মুক্তির আগে আবারও নতুন বিতর্কে জড়ালো ‘উড়তা পাঞ্জাব’। শুক্রবার মুক্তির কথা থাকলেও সিনেমাটি অনলাইনে ফাঁস হয়ে গেছে বেশ ক’দিন আগেই, যা টুইটারবাসীকে যুগিয়েছে আলোচনার খোরাক। নির্মাতা পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এনিয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছে সাইবার অপরাধ দমনে সম্পৃক্ত পুলিশকে। যে আইপি অ্যাড্রেসের মাধ্যমে সিনেমাটি অনলাইনে ফাঁস করে দেওয়া হয়েছে, সেটির খোঁজে এখন নেমেছে পুলিশ।
সম্প্রতি সেন্সর বোর্ড সিনেমাটি আটকে দেওয়ায় শুরু হয়েছিল নানা বিতর্ক। পরবর্তীতে সেন্সর বোর্ডের সিদ্ধান্তে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে মামলাও দায়ের করেছিল সিনেমার নির্মাতাপক্ষ।
প্রথমে ‘উড়তা পাঞ্জাব’কে ৮৯ টি ‘কাট’ করতে বলে সেন্সরবোর্ড, পড়ে রিভিউ কমিটি তা কমিয়ে আনে ১৩ টিতে। কিন্তু এই ১৩ টি ‘কাট’-এর মধ্যে অন্যতম নির্দেশ ছিল ‘পাঞ্জাব’ শব্দটি নিষিদ্ধ করার, যা সিনেমাতে এসেছে ৯৪ বার। এছাড়া আরও বেশ কয়েকটি দৃশ্য পরিবর্তন করতে বলা হয় নির্মাতাদের, যা পাঞ্জাবের বাস্তব সমস্যাকে পুরোপুরি অগ্রাহ্য করে।
সেন্সরবোর্ডের এই সিদ্ধান্তে ফুঁসে উঠে গোটা বলিউড, এরপর উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয় ‘উড়তা পাঞ্জাব’-এর নির্মাতারা। পরবর্তীতে বিজয়ের হাসি হাসেন ‘উড়তা পাঞ্জাব’ এর নির্মাতারাই, মাত্র একটি দৃশ্য কর্তন করার আদেশ দিয়ে সিনেমাটির পক্ষে রায় দেয় আদালত।
আর তার মাঝেই অনলাইনে বিনামূল্যে প্রকাশিত হয়ে পড়েছে ‘উড়তা পাঞ্জাব’। ফাঁস হয়ে যাওয়া এই সংস্করণে পরিষ্কারভাবে লেখা ছিল ‘সেন্সরের জন্য’। টুইটারে এনিয়ে হাসি ঠাট্টাও যেমন চলছে, অনেকেই আবার এটিকে দেখছেন সিনেমার ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত করার ঘৃণ্য উপায় হিসেবে।
বিনামূল্যে সিনেমাটি না দেখে হলে যেয়েই দর্শকদের সিনেমাটি দেখার অনুরোধ জানিয়েছেন প্রখ্যাত নির্মাতা কারান জোহার।
টুইটারে তিনি লেখেন, “দয়া করে এই সপ্তাহ শেষে প্রেক্ষাগৃহে যেয়ে ‘উড়তা পাঞ্জাব’ দেখে আসুন। আগেই ফাঁস হয়ে যাওয়া অনলাইন প্রিন্টের দিকে ঝুঁকবেন না। ভালো সিনেমার জন্য ভালো দর্শকের প্রয়োজন রয়েছে।” এমনকি, অনলাইনে বের হয়ে যাওয়া সিনেমায় ক্ষতিকারক ভাইরাসের উপস্থিতি রয়েছে, এমন সতর্ক বার্তাও দিয়েছেন তিনি।
কারান জোহারের সমর্থনে অনলাইনে লিক হয়ে যাওয়া সিনেমা না দেখার আহবান জানিয়েছেন হুমা কোরেশি, কাল পেন এর মত তারকারাও। এরকম সরাসরি পাইরেসির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জোর প্রতিবাদ জানিয়েছেন তাদের টুইটে।
এদিকে যারা পাইরেসি বন্ধের দাবী তুলেছেন, তাদের সিনেমা নির্মাণের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এক ব্যবহারকারী। তার ভাষ্যমতে, “বলিউড এখন সাধু সাজবার চেষ্টা করছে। যে ইন্ডাস্ট্রি চলছেই মূলত হলিউড এবং দক্ষিনি সিনেমা নকল করে, তারাই আবার আওয়াজ তুলছে পাইরেসির বিরুদ্ধে!”
যেহেতু সেন্সরকে দেয়া কপিটিই ফাঁস হয়েছে, তাই সবার নজর গিয়ে পড়েছে এখন অদিকেই।
সেন্সরবোর্ড তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টার পরও আটকাতে পারেনি সিনেমাটির মুক্তি। এ নিয়ে রসিকতা করে একজন লেখেন, “মুফতে কাঁটাছেঁড়া আর প্রচারণা পর সেন্সর বোর্ড এবার বিপননের কাজও শুরু করলো।”
টরেন্ট সাইট ব্যবহারের পক্ষেও এসেছে আবার কিছু টুইট।
“পালিকা বাজার থেকে গেইম অফ থ্রোন্স এর পর্ব আর পাইরেটেড গেইমস ডাউনলোড করলে কোন সমস্যা নেই আর উড়তা পাঞ্জাবের জন্য টুইটারে একজন প্রতিবাদ কর্মী হয়ে ওঠা?”
‘উড়তা পাঞ্জাব’ সিনেমার মান নিয়েও সমালোচনা করেছেন অনেকেই।
লেখেন, “সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়েই কেউ কথা বলছে না। উড়তা পাঞ্জাব কি আসলেই দেখার কিংবা পাইরেটেড কপি ডাউনলোড করার যোগ্য?” আর একজন তো ঠাট্টাচ্ছলে নির্মাতাদের ধন্যবাদ দিয়েছেন প্রেক্ষাগৃহে সিনেমা দেখার দুইশত রূপি বাঁচিয়ে দেবার জন্য।