দেশের মানুষ যখন করোনা নামক মহামারীর করাল গ্রাস থেকে বাঁচার জন্য প্রাণপন চেষ্টা করছে, প্রধানমন্ত্রী যেখানে দেশের দুঃস্থ ও মধ্যবিত্ত্ব মানষের জন্য বিভিন্ন প্রনোদনা ও অনুদানের ঘোষণা করছেন সে সময় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের, ২০ টি ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন শীর্ষক প্রকল্পের বর্তমান প্রকল্প পরিচালক শবনম মোস্তারী বিগত ৫ মাস যাবৎ প্রায় দু’শ কর্ম চারীর বেতন আটকে রেখেছেন ব্যাক্তিগত আক্রোশের কারণে।
২০১৮ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পটিতে উপসচিব, জনাব শবনম মোস্তারী প্রকল্প পরিচালক ছিলেন। সেসময় বিভিন্ন নিয়োগ ও ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে বিভিন্ন অনিয়ম সামনে আসলে তাকে মন্ত্রনালয় থেকে স্ট্যান্ড রিলিজের মাধ্যমে প্রকল্প থেকে অপসারন করা হয়।
পরবর্তীতে নতুন প্রকল্প পরিচালক দায়িত্ব গ্রহনের পর আউট সোর্সিং এর মাধ্যমে জনবল সরবরাহকৃত আয়া, কুক, সিকিউটরিটি গার্ড ও ক্লিনারের মধ্যে শবনম মোস্তারী সুপারিশকৃত কিছু কর্মচারীর নিয়োগে অনিয়মের বিষয়টি জানতে পেরে তাদের অব্যহতি দেন।
দীর্ঘ ১০ মাস পর শবনম মোস্তারী বিভিন্ন মহলের সুপারিশের মাধ্যমে পূর্বের পদে ফিরে আসেন এবং প্রকল্প পরিচালকের পদে দায়িত্ব নিয়েই বিভিন্ন প্রতিহিংসা মূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন এবং বাদ পড়া সেই কর্মচারীদের পুনরায় নিয়োগ দেয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে চাপ দিয়ে যাচ্ছেন জনবল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বায়োস্কোপ লিমিটেডকে।
বায়োস্কোপ লিমিটেডের চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে আরও বিস্তারিত জানা যায়, তিনি বলেন , “আমরা ২০১৮ সাল থেকে এই প্রকল্পে বিভিন্ন পদে কর্ম চারী সরবরাহ করে আসছি। মোস্তারী ম্যাডাম তখন প্রকল্প পরিচালক ছিলেন তার সুপারিশে আমরা কিছু জনবল প্রকল্পে নিয়োগ দেই, পরবর্তীতে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে তৎকালীন প্রকল্প পরিচালকের নির্দেশক্রমে তাদের অপসারন করা হয়। মোস্তারী ম্যাডাম পুণরায় প্রকল্পটিতে পুরনরায় ফেরৎ এসে সেই বিষয়টির প্রতিশোধ নিয়ে যাচ্ছেন।
চুক্তির শর্তানুযায়ী আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠান বেতন পরিশোধের পর প্রকল্প থেকে বিল প্রদান করা হবে। কিন্তু অক্টোবর ২০১৯ এবং নভেম্বর ২০১৯ এর বেতন আমরা পরিশোধের পর প্রমান সহ বিল জমা দিলেও প্রকল্প অফিস থেকে অন্যায় ভাবে অসৎ উদ্দ্যেশ্য হাসিলের জন্য প্রতিষ্ঠানের বিল আটকে রাখা হয়েছে। মহামান্য হাই কোর্ট থেকে পর পর ২ টি নোটিশ প্রেরণের পরও সেসব কিছু তোয়াক্কা না করে তিনি ৬ মাস যাবৎ সকল বিল আটকে রেখেছেন।
এদিকে ডে-কেয়ার সেন্টারের সকল কর্ম চারীরা এই দূর্যোগের সময় ৫ মাস যাবৎ বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। মানবিক দিক বিবেচনা করে বেতন প্রদানের অনুরোধ করায় বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ এনে আমাদের এবং অন্য আরেকটি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি বাতিল করে পুনরায় দরপত্র আহ্বান করে পত্রিকায় প্রকাশ করেছেন এবং সিডিউল বিক্রি করছেন, প্রকল্পে বাকি রয়েছে আর ৭মাস এই সময়ে তিনি তার পছন্দের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কাজ করিয়ে নিতে চান বিধায় বায়োস্কোপ লিমিটেড থেকে কয়েকবার সিডিউল কিনতে গেলেও প্রকল্প অফিস থেকে আমাদের কাছে সিডিউল বিক্রি করা হচ্ছে না।”
নতুন ভাবে দরপত্র প্রকাশ ও বিল আটকে রাখার বিষয়টি নিয়ে প্রকল্প পরিচালকের নিকট ফোন করে জানতে চাওয়া হলে তিনি লিখিতভাবে অথবা মেইলের মাধ্যমে প্রশ্নগুলো করতে বলেন এবং তিনি পরবর্তীতে যেদিন অফিসে আসবেন সেদিন লিখিতভাবে আমাদের বিষয়গুলো অবগত করবেন বলে আস্বস্থ্য করেন, বিষয়টি নিয়ে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সাথে ফোনে আলোচনা করা হলে তিনি জানান, সম্পূর্ণ বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত আছেন এবং খুব শীঘ্রই বিষয়টি সমাধান করা হবে। এদিকে ভুক্তভোগী কর্মচারীরা এই চরম দুর্দিনে দ্রুত সকল সমস্যার সমাধান কামনা করছেন।