...
শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪

কাদাকনাথ মুরগি পালনে সফলতা

যা যা মিস করেছেন

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের পেলাইদ গ্রামে স্বামী আবু ইউসুফ, দুই সন্তান অলি উল্ল্যাহ্ ও আমান উল্ল্যাহ্কে নিয়ে গৃহিনী শাহানাজ আক্তার (৩৫) এর সংসার। বাড়ির পাশেই পেলাইদ দারুসুন্নাহ্ দাখিল মাদ্রাসার সহকারী সুপার পদে স্বামী ও দুই ছেলে টঙ্গীর তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসার বোর্ডিং থেকে পড়াশোনা করেন। স্বামী মাদ্রাসায় চলে যাওয়ার পরই পুরো বাড়িতে একাই থাকেন শাহানাজ। সাংসারিক কাজ শেষে পুরো বাড়ি জুড়েই একাকীত্ব, নিঃসঙ্গতা সব সময়ই তাকে পীড়া দিতো। বাড়িতে অলস সময়টুকু কাজে লাগানোর চিন্তা করতেন সবসময়ই। সে চিন্তা থেকেই বাড়ির আঙ্গিনায় তিনি রোপন করেছেন দেশী-বিদেশী বিভিন্ন ফলের গাছ, বাড়ির সৌন্দর্য বর্ধনে রোপন করেছেন ফুলেরও গাছও। তবুও আরও ভাল কিছু করার ইচ্ছা মনে পুষতেন শাহনাজ।

মনে পোষা ইচ্ছার কথা জানান তার ভাই ফখরুল ইসলামকে। ভাই ফখরুল ইসলাম তাকে কাদাকনাথ মুরগি পালনের পরামর্শ দেন। পরে প্রায় ৭/৮লাখ টাকা ব্যয়ে পেলাইদ গ্রামে ২শ কাদাকনাথ মুরগির বাচ্চা ও শেড তৈরী করে দেয় তার ভাই ফখরুল। এরপরই সফলতা ধরা দেয় শাহানাজকে। মুরগি পালন শুরু কয়েক মাস পরই ভাইয়ের দেয়া টাকা পরিশোধ করে এখন কয়েক লাখ টাকার সম্পদ করেছেন শাহানাজ। সেই ২শ বাচ্চার মুরগি থেকে এখন প্রতি মাসে আয় অর্ধলাখ টাকা।
শাহানাজ বলেন, স্বামীর আয়ে তার সংসার বেশ ভালই চলছিল। সংসারে কোন পিছুটান ছিল না। তবুও ঘরে বসে থাকার চাইতে, কিছু করলে আয়ের পাশাপাশি সময় ভাল কাটবে সেই ইচ্ছাটি আমার বড় ভাইয়ের কাছে বলি। তিনি শোনা মাত্রই কাদাকনাথ মুরগি পালনে উৎসাহিত করেন। পরে তিনি ভারত থেকে ২শ কাদাকনাথ মুরগির বাচ্চা এনে দেন। সাথে প্রায় ৭/৮ লাখ টাকা খরচ করে বাড়ির আঙ্গিনায় একটি মুরগির শেড তৈরী করে দেন। পরে কাদাকনাথ মুরগি পালনের আয় দিয়ে ভাইয়ের টাকা পরিশোধ করে এখন তা ১০/১২ লাখ টাকার লাভ গুনেছেন। এছাড়াও তার মাসিক আয় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা।

শাহানাজ বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মুরগির বিক্রির ভিডিও ছেড়ে দেয়া হলে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষজন প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসে করে তার বাড়িতে আসে। এছাড়াও মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে মুরগি ও ডিম অর্ডার দেয়। পরে কুরিয়ার সার্ভিসে ডিম এবং দেশের বিভিন্ন জায়গার চলাচলকারী বাসে বিশেষ ভাবে প্যাকেটজাত করে মুরগি পাঠানো হয়। মুরগির পাশাপাশি কাদাকনাথ মুরগির প্রতিটি ডিম ৫৫ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হয়। এখন তার ব্যক্তিগত হাত খরচের টাকা, সংসারের টাকা স্বামীর কাছে চাইতে হয় না। তিনি বলেন, এলাকায় ব্রয়লার-লেয়ার মুরগির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যারা ব্রয়লার-লেয়ার মুরগি পালন করে তারা এক ব্যাচ মুরগি পালার পর লাভের মুখ দেখলেও দ্বিতীয় ব্যাচে অনেক সময় লোকসান গুনতে হয়। কিন্তু কাদাকনাথ মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি, পালনে ঝুঁকি কম। চিকিৎসক-ঔষধপত্রে খুব বেশি খরচ নেই। তাই অন্যান্য মুরগির চাইতে খরচ অনেকাংশে কম।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মোঃ রোকনুজ্জামান পলাশ বলেন, শাহনাজ বেগম বর্তমান সমাজে এক আইকন। এক নারী হয়ে তিনি কাদারনাথ মুরগি পালনে বেশ সফলতা দেখিয়েছেন। গত প্রাণী সম্পদ মেলায় তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং দ্বিতীয় স্থান দখল করেছিল। তাকে উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস থেকে নানা ধরণের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security
Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.