বুধবার, এপ্রিল ২৪, ২০২৪

বাজল বিয়ের সানাই

যা যা মিস করেছেন

Marrige 1 the mail bd

বিয়ে হচ্ছে পরিবার গঠনের প্রথম ধাপ।  আর এখন চলছে বিয়ের মৌসুম।  চারদিকে বাজছে বিয়ের বাজনা।  এই বিয়ে নিয়েই আছে অনেক আচার-প্রথা।  প্রতিটি আচার-প্রথারই আছে আবার নানা রকম আয়োজন।  

এবার জেনে নেওয়া যাক বিয়ের সেই সব আচার-প্রথার সাতকাহন:

 গাড়ি সাজানো:                                                                                                                একটা সময়ে ঘোড়ার গাড়ি কিংবা পালকিতে করে বউ আনা হতো।  কিন্তু বিশ্বায়নের এই যুগে সেই পালকি-ঘোড়ার জায়গাটি এখন দখল করেছে মোটরগাড়ি।  শাহবাগ, কাঁটাবন মোড়ের ফুলের দোকানগুলো ছাড়াও যেকোনো ফুলের দোকানেই বিয়ের গাড়ি সাজানো হয়।  বিয়ের গাড়ি সাজাতে খরচ পড়বে ৮০০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত।

Marri 2 the mail bd

শাহবাগের করবী পুষ্পালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অর্কিড, গ্লাডিওলাসসহ যেকোনো বিদেশী ফুল দিয়ে বিয়ের গাড়ি সাজাতে খরচ আরেকটু বেশি পড়বে।  গাড়ি সাজানোর জন্য ফুলের দোকানগুলোতে দুই দিন আগে অর্ডার দিলেই হয়। তা ছাড়া ধানমন্ডি ও গুলশানের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান বিয়ের গাড়ি সাজানোর কাজ করে।

পান-সুপারি:                                                                                                              ফুচকাবিলাসের মতো গায়ে হলুদ বা বিয়ের অনুষ্ঠানে পান-সুপারিও একটি ভিন্ন বৈচিত্র্য সৃষ্টি করে।  গ্রামেগঞ্জে বিয়ে বা গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে এখনো চালনিতে করে পান-সুপারির ব্যবস্থা করা হয়।  শহরেও বিষয়টি লক্ষণীয়।  তবে তাতে একটু ভিন্নতা আছে।  শহরে বিয়ের অনুষ্ঠানে পান-সুপারির কাউন্টার বসানো হয়।  পান-সুপারির স্বত্বাধিকারী বলেন, ‘গায়ে হলুদ বা বিয়ের অনুষ্ঠানের সাত দিন আগেই আমাদের জানাতে হয়।  সেই সঙ্গে কী ধরনের পান-সুপারি নিয়ে যাব আর অতিথির সংখ্যাও আমাদের জানিয়ে দিতে হবে।’ বসুন্ধরা সিটি, গুলশান, সেগুনবাগিচা, এয়ারপোর্ট এবং ধানমন্ডিতে পান-সুপারির মোট পাঁচটি দোকান আছে।  বিয়েবাড়িতে পান-সুপারি বিক্রির পাশাপাশি তাঁরা ঢাকায় বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য পাঁচ হাজার এবং ঢাকার বাইরের বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য ১০ হাজার টাকা পারিশ্রমিক গ্রহণ করেন। বেনারসি, বৌ পান, জামাই পানসহ পান-সুপারির মোট ১৬ রকমের পান আছে।

  আলপনা:                                                                                                                   বিয়েবাড়ি মানেই সেই বাড়ির দেয়াল থেকে শুরু করে ঘরের মেঝে, এমনকি সিঁড়িতেও রংবেরঙের আলপনা আঁকা থাকবে।  চারুকলা ইনস্টিটিউটের ছাত্র জানান, ‘আলপনা আঁকানোর খরচটা নির্ভর করে বিয়েবাড়ির কতটুকু জায়গায় আলপনা আঁকানো হবে এর ওপর।  দুই ধাপ সিঁড়ি আর দুটি মেঝেতে আলপনা করতে খরচ পড়বে তিন হাজার টাকার মতো।’ আলপনা আঁকানোর জন্য চারুকলা ইনস্টিটিউটের ছাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।  আর তাদের বিয়ের দুই দিন আগে জানালেই তারা রং আর তুলির আঁচড়ে সুন্দর করে আলপনা এঁকে দেবে আপনার বিয়েবাড়িতে।

ফুলের গয়না:                                                                                                                বিয়েতে কনের সোনার গয়নার পাশাপাশি ফুলের গয়নাও বেশ নান্দনিক।  বিশেষ করে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে কনে ফুলের গয়নাই বেশি পরে।  শাহবাগের ফুলের দোকানগুলোতে ফুলের গয়নার ক্যাটালগ থাকে।  সেই বইয়ের ডিজাইন অনুযায়ী গয়নার দাম নির্ধারণ করা হয়।  নিজেদের পছন্দমতো ডিজাইনেও এই গয়না বানিয়ে নেওয়া যায়।  গাঁদা, গোলাপ কিংবা বেলি ফুলের গয়নায় খরচ একটু কম পড়বে।  আর জারবেলা, ক্যালেন্ডুলাসহ বিদেশি দামি ফুল দিয়ে বানালে দাম বেশি পড়বে।  কনের জন্য ডিজাইনভেদে ফুলের গয়নার সেট বানাতে ৩০০ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত লেগে যাবে।

 গায়ে হলুদ:                                                                                                                  বিয়েতে গায়ে হলুদ দেওয়া বাঙালির অতি প্রাচীন একটি রীতি।  যুগ যুগ ধরে বাঙালি বিভিন্ন আচার-প্রথার মধ্য দিয়ে

Marri 3 the mail bd

গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানটি পালন করে।  গায়ে হলুদ দেওয়ার মধ্য দিয়েই শুরু হয় বিয়ের প্রস্তুতি।  গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে ডালা-কুলা সাজিয়ে বর-কনের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার রীতি প্রচলিত আছে।  আর এই ডালা-কুলায় থাকে বর-কনের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।  এ ছাড়া এতে বেশ কিছু উপকরণ থাকে।  যেমন—ঝুড়ি, ছোট পালকি, তোয়ালে, প্রদীপ বাটি প্রভৃতি।  এই ডালা-কুলার পুরো প্যাকেজ নিউ মার্কেট ও এলিফ্যান্ট রোড ছাড়াও যেসব দোকানে বিয়ের উপকরণ বিক্রি হয়, সেসব দোকানে ৪০০ থেকে এক হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে।

  ফুল দিয়ে ঘর সাজানো:                                                                                                   বিয়েতে ঘর সাজানো একটা সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।  উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্নবিত্ত—সবাই বিয়েতে বাসর ঘরটিকে ফুলে ফুলে সাজিয়ে দিতে চায়।  গাঁদা ফুল, গোলাপ, টিউলিপ, রজনীগন্ধা ও বেলিসহ বাহারি সব ফুল দিয়ে বাসরঘর সাজানো হয়।  একটা বাসরঘর সাজাতে খরচ পড়বে দুই হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।  বাসরঘর সাজানোর দামও নির্ভর করে ডিজাইন আর দেশি-বিদেশি ফুলের ওপর।  শাহবাগ, কাঁটাবনের ফুলের দোকান ছাড়াও ধানমন্ডি এবং গুলশানে বেশ কিছু ভালো প্রতিষ্ঠান আছে, যারা বাসরঘর সাজিয়ে দেয়। তবে ১০-১৫ দিন আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখতে হয়।

গায়ে হলুদের মঞ্চ সাজানো:
বিয়েতে মঞ্চ যতটা গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ গায়ে হলুদের মঞ্চ।  গায়ে হলুদের মঞ্চ সাজানো হয় বিভিন্ন ধরনের ফুল দিয়ে।  গায়ে হলুদের মঞ্চ সাজানোর খরচটা ফুল আর ডিজাইনের ওপর নির্ভর করে।  তার পরও এই মঞ্চ সাজাতে দুই হাজার থেকে ১০ হাজার টাকার ওপর লেগে যেতে পারে।  শুধু গাঁদা, গোলাপ আর রজনীগন্ধা ফুল দিয়ে মঞ্চ সাজালে খরচ একটু কম পড়বে।  আর অর্কিড, গ্লাডিওলাস, কাঠবেলি ও জারবেলা দিয়ে সাজালে খরচটা একটু বেশিই পড়বে।  ধানমন্ডির পুষ্পিত সীমান্ত এবং ধানমন্ডি ও গুলশানের ফার্ন অ্যান্ড পেটালসে রয়েছে বিদেশি ফুলের সমাহার।  মঞ্চ সাজানোর জন্য এখানে ১৫-২০ দিন আগে অর্ডার দিয়ে রাখতে হয়।  এ ছাড়া শাহবাগ ও কাঁটাবন মোড়ের ফুলের দোকানে অল্প দামেই গায়ে হলুদের মঞ্চ সাজানো যায়।

কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের আয়োজন:
কমিউনিটি সেন্টার নির্বাচনে মাথায় রাখতে হবে, কোন কমিউনিটি সেন্টার আপনার বাসা থেকে কাছে।  এ ছাড়া কোথায় কেমন সুযোগ-সুবিধা সেটা প্রথমে দেখে নিতে হবে।  তা ছাড়া খরচের বিষয়টি তো রয়েছেই।  এখন কমিউনিটি সেন্টারগুলোতে ডেকোরেশন, আলোকসজ্জা, বাবুর্চিসহ অন্য সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।  আপনার চাহিদা অনুযায়ী তাদের সঙ্গে আলাপ করে নিন।  তবে এসব আয়োজন আপনি আলাদাভাবে ভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকেও নিতে পারেন।  কমিউনিটি সেন্টারগুলোর ভাড়া নির্ভর করে আগত অতিথি সংখ্যার ওপর।  এখানে দুই সময় ভাড়া দেওয়া হয়, দিনে ও রাতে।  বুকিং দিতে হয় অন্তত ১৫-২০ দিন আগে।  প্রথমে আপনাকে অগ্রিম কিছু টাকা দিয়ে বুকিং দিতে হবে এবং কোন সময় ভাড়া নিতে চান, তা জানিয়ে দিতে হবে কর্তৃপক্ষকে।  কমিউনিটি সেন্টারে বিভিন্ন খরচের সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়।  আপনার চাহিদা অনুযায়ী কমিউনিটি সেন্টার সুযোগ-সুবিধা প্রদান করবে।  ঢাকা সিটি করপোরেশনের অধীনে আছে প্রায় ৪৫টি কমিউনিটি সেন্টার।  এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে লগ ইন করতে পারেন http://www.dhakacity.org এই ওয়েবসাইটে।  তবে বিভিন্ন চায়নিজ রেস্টুরেন্ট বা বড় হোটেলেও বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পারেন।

বিয়ের মঞ্চ সাজানো:
বর-কনের মতোই বিয়ের আরেকটি আকর্ষণ হচ্ছে বিয়ের মঞ্চ।  বর-কনে একসঙ্গে সেই মঞ্চে বসে থাকে।  আর বিয়েটা মূলত সেই মঞ্চেই অনুষ্ঠিত হয়।  যাঁরা গায়ে হলুদের মঞ্চ এবং বাসরঘর সাজান, তাঁরাই বিয়ের মঞ্চ সাজিয়ে দেন।

Marri 4 the mail bd

বিয়ের মঞ্চ সাধারণত তাজা ফুল দিয়ে সাজানো হয়।  মঞ্চে কিছুটা বৈচিত্র্য আনতে অল্প কিছু কৃত্রিম ফুলও ব্যবহার করা যেতে পারে।  এ ছাড়া লাল সালু কাপড় ও টিস্যু কাগজ ব্যবহার করা যায়।  ডিজাইনভেদে বিয়ের মঞ্চ সাজাতে খরচ পড়বে দুই হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security