বৃহস্পতিবার, মে ২৩, ২০২৪

জবিতে প্রদীপ প্রজ্বালনে কালরাত স্মরণ

যা যা মিস করেছেন

জবি প্রতিনিধি

একাত্তরের ২৫ মার্চ ভয়াল কালরাত্রিতে নিহত শহীদদের স্মরণে ও গণহত্যা দিবস উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) প্রদীপ প্রজ্বালন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিশালাকৃতির স্ক্রল পেইন্টিং অংকন করা হয়েছে।

সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় ‘২৫ মার্চ কালরাত্রি ও গণহত্যা দিবস’ স্মরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবন ও শহীদ মিনার চত্বরে এ মোমবাতি প্রজ্বলন করা হয় এবং একটি স্ক্রল পেইন্টিং অঙ্কন করা হয়। এসময় প্রজ্জ্বালনের মাধ্যমে ভয়াল কালরাত স্মরণ করা হয়। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস এক মিনিটের জন্য অন্ধকারাচ্ছন্ন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী এর নেতৃত্বে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে এ মোমবাতি প্রজ্বালন করেন। এ সময় তিনি ভাস্কর্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংকন করা পেইন্টিং পরিদর্শন করেন। এছাড়াও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে চারুকলা অনুষদের শিল্পী, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিশালাকৃতির স্ক্রল পেইন্টিং অংকন করা হয়।

চারুকলা অনুষদের ডিন ও ড্রয়িং এন্ড পেইন্টিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহা. আলপ্তগীনের নেতৃত্ব অনুষদের সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ১৪ফুট/৬ফুট বিশাল আকৃতির ক্যানভাসে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ গণহত্যা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিশালাকৃতির স্ক্রল পেইন্টিং অংকন করেন। এদিন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম স্ক্রল পেইন্টিং অংকনের উদ্বোধন করেন।

এ আয়োজন নিয়ে ভাস্কর্য বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, গণহত্যার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি আমরা সবাই চাই এবং দাবিও করি। এ ধরণের আয়োজনের মাধ্যমে আমাদের দাবিটি আরও জোড়ালো হবে এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি নিশ্চিত হবে। আমরাও চাইব শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নয়, সারা বিশ্ব ২৫ মার্চের এই কালোরাত্রির গণহত্যাকে স্বীকৃতি দেয় এবং সেটা দিলে আমাদের জন্য বিষয়টি ঐতিহাসিকভাবে আরও তাৎপর্যপূর্ণ হবে।

চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহা. আলপ্তগীন বলেন, ২৫ মার্চকে স্মরণ করার জন্য, তাদের যেনো আমরা ভুলে না যাই, তাদের যে আত্মাত্যাগ, নিরস্ত্র জনগণের ওপর যেভাবে হানাদার বাহিনী গণহত্যা করেছিল, এটা যেন আমরা স্মরণ করি এবং সমস্ত বিশ্বকে জানিয়ে দিতে চাই, এরকম একটা গণহত্যা আমাদের ওপর হয়েছিল। আমরা আন্তর্জাতিকভাবে এর স্বীকৃতি চাই। এজন্যই আমাদের এই আয়োজন, আশাকরি প্রতি বছরই এই আয়োজন সমুন্নত রাখব।

মোমবাতি প্রজ্বলনের পর প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “২৫শে মার্চ রাতে পুরান ঢাকাসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চালানো হয়। বাঙালির উপর অন্যায় অত্যাচার করা হয়। গণহত্যায় শহীদদের প্রতি আমরা বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই৷ সেদিনের দিনটি কখনো ভোলার নয়৷ এই দিনটি যুগ যুগ ধরে ইতিহাসের পাতায় থাকবে।”

চারুকলা অনুষদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী বলেন, ‘২৫ মার্চের এ গণহত্যাই এ দেশকে স্বাধীন করার জন্য মানুষের ভেতরের স্পৃহাকে জাগিয়ে তুলেছিল। আর বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছিল দেশকে স্বাধীন করতে হলে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। আর এ ভয়েই পাক হানাদার বাহিনীরা ২৫ মার্চ নিরীহ বাঙালিদের নির্মমভাবে হত্যা করে।’

তিনি বলেন, ‘৭১ এর ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানিরা এদেশের সাধারণ মানুষদের উপর গণহত্যা চালিয়েছে। সেদিনের এই গণহত্যার পরেই সাধারণ মানুষরা আরও স্পষ্টভাবে বুঝতে পেরেছে যুদ্ধ ছাড়া এদেশের মানুষের মুক্তি নেই। এই দিনটিকে আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আয়োজনে কালরাত্রি ও গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে চারুকলা অনুষদের ডিন ও ড্রয়িং এন্ড পেইন্টিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহা. আলপ্তগীন, ছাপচিত্র বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. বজলুর রশীদ খান, ভাস্কর্য বিভাগের চেয়ারম্যান ইমাম হোসেন, বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যানবৃন্দ, সহকারী প্রক্টরবৃন্দ সহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এসময় অতিথিবৃন্দ গভীর শ্রদ্ধা ভরে শহীদদের স্মরণ করেন।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security