বাজেটে প্রায় সাড়ে তিন লাখ কোটি টাকা ব্যয়ের ৭১ শতাংশের বেশি অর্থ রাজস্ব খাত থেকে আদায়ের যে পরিকল্পনা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত উপস্থাপন করেছেন, তাকে তিনি নিজেও ‘উচ্চাভিলাষী’ বলছেন।
এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে গত দুই অর্থবছরের রাজস্ব আদায় পরিস্থিতির তুলনা দেখিয়েছেন তিনি। বলেছেন, গতবছর রাজস্ব আদায় ‘নিম্ন মানের’ হলেও আগের বছর পুরো সময় তা দুই অংকের উপরে ছিল।
“আমি সাত বছর ধরে এই মন্ত্রণালয়ের আছি। গত সাত বছরে রাজস্ব আদায়ের সক্ষমতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে।… নতুন নতুন অফিস হয়েছে… প্রত্যেক উপজেলায় অফিস হবে। … ৩৫ শতাংশ অতিরিক্ত কর আদায়ের প্রস্তাব করেছি।”
বরাবরের মতোই রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এই বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়, যাতে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের চারজন মন্ত্রী মুহিতের সঙ্গে মঞ্চে ছিলেন।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, আমরা পৃথিবীর সব দেশের থেকে কম রাজস্ব আদায় করি। একটি না দুইটি দেশ আমাদের নিচে আছে। সরকার কী সেবা দিলো তা নিয়ে কথা বলি, কিন্তু ভালো সেবার জন্য যে পর্যাপ্ত রাজস্ব দরকার তা নিয়ে মাথা ঘামাই না। আর সে জন্য একটু রাজস্ব বেশি দিলে মন্দ হয় না।
তবে অর্থমন্ত্রী মনে করেন, নতুন অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে। এ জন্য আগামী মাস থেকেই রাজস্ব আদায়ে বিশেষ কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।
উপজেলা পর্যায়ে অফিস করেছি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তাই আগামী বছরে আমরা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারব।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে অর্থমন্ত্রী বাজেট নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের তীব্র সমালোচনা করেন। এর পরপরই অর্থমন্ত্রী উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রস্তাবিত বাজেটের বিভিন্ন দিক নিয়ে প্রশ্ন করার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
এবারের বাজেটে জিডিপির ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ এবং মোট রাজস্ব আয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ২ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ১২ দশমিক ৪ শতাংশ। এতে ঘাটতি ধরা হয়েছে ৯৭ হাজার ৮৫৩ কোটি টাকা।