শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪

নীলফামারীতে এক সড়কের ৪২ বাঁক, যেন মরণ ফাঁদ

যা যা মিস করেছেন

সোহাগ ইসলাম নীলফামারী:

নীলফামারী জেলা শহরের কালিতলা থেকে পুলিশ লাইন পর্যন্ত ৭ দশমিক ৭৪ কিলোমিটার রাস্তাটি বাইপাশ নয় যেন মরণ ফাঁদ। এখান থেকে যেতে বাঁক (আঁকা বাঁকা) পাড় হতে হয় ৪০ থেকে ৪২টি। এলাকাবাসীর আন্দোলনের পর গত তিন বছর আগে সড়ক ও জনপদ বিভাগের অর্থায়নে ২৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ব্যয়ে রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়।

সুত্র জানায়, কালিতলা ও মশিউর রহমান ডিগ্রী কলেজ থেকে ৪২ মোড়ের দুই ধারে রয়েছে দোকান পাঠ ও বসত বাড়ী। যার কারণে দুর্ভোগে পড়েন বাস, ট্রাক, ট্যাংলড়ী, ১০ চাকার ট্রাক ও নাইটকোচসহ দুরপাল্লার ভারী যানবাহন। ঘটেছে অনেক ছোট বড় দূর্ঘটনা। জেলা শহরটি এক রাস্তার ওপরে হওয়ায় যানজোট নিরাসনের জন্য স্থানীয় পর্যায় অনেক আন্দোলন করে বাইপাস সড়কটির কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর আর শেষ হয় ২০২০ সালের ১৪ ফেব্রয়ারী। অপরদিকে, সড়কটি ২১ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে উদ্ধোধন করা হয়। তবে সেটির সুফল থেকে বঞ্চিত জনগন।

জেলা শহরের বড় বাজার এলাকার মুদি ব্যবসায়ী আবু সাইদ মিলন জানান, ‘কালিতলা মোড় থেকে ওই সড়কটি চালু হলে (মুল) প্রধান শহরটি যানজট মুক্ত হবে। বিশেষ করে সকাল ও বিকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ঢাকাগামি নাইট কোচ বিআরটিসিসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচলে সড়কটি ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এই সময় জরুরী রোগি পরিবহনকারী ভ্যান, মাইক্রো ও এ্যাম্বুলেন্স শহরের মাঝপথে আটকা পড়ে যায়। আর দূর্ঘটনাতো আছেই।’

একই শহরের মুদি ব্যবসায়ী তাপস কুমার ভৌমিক জানান, ‘নীলফামারী শহরে একটি মাত্র রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করতে হয়। এছাড়াও স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রী, মূমূর্ষ রোগি ও উত্তরা ইপিজেডের হাজার হাজার চাকুরিজীবি ছেলে মেয়ে ও বাস ট্রাক সকাল বিকাল একই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। এতে প্রতি মাসে দু,একটা বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটে। তাই বাইপাশ সড়কটির চালুর অনুরোধ জানাই।’

জেলা শহরের নিউবাবু পাড়ার ট্রাকচালক মো. খতিবর রহমান খোকন জানান, ‘কালিতলা থেকে পুলিশ লাইন পর্যন্ত ৪০ থেকে ৪২ টি বাগ বা মোড় অতিক্রম (পাড়) করতে হয়। বিশেষ করে বড় ট্রাক (১০ চাকা) ও কোচ (বাস) বাইপাশ সড়কের বাগ গুলোতে ঘুরানো যায় না। মানুষের দোকানে ও বাসাবাড়ীতে ঢুকে যায়। তাই সড়কটি সোজা করলে যানবাহন চলাচল সহজ হবে ও শহরের লোক চলাচলের ঝুঁকি কমে আসবে।’

নীলফামারী সদরের ইটাখোলা ইউনিয়নের বাদিয়ার মোড় এলাকার পান দোকানদার রহমান বলেন, ‘বাইপাশ সড়কটি তৈরী করার অনেক দিন হলো, কিন্ত বাস ট্রাক চলে না কারণ কি জানি না। তবে সড়কটির পিছনে নাকি সরকার অনেক টাকা খরচ করছে, তাতে লাভ কি হলো। সড়কটি চালু হলে ব্যবসাসহ মানুষের উপকারে আসতো। এদিকে, রিকসা, ভ্যান, অটোভ্যান, পিকআপ, বাস, ট্রাক ও নাইটকোচের যন্ত্রনায় শহরে ঢুকা যায় না।

জেলা শহরের তোহা ক্লাসিক কোচের মালিক মো. আবু তাহের বলেন, ‘আমরাও চাই শহরটি যানজোট মুক্ত হউক। কিন্ত বাইপাস সড়কের যত গুলো বাঁক পার হতে হয়, এতে বড় গাড়ীর যাতায়ত কোন মতেই সম্ভব না। তাই দ্রুত সড়কটি প্রসস্ত করার আহব্বান জানাই।’

নীলফামারী সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম জানান, ‘৭ দশমিক ৭৪ কিলোমিটার সড়কে বাঁক বা মোড় (আঁকা বাঁকা) পড়েছে প্রায় ৪০ থেকে ৪২টি। এটি সোজা করার কাজ প্রক্রিয়াধীন। বাইপাশ সড়কটি চালু বা সোজা করতে গেলে প্রায় ৮ দশমিক ৪ একর জমির প্রয়োজন। এটি নিয়ে উর্দ্ধতন কতৃপক্ষসহ স্থানীয় এমপি মহোদয়ের সাথে কথা চলছে। আশা করি,দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে। তাহলেই মুল শহর যানজোট মুক্ত হবে।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security