বহুল প্রতিক্ষিত করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছে রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার পুতিন ঘোষণা করেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী প্রথম কার্যকরী টিকা তৈরি করেছে রাশিয়া। এই টিকা পরীক্ষার সময় কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে, যা করোনা ভাইরাস স্থায়ীভাবে প্রতিরোধে সক্ষম।
পুতিন বলেন, ‘আজ সকালে, বিশ্বের প্রথমবারের মতো করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন রাশিয়ায় নথিভুক্ত করা হয়েছে। এই টিকা আমার এক মেয়ে গ্রহণ করেছে। আমি মনে করি, সে এ বিষয়ক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।’
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে ভ্যাকসিনটি তৈরি করেছে গামলেয়া ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার। যা রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে নিবন্ধন করেছে।
পুতিন বলেন, ‘ভ্যাকসিন নেওয়ার পর আমার মেয়ের সামান্য জ্বর হয়েছিল। তবে দ্রুতই তার তাপমাত্রা স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসে। এখন সে ভালো আছে।’ পুতিনের দুই মেয়ের মধ্যে একজনের দেহে এই ভ্যাকসিন দেয়া হয়। তবে কোন মেয়ে ভ্যাকসিনটি গ্রহণ করেছেন সেটি উল্লেখ করেননি রুশ প্রেসিডেন্ট।
এই ভ্যাকসিনটি মানবদেহের জন্য কতটা নিরাপদ সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। দুদিন আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে– যে কোনো ভ্যাকসিনের অনুমোদনের জন্যই পরীক্ষাগারে সব ধাপ অতিক্রম করতে হবে।
রাশিয়ার দাবি, তাদের উদ্ভাবিত ভ্যাকসিনটি নিরাপদ। এটি স্বেচ্ছাসেবীদের দেহে পরীক্ষায় সফলতা পাওয়া গেছে।
পুতিন জানিয়েছেন, ভ্যাকসিনটি মানবদেহের জন্য কতটুকু নিরাপদ সেটি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত মাঠপর্যায়ে ছড়িয়ে না দিতে গবেষক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
ভ্যাকসিনটি দুই মাসেরও কম মানব পরীক্ষার পর মস্কোর গামালিয়া ইনস্টিটিউট তৈরি করেছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই রাশিয়া এই ভ্যাকসিনের ব্যাপকভিত্তিক উৎপাদনে যাবে।
ভ্যাকসিনটির বিষয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, এটি বেশ কার্যকরভাবে কাজ করছে এবং ভ্যাকসিনটি একটি স্থিতিশীল প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করছে।
প্রথমে স্বাস্থ্যসেবাকর্মীদের জন্য সেপ্টেম্বর থেকে এই ভ্যাকসিনটি সরবরাহ করা হবে। জানুয়ারিতে সবার জন্য এটি উন্মুক্ত করা হবে।
বিশ্বজুড়ে নিয়ন্ত্রকেরা বলছেন, দ্রুতগতিতে কোভিড-১৯ টিকা তৈরির ক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া ঠিক হবে না। তবে সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দ্রুত টিকা তৈরির বিষয়টি সরকারের ওপর জনগণের অনাস্থা তৈরি করছে।
গত মাসে রয়টার্সকে একটি সূত্র জানিয়েছে, টিকাটির অনুমোদন পেলে দেশটির কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীদের এই টিকা নেওয়ার আহ্বান জানানো হবে।
বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি ঠেকাতে ১০০টিরও বেশি টিকা তৈরির কাজ চলছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, চারটি টিকা মানবপরীক্ষার তৃতীয় ধাপে রয়েছে।