এক স্বপ্নগ্রস্ত মানুষের নাম সত্যজিৎ রায়। বাঙালি জাতি সত্ত্বার এক মহান প্রতিভূ বলা হয় তাকে। শুধু বাংলা ভাষাভাষি অঞ্চলের নয়, বরং সমস্ত মহাবিশ্বের এক অসাধারণ ব্যক্তিত্ব তিনি!
গত শতকের বিশ্ব সিনেমার নেতৃত্বশীলদের একজনও সত্যজিৎ রায়। সিনেমা যে একটি শক্তিশালী শিল্প মাধ্যম, তা এই উপমহাদেশে তার আগে আর কে বুঝাতে কিংবা বুঝতে পেরেছেন! প্রথম সিনেমা ‘পথের পাঁচালি’ নির্মাণ করেই যিনি বিশ্বে তুমুল হইচই ফেলে দিয়েছিলেন। যে সিনেমাটি আজও বিশ্বের ক্লাসিক সিনেমার মর্যাদায় আসিন। আর এই সিনেমা নির্মাণে পেছনের সংগ্রামের কাহিনী এবার চিত্রে, লেখায় ফুটিয়ে তুলেছেন তার একমাত্র পুত্র সন্দীপ রায়। গতকাল সত্যজিৎ রায়ের ৯৫তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে দীর্ঘেদিনের পরিশ্রম শেষে বাবার উপর একটি স্কেচবুক প্রকাশ করলেন তিনি!
সত্যজিৎ রায়ের প্রথম ছবি ‘পথের পাঁচালি’র কথা সবাই জানে। কিন্তু তার পিছনে সত্যজিতের পরিশ্রমের কথা ক’জন জানেন? কীভাবে চরিত্র চিত্রণ করতেন সত্যজিৎ রায়? কীভাবেই বা বানাতেন ফ্রেম? সেইসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন সত্যজিৎ রায়ের একমাত্র পুত্র সন্দীপ রায়। গতকাল সত্যজিতের জন্মদিন উপলক্ষ্যে ‘পথের পাঁচালির স্কেচবুক’ প্রকাশ পেয়েছে।
শুধু স্কেচ নয়! নোটস, পোস্ট স্ক্রিপ্টস সবই থাকবে বইটিতে। কীভাবে সত্যজিৎ রায় ছবিটির পরিকল্পনা আর ভিজ্যুয়ালাইজেশন করেছেন সেসবও নাকি দেখিয়েছেন সন্দীপ। সন্দীপ রায় বইয়ের ইতিহাসের জায়গায় লিখেছেন, ‘সাংবাদিক জর্জ সাডোলের অনুরোধে বাবা এটা প্যারিসের সিনেমাটিক ফ্রঁসেকে (Cinematheque Francais) দিয়েছিলেন। শেষের দিকে তিনি ‘পথের পাঁচালি’ ভিজ্যুয়াল স্ক্রিপ্টগুলো আবার দেখতে চেয়েছিলেন। আমি সিনেমাটিক ফ্রঁসেজের সঙ্গে যোগাযোগ করি। কিন্তু তারা জানায় স্কেচবুকটি হারিয়ে গেছে। তবে গত বছর আমরা এর একটি স্ক্যান করা কপি পাই এবং ঠিক করি সেটা ছাপাব।’
বইটির ভূমিকা লিখেছেন শর্মিলা ঠাকুর। সেখানে তিনি লিখেছেন, তাঁর অপুর সংসারে কাজ করার পিছনে ছিল পথের পাঁচালি। পথের পাঁচালির আন্তর্জাতিক সাফল্যের কথা শুনেই তাঁর বাবা তাঁকে অপুর সংসারে কাজ করতে দিয়েছিলেন।