মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম জানিয়েছেন, গরুর কৃত্রিম প্রজনন সম্পর্কে জ্ঞান আহরণে বিদেশ সফরের যে প্রস্তাব গেছে সেটি একনেকের বৈঠকের আগেই তারা বাতিল করে দেবেন।
তিনি বলেন, প্রস্তাবটি আমার দায়িত্ব নেবার আগেই গিয়েছিল। আমি এর মধ্যেই বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেছি সংশ্লিষ্টদের সাথে এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে এ ধরনের বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তাব আমরাই বাতিল করে দেবো।
কিন্তু কিসের ভিত্তিতে গরুর প্রজনন দেখতে জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, নিউ জিল্যান্ড ও কানাডা সফরের জন্য এতো কর্মকর্তার নাম প্রস্তাব হলো, বা এ ধরনের প্রস্তাবনা তৈরির ক্ষেত্রে আসলে কোন বিষয়গুলো বিবেচনা করা হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা প্রজেক্ট তৈরি করেন তারা অনেক সময় প্রজেক্টের সাথে জড়িতদের প্রশিক্ষণের জন্য এ ধরনের প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন, যদিও অনেক সময়ই তা অনুমোদন পায় না। আর করোনার এই সময়ে এগুলোকে কোনো ভাবেই আমরা অনুমোদন দিতে পারি না।
যদিও বাংলাদেশে সরকারি কর্মকর্তাদের এ ধরনের বিদেশ সফরের প্রস্তাবনা বা বিদেশ সফরের ঘটনা প্রায়শই আলোচনায় আসে ও তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়ে থাকে।
গরুর প্রজনন জ্ঞান অর্জনে এসব কর্মকর্তারা শেষ পর্যন্ত ওই চারটি দেশে যেতে পারলে তাদের জন্য সরকারের প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয় হতো।
এর আগে গত বছর ডিসেম্বরে প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে ১৬ জন কর্মকর্তার পুকুর খনন দেখার জন্য বিদেশে যাওয়ার প্রস্তাব একনেকে পাস হলে তা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল।
তখন সরকারি অর্থে এ ধরনের বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তাব নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান। ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, পুকুর খনন শিখতে আমরা উগান্ডায় যাচ্ছি কেন?
পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান বলেন, এবারের গরুর প্রজনন বিষয় বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তাব তার কাছে যায়নি। তবে মহিষ নিয়ে একটি প্রস্তাব তিনি দেখেছেন। আমরা বৃহস্পতিবার সচিবদের নিয়ে বসবো। করোনার এই সময়ে কৃচ্ছতা সাধনের জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। অপ্রয়োজনীয় সব ব্যয় বন্ধ করা হবে।
তিনি বলেন, নানা ছুতোয় বিদেশ যাওয়ার প্রবণতা আছে এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে আমরা বৃহস্পতিবার এগুলো নিয়ে আলোচনা করবো। অনেক সময় প্রশিক্ষণের জন্য যাওয়ার দরকার পড়ে কিন্তু কোনটা কোন ধরনের কাজ এবং সেটার প্রয়োজন কতটা সেটাও তো দেখতে হবে। সব বিষয় আমাদের নজরে আছে এটা আমি নিশ্চিত করতে পারি।
কর্মকর্তারা বলছেন, এসব বিদেশ সফর আগেও হতো কিন্তু এখন ফাঁস হয়ে যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
গত বছর ডিসেম্বরে বোয়িংয়ের একটি বিমান ডেলিভারি আনতে বাংলাদেশের ৪৫ জন কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে তুমুল হাস্যরসের জন্ম দিলেও শেষ পর্যন্ত ওই সফর আর বাতিল হয়নি। এর আগেও একটি ক্যামেরা কিনতে তিনজনের বিদেশ যাওয়া, নলকূপ খনন শিখতে একাধিক কর্মকর্তার বিদেশে সফর নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সমালোচনা তৈরি হয়েছে।