শনিবার, জুলাই ১৩, ২০২৪

ইমামের স্ত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, প্রতিবেশী এক ব্যক্তি গ্রেফতার

যা যা মিস করেছেন

জেলা প্রতিনিধি, নড়াইল:

নড়াইল সদর থানার গোবরা গ্রামে ইমাম মো. শফিকুল ইসলামের স্ত্রী মোছা. ইতি বেগমের (৪২) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন এবং হত্যায় জড়িত এক আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সোমবার (২৭ মে) রাতে নড়াইল সদর থানার গোবরা গ্রামের মৃত নেছার বিশ্বাস এর ছেলে হত্যায় জড়িত মো.জিয়াউর রহমান (৪২) নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২৮ মে) বিকেলে নড়াইল জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়ছে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলতি বছরের ২১ এপ্রিল সন্ধ্যায় ইমাম মো. শফিকুল ইসলামের আত্মীয় মো.জুয়েল বিশ্বাস তার বাড়িতে একটা গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানায়। তখন তিনি তার আত্মীয় স্বজন ও প্রতিবেশীদের সাথে নিয়ে তার বাড়িতে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে ভাড়াটিয়া মো. মনিরুল ইসলাম মনি এর ঘরের তালা ভেঙ্গে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে তার চৌকির নিচে বস্তা দিয়ে ঢাকা অবস্থায় তার স্ত্রী মোছা. ইতি বেগম এর গলাকাটা লাশ ও পাশে একটি কাঁচি দেখতে পান। পরে খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠায়।

এ ঘটনার ইমাম মো. শফিকুল ইসলাম নড়াইল সদর থানায় তার বাড়ির ভাড়াটিয়া মো.মনিরুল ইসলাম মনি (৪৮) সহ অজ্ঞাতনামা ১/২ জনকে আসামি করে এজাহার দায়ের করলে নড়াইল সদর থানায় ২২ এপ্রিল একটি হত্যা মামলা হয়।

পরে নড়াইল সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাজেদুল ইসলাম, উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সাইফুল ইসলাম ও মির্জাপুর পুলিশ ক্যাম্পের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. সাইফুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্সসহ সোমবার (২৭ মে) রাতে অভিযান চালিয়ে হত্যায় জড়িত আসামি জিয়াউর রহমানকে তার নিজ বাড়ি গোবরা থেকে গ্রেফতার করেন।

আসামি জিয়াউর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করে যে, পলাতক আসামি মনিরুল ইতি বেগমের নিকট হতে ৫ মাস পূর্বে ২০ হাজার টাকা এবং ৩ মাস পূর্বে ৩০ হাজার টাকা ইট কিনে দেওয়ার কথা বলে নেয়। কিন্তু মনিরুল ইট কিনে না দিয়ে তাকে ঘোরাতে থাকে। পরে ইতি জমি ক্রয়ের জন্য ব্যাংক হতে ২ লক্ষ টাকা লোন করে যা আসামি মনিরুল ও জিয়াউর রহমান জানতে পারে।

আসামীরা ইতি বেগমের উক্ত লোনের টাকা আত্মসাত করতে গোবরার একটি চায়ের দোকানে বসে পরিকল্পনা করে। ঐ সময় তারা স্পিড, চানাচুর, চকলেট, কেক ও ঘুমের ঔষুধ ক্রয় করে নিজ নিজ বাড়িতে চলে যায়। মনিরুল একটি স্পিডের বোতলে ঘুমের ঔষুধ মিশিয়ে রাখে এবং রাতে জিয়াউর রহমানকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে তার ঘরে একত্রিত হয়।

এর কিছুক্ষণ পর মনিরুল ভিকটিম ইতি বেগমকে ডেকে চানাচুর, চকলেট ও কেক খাওয়ানোর এক পর্যায়ে কৌশলে ঘুমের ঔষুধ মিশ্রিত স্পিড খাওয়ায়। এরপর মনিরুল প্রথমে তার ঘরের ফ্লোরের মাঝে ইতি বেগমকে ধর্ষণ করে এবং পরে আসামি জিয়াউর রহমান তাকে ধর্ষণ করে।

এ সময় ঘুমের ঔষুধ সেবন করানোর কারণে অচেতন হয়ে পড়ে সে। রাতে আসামি জিয়াউর কাঠের চৌকি উঁচু করে ধরে আর মনিরুল ইতি বেগমকে টেনে চৌকির নিচে নিয়ে জিয়াউর ইতি বেগমের দুই পা চেপে ধরে রাখলে মনিরুল তার ঘরে থাকা ধারালো কাঁচি দিয়ে তার বুকের উপর বসে গলা কেটে হত্যা করে। পরে ঘরের ভিতর থাকা কাঁথা, কম্বল ও কাপড় দিয়ে রক্ত মুছে রাখে।

এরপর ইতি বেগমের কাছে থাকা তার ঘরের চাবি নিয়ে তালা খুলে তার ঘরে ঢুকে শোকেজ ও অন্যান্য জায়গায় টাকা ও স্বর্ণালংকার খোঁজাখুঁজি করে কোন টাকা খুঁজে পায় না। পরে জিয়াউর রহমান তার বাসায় চলে যায়। এরপর মনিরুল ইসলাম ইতির ঘরের মধ্যে থাকে এবং ভোর বেলা ঘরে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায়।

আসামি জিয়াউর রহমানকে মঙ্গলবার (২৮ মে) আদালতে প্রেরণ করা হলে তিনি ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। এছাড়া পালাতক আসামি ভাড়াটিয়া মো. মনিরুল ইসলাম মনিকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলেও প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security