিনে ফেলুন কিছু মরিচবাতি। পর্দার হ্যাঙ্গারে লাগাতে পারেন কিংবা ঘরের আয়নার চারপাশে বা দেয়ালের ছবিগুলোর চারপাশে লাগিয়ে রাখতে পারেন ফেয়ারি লাইটস গুলো। নিউ মার্কেট থেকে পছন্দমতো সাইজের ফেয়ারি লাইটস কিনে নিন; তাছাড়া ইদানিং বিভিন্ন অনলাইন শপেও হরেক ধরনের বাতি কিনতে পাওয়া যায়।
আয়না
ঘর বড় ও প্রশস্ত দেখানোর জন্য আয়না একটি অসাধারণ সংযোজন। এটি একটি বহু বছরের পুরনো ট্রিক, দুটি লম্বা আয়নাকে উল্টো দিকের দেয়ালে মুখোমুখি করে রাখা, যেন ঘরটি দেখতে বড় দেখায়। এছাড়া ঘরের দেয়ালে ছোটো কিছু ডিজাইনার আয়না ঝুলিয়ে দিন, কিংবা ঘরের আয়নাগুলোকেই এদিক সেদিক করে রুমের লুক বদলে ফেলুন।
সবুজের ছোঁয়া
সবুজে সাজিয়ে নিন আপনার শখের ঘরটিকে। এই দেশে গাছ তুলনামূলক ভাবে বেশ কম দামী এবং সহজেই কিনতে পাওয়া যায়। ভিন্ন ধরনের ছোটো সাইজের টবে কিছু গাছ রাখলে তা ঘরের মাঝে সতেজতা নিয়ে আসে। ঘরের চারকোণায় ফুলদানি বা টবে গাছ অথবা চারা ঝুলিয়ে দিন। অনেকেরই প্রতিদিন সময় করে গাছে পানি দেয়া হয়ে ওঠে না, সেক্ষেত্রে বেছে নিতে পারেন ক্যাকটাস।
দেয়ালচিত্র
ঘরের দেয়ালের পুরোনো ছবিগুলো সরিয়ে নতুন এবং সাম্প্রতিক সময়ের ছবি লাগিয়ে ঘরের লুক বদলে ফেলুন। যদি দেয়ালে শুধু পরিবারের সদস্যদের ছবি লাগানো থাকে, তাহলে সাথে স্কুল জীবনের বন্ধুদের সাথে ভ্রমণের কিছু ছবি বা আপনার গ্র্যাজুয়েশন এর দিনের ছবি যোগ করুন। ছবির সাথে পছন্দের মিউজিক ব্যান্ড বা মুভির কিছু পোস্টারও লাগাতে পারেন, এতে আপনার ঘরের দেয়ালগুলোতে নতুনত্বের ছাপ আসবে। যদি আপনার ঘরের দেয়ালকে আপনার রুচির পরিচায়ক হিসেবে তুলে ধরতে চান, তাহলে প্রিয় পেইন্টিং বা বইয়ের কভার ফ্রেমে বাঁধিয়ে নিন এবং যেকোনো একটি দেয়ালে ঝুলিয়ে দিন।