শুক্রবার, জুলাই ২৬, ২০২৪

সম্পদের ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে পরিবারে দ্বন্দ্ব,২ দিন পরে ছিল মৃত্যু ব্যক্তির লাশ

যা যা মিস করেছেন

মনিরুজ্জামান খান গাইবান্ধাঃ গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের সাকোয়া মাঝিপাড়া গ্রামে সম্পদের ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বাড়ির উঠানে দুই দিন ধরে পড়ে ছিল গণপূর্তের সাবেক হেড ক্লার্ক নিঃসন্তান মোতাহার আলী মুন্সির (৭০) মৃত্যু ব্যক্তির লাশ। মোতাহার আলী মুন্সি ওই গ্রামের মৃত ছামসুল হক মুন্সির ছেলে। এমনই ঘটনা গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায়।

দফায় দফায় বৈঠক শেষে ৬০ লাখ টাকার চেক হাতে পেয়ে লাশ দাফন করতে দেন তাঁর ভাই-ভাতিজারা। (২২ফেব্রুয়ারি) বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে জানাজা শেষে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।

স্থানীয় জন প্রতিনিধি, মৃতের স্বজন ও গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মোতাহার আলী মুন্সি ও তাঁর স্ত্রী মাসুমা বেগম নিঃসন্তান ছিলেন। তবে তাঁদের একজন এক পালিত মেয়ে রয়েছে। গণপূর্ত বিভাগে চাকরির সুবাদে ঢাকার কলাবাগান এলাকায় বসবাস করতেন মোতাহার আলী। সেখানে দীর্ঘদিন আগে তিনি ৫৯ শতক জমি কেনেন। সম্প্রতি সেই জমি ২ কোটি ১৮ লাখ টাকায় বিক্রি করেন।

এদিকে মোতাহার আলী দীর্ঘদিন ধরে অ্যাজমাসহ ক্যানসারে ভুগছিলেন। গত বুধবার ভোরে রাজধানীর বেসরকারি একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। ওই দিনই তাঁর স্ত্রী মাসুমা বেগম, পালিত মেয়ে মার্জিয়া (১৫) ও স্ত্রীর বড় ভাই নূরুল ইসলাম কাজী দাফনের জন্য লাশ নিয়ে সন্ধ্যায় গ্রামের বাড়ি পৌঁছান। এরপর মৃতের ভাই-বোন-ভাতিজারা সম্পদের ভাগ-বাঁটোয়ারা ছাড়া লাশ দাফনে বাধা দেন।

দুই দিন ধরে দফায় দফায় দেনদরবার শেষে মোতাহার আলীর স্ত্রী মাসুমা বেগম জনতা ব্যাংক গাইবান্ধা শাখার অনুকূলে ৬০ লাখ টাকার চেকসহ মুচলেকা দেওয়ার পর লাশ দাফন করতে দেওয়া হয়।

মৃতের আপন ছোট ভাই নজরুল ইসলাম মুন্সি বলেন, তারা লাশ নিয়ে এলেও সঙ্গে চেক নিয়ে আসেনি। পরে ঢাকা থেকে চেক নিয়ে আসার কারণে লাশ দাফনে দেরি হয়েছে।

মোতাহার আলীর জ্যাঠাতো ভাই সেকেন্দার আলী মুন্সি, ভাতিজা মানিক দাবি করেন, মোতাহার আলী মুন্সির এলাকায় কিছু ঋণ ছিল। এ ছাড়া তিনি জীবিত থাকতে এলাকায় মসজিদ-মাদ্রাসায় টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি করেছিলেন। সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে লাশ দাফনে কিছুটা দেরি হয়েছে।

মৃতের স্ত্রী মাসুমা বেগম বলেন, তাঁর স্বামী মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণের জন্য ১৫-২০ লাখ টাকা দানের অসিয়ত করে গেছেন।

স্থানীয় বেতকাপা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও পলাশবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহফুজ আলম রাত ১০টার দিকে লাশ দাফনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ বিষয়ে বেতকাপা ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নিঃসন্তান মোতাহার আলীর ভাই-ভাতিজার আপত্তির কারণে লাশ বাড়ির উঠানে ছিল। মূলত মোতাহার আলীর দেনাপাওনা এবং সম্পদ বিক্রির প্রায় ২ কোটি টাকা নিয়ে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ায় পরিবারের লোকজন। শেষে ৬০ লাখ টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিলে জানাজা শেষে লাশ দাফন করা হয়।

লাশ দাফনের কিছুক্ষণ পরই পালিত মেয়েকে নিয়ে মোতাহার আলীর স্ত্রী মাসুমা বেগম ঢাকা ফিরে যান।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security